সংসদে বাংলাদেশ বিমান বিল পাস

১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে করা বাংলাদেশ বিমান অর্ডার পুনর্বহাল করতে জাতীয় সংসদে বিল পাস হয়েছে। সোমবার ‘বাংলাদেশ বিমান অর্ডার ১৯৭২ পুনর্বহাল ও সংশোধন’ বিল পাস হয়।

বিলে বলা হয়েছে, এই আইনটি ২০০৭ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর বলে গণ্য হবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, কোনো প্রকার মৌলিক পরিবর্তন না করেই তৎকালীন সামরিক সরকার ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ বিমান করপোরেশন অর্ডিন্যান্স দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে প্রণীত বাংলাদেশ বিমান অর্ডার রহিত করে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে প্রণীত সকল আইন তার রাজনৈতিক দর্শন ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে সম্পৃক্ত বিধায় ওই আদেশটি পুনর্বহালসহ সংশোধন করে এই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, আইনটি অনুমোদিত হলে সরকারি কোম্পানি হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের পরিচালনাসহ পরিচালনা পর্ষদ অবলুপ্তকরণ, নতুন পরিচালক নিয়োগ করা, ব্যবস্থাপনা এজেপি চুক্তি অবসায়ন এবং সংঘস্মারক বা সংঘবিধি অথবা কোনো সনদ, চুক্তি বা দলিল পরিবর্তন বা সংশোধনের ক্ষেত্রে সরকারের নীতি ও আদর্শের প্রতিফলন নিশ্চিত করা হবে।

বিলটি পাসের জন্য সংসদে তোলেন বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। 

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারি অভিযোগ করে বলেন, বিমানে টিকেট পাওয়া যায় না। কিন্তু বিমান খালি যায়। 

বিমান বন্দরে মিষ্টি খাওয়ার জন্য টাকা চাওয়ার অভিযোগ রয়েছে এমন কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটা বিমানবন্দর জাতির ভাবমূর্তি তৈরি করবে। বাংলাদেশ বিমান দেশের ইমেজ। সারা পৃথিবীতে ৮০ লাখ বাংলাদেশি আছেন। তারা বিমানকে প্রথম পছন্দ হিসেবে দেখতে চায়। 

বিমানের অনিয়ম-অভিযোগ নিয়ে বলে শেষ করা যাবে না উল্লেখ করে গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, মন্ত্রী সজ্জন ব্যক্তি। আমি ভেবেছিলাম তিনি বিমানের ভালো ইমেজ নিয়ে আসবেন। কোনো সরকারের সময় বিমানকে ভালো অবস্থায় দেখিনি।

বাংলাদেশের অনেকেই যুক্তরাজ্যে প্রবাসী উল্লেখ করেন তিনি বলেন, প্রবাসে আমাদের অনেক ছেলে-মেয়ে আছে। তারা দেশে আসতে চায় না। অনিয়ম-বৈষম্যের কারণে দেশে আসতে চায় না। এর মধ্যে রিটার্ন টিকেটসহ ঢাকা-ম্যানচেস্টার বিমান ভাড়া সর্বনিম্ন ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৫২ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২ লাখ ১৪ হাজার ৯৯ টাকা। অন্যদিকে একপথের ভাড়া ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সিলেট-লন্ডনের ভাড়া সর্বনিম্ন ১ লাখ ৩৭ হাজার ২১০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২ লাখ ৮২ হাজার। তাদের ছুটির সময়ে ভাড়ার যে বৈষম্য করা হয়, প্রকৃতপক্ষে তাদের বাংলাদেশকে আসতে অনুৎসাহী করা হয়।

বিমানবন্দরে হয়রানির কারণে প্রবাসীরা (বিশেষ করে যুক্তরাজ্য) বাংলাদেশমুখী হয় না বলে দাবি করেন মোকাব্বির খান। তিনি বলেন, প্রবাসীদের সঙ্গে বাংলাদেশের নাড়ির সম্পর্ক রয়েছে। আমরা কি সেই সম্পর্ক কেটে দিতে চাই?

বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, এক সময় ছিল বিমানের টিকিট পাওয়া যেত না। এখন সে অবস্থা নেই। এখন অনলাইনে টিকিট বিক্রি করা হয়। বিমান এখন লাভে চলছে।