ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সেমিনারে বক্তারা

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের কপিরাইট করতে হবে

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের কপিরাইট করতে হবে

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটে এক সেমিনারে বক্তারা। ছবি-সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৪ | ১৯:০৯ | আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৪ | ১৬:৫৬

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের পূর্ণাঙ্গ ভাষণ সংরক্ষণের পাশাপাশি এর কপিরাইট করার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। তারা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নানাভাবে খণ্ডিত হয়েছে, অনেক জায়গায় ভাষা বিকৃত হয়েছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যাতে বঙ্গবন্ধুর পুরো ভাষণটি শুনতে পারে সেজন্য সংরক্ষণের পাশাপাশি ভাষণের কপিরাইট করতে হবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটে ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যম’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারে প্রধান আলোচক ছিলেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের (এনআইএমসি) অতিরিক্ত মহাপরিচালক সুফী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচ্য বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লে. কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক। এনআইএমসি‘র পরিচালক (প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠান) ড. মো. মারুফ নাওয়াজের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন অপর পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, উপ–পরিচালক তানিয়া খান, সুমনা পারভীন। সেমিনার সমন্বয় করেন সহকারী পরিচালক তানজীম তামান্না।

সেমিনারে বৃহস্পতিবার সমকালে প্রকাশিত ‘আজও কপিরাইট হলো না বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রসঙ্গে জাফর ওয়াজেদ বলেন, ‘সরকার এখনও ৭ মার্চের ভাষণের কপিরাইট পাওয়ার কাজই শুরু করেনি। ৫৩ বছর হয়ে গেলেও পুরো ভাষণটি রক্ষা করেনি। জামদানি শাড়ির জিআই ভারত নিয়ে নেওয়ার পর আলোচনা হচ্ছে, আগে কিন্তু হয়নি। জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেটি কিন্তু সাধুভাষায়। কিন্তু পত্রিকায় ছাপা হয়েছিলো চলতি ভাষায়। সাধু ও চলতি ভাষা কিন্তু এক না। এর ফলে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ভাষণের প্রকৃত মাধুর্য পাওয়া যাচ্ছেনা।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভাষণসহ নানা ক্ষেত্রে আমরা এখনও কপিরাইটের দিকে যাইনি। সেগুলো অন্যরা দাবি করে বসলে আমাদের টনক নড়বে।’

জাফর ওয়াজেদ বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর যে ভাষণটি পেয়েছি সেটি কাট কাট করে পেয়েছি। কারণ তখন ওই ভাষণের পুরোটি একসঙ্গে রেকর্ড করা যায়নি। তাই কাট কাট থাকার কারণে কোথাও কোথাও কিছু শব্দ বাদ পড়েছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ থেকে কোনো শব্দ বাদ দেওয়া বা জুড়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।

লেখক ও গবেষক লে. কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক বলেন, ‘একাত্তর হচ্ছে আত্মত্যাগ, সেক্রিফাইস। আমরা আত্মত্যাগ করেছিলাম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যে। এখানকার সময়ের প্রত্যেককে তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সেক্রিফাইস করতে হবে। দেশকে গড়তে সৎ ও নিষ্ঠাবান হতে হবে। প্রকৃত দেশপ্রেমের মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালি জাতির চিরলালিত স্বপ্ন স্বাধীনতা ও মুক্তির সাহসী উচ্চারণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু যে কালজয়ী ভাষণ দিয়েছিলেন সেই ভাষণটি হয়ে উঠেছিল একটি জাতির পরিত্রাণের মহামন্ত্র। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যাতে পুরো ভাষণটি শুনতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।’

জাতীয় গণমাধ্যম  ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সুফী জাকির হোসেন বলেন, ইতিহাসের সেরা রাজনৈতিক ভাষণের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি সর্বশ্রেষ্ঠ। পৃথিবীর অন্যসব সাড়া জাগানো ভাষণ ছিল লিখিত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি ছিল সম্পূর্ণ অলিখিত। এই ভাষণের রূপরেখা ধরেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। 

আরও পড়ুন

×