ভর্তি বহাল চান ভিকারুননিসার সেই ১৬৯ শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা

ছবি- সংগৃহীত
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৪ | ১৪:৫৭
সম্প্রতি রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিধিবহির্ভূতভাবে ভর্তির কারণে প্রথম শ্রেণির ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এসব শিক্ষার্থীরা চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রতিষ্ঠানটির চারটি শাখায় ভর্তি হয়েছিল। তবে হাইকোর্টের নির্দেশে বাতিল করা ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তি বহাল রাখার দাবিতে মানববন্ধন করছেন এসব শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা।
রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় ভিকারুননিসার মূল শাখার সামনে এ মানববন্ধন শুরু হয়। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের হাতে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড ছিল। এতে ‘আমাদের ভবিষ্যৎ কী’, ‘আমি কি আর আমার স্কুলে যেতে পারবো না’, ‘মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপ চাই’, ‘বিনা দোষে আমার স্কুল গেট আমার জন্য বন্ধ কেন’, ‘আমরা এখানেই পড়বো’, ‘মাউশির ভুলের মাশুল আমরা ভোগ করব কেন’, ‘আমরা তো ছোট শিশু নির্দোষ, আমরা কেন স্কুলে ছেড়ে রাস্তায়’ ইত্যাদি লেখা ছিল।
মানববন্ধনে অভিভাবকরা বলেন, আমরা ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সব নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে ভর্তির আবেদন করি। কর্তৃপক্ষ তা যাচাই-বাছাই করে ভর্তি বিষয়ে অনুমতি প্রদান করে। ভর্তি হয়ে বাচ্চারা ৬ মার্চ পর্যন্ত ক্লাসও করেছে। কিন্তু হঠাৎ করে আদালতের রায় আসে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে জন্ম নেওয়া ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তি বাতিল করতে হবে।
অভিভাবকরা আরও বলেন, এ ব্যাপারে আমরা আগে থেকে কিছুই জানতাম না। প্রতিষ্ঠান থেকেও কিছু অবহিত না করে হঠাৎ করেই ভর্তি বাতিল করে আমাদের জানানো হয়। এখন আমরা বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় যাব? তাই আমরা চাই, বাতিল না করে ভর্তি যেন বহাল রাখা হয়।
মানববন্ধনে মোক্তাদির আহমেদ নামে এক অভিভাবক বলেন, মাউশির ভর্তির সার্কুলার দেখে আমরা আবেদন করি। ৪০ শতাংশ এলাকা কোটাসহ সব নিয়মকানুন মেনে আমার বাচ্চা লটারিতে ভর্তি হয়েছে। সকল প্রক্রিয়া মেনে ভর্তি করার পরও কেন আমার বাচ্চার ভর্তি বাতিল হবে? এর দায় মাউশি ও ভিকারুননিসার। কোমলমতি বাচ্চারা এর জন্য কেন ক্ষতিগ্রস্ত হবে?
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। তাদের ভর্তি বাতিল করে মাউশিকে জানাতে বলা হয়। ভর্তি বাতিল শিক্ষার্থীরা বেইলি রোডের মূল শাখা, আজিমপুর, ধানমন্ডি ও বসুন্ধরা শাখায় অধ্যয়নরত ছিল। তারা সবাই ২০২৪ সালে ভর্তি হয়েছিল।
মাউশির চিঠিতে বলা হয়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃক ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা (নিজেদের নির্ধারিত) অনুসরণ না করে ১ জানুয়ারি ২০১৭ সালের পূর্বে জন্মগ্রহণকারী (প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রেরিত সংযুক্ত তালিকায় বর্ণিত) শিক্ষার্থীদের ভর্তি করাটা ছিল বিধিবহির্ভূত। এ অবস্থায়, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে বিধিবহির্ভূতভাবে ভর্তি হওয়া ২০১৫ সালে জন্মগ্রহণকারী ১০ জন এবং ২০১৬ সালে জন্মগ্রহণকারী ১৫৯ জনসহ মোট ১৬৯ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে জরুরি ভিত্তিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
প্রসঙ্গত, ভিকারুননিসার বিভিন্ন শাখায় ওই ১৬৯ শিক্ষার্থীকে ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ তুলে দু'জন শিক্ষার্থীর অভিভাবক স্কুল কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেন। সাড়া না পেয়ে ওই দুই অভিভাবক হাইকোর্টে রিট করেন। গত ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট ১০ দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয় মাউশি।