ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

অভিযানে এক বাহিনীকে তথ্য দেয় না অন্য বাহিনী

মাদকবিরোধী যৌথ অভিযান নিয়ে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অভিযোগ

অভিযানে এক বাহিনীকে তথ্য দেয় না অন্য বাহিনী

ছবি: ফাইল

 সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪ | ০৩:৩৯

মাদকবিরোধী যৌথ টাস্কফোর্সের অভিযানে সোর্সের তথ্য এক বাহিনী অন্য বাহিনীকে সরবরাহ করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। নিজ বাহিনীর পক্ষে কৃতিত্ব নিতেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ অভিযোগ তোলেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে। কমিটির আগের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। গতকালের বৈঠকে ওই কার্যবিবরণী অনুমোদন দেওয়া হয়।

এদিকে বৈঠকে সাম্প্রতিক আলোচিত সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা এবং পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। বৈঠকে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে গরু চুরি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈঠকের আলোচ্যসূচি ছিল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সার্বিক কার্যক্রমের ওপর প্রতিবেদন উপস্থাপন, আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সার্বিক কার্যক্রমের ওপর আলোচনা।

সংসদ সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে বিজিবি এবং ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সার্বিক কার্যক্রমের ওপর প্রতিবেদন উপস্থাপন ও বিস্তারিত আলোচনা হয়। কমিটি জনগণের সুবিধার্থে ঢাকায় পাসপোর্ট অফিসের সংখ্যা বাড়ানো এবং কোনো রোহিঙ্গা যেন পাসপোর্ট না পায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার সুপারিশ করে।

বৈঠকের কার্যবিবরণী সূত্রে জানা গেছে, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদ্য বিদায়ী মহাপরিচালক মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী মাদক নিয়ন্ত্রণ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে সিভিল পোশাকে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে অনেক সময় সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর যৌথ টাস্কফোর্সের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে থাকে। কৃতিত্ব নেওয়ার জন্য সোর্সের তথ্য এক পক্ষ অন্য পক্ষকে সরবরাহ করা থেকে বিরত থাকে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মাদক নিয়ন্ত্রণের স্থানীয় কর্মকর্তা, পুলিশ ও বিজিবির সমন্বয়ে গঠিত যৌথ টাস্কফোর্স বিভিন্ন সময়ে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে থাকে।

বৈঠকে কমিটির সদস্য সানোয়ার হোসেন বলেন, লাইসেন্স ছাড়া মদ বিক্রির নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তাঁর এলাকায় শত শত লোকের কাছে মদ বিক্রি হয়। এ কার্যক্রম বন্ধে বড় বড় চিহ্নিত গোষ্ঠী/সিন্ডিকেটকে ধ্বংস করতে হবে। বর্তমানে মাদক পরিবহনের অন্যতম মাধ্যম কুরিয়ার সার্ভিস। এটিকে স্ক্যানিংয়ের আওতায় আনতে হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, মাদক আইনে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান থাকলেও অপরাধী ধরা পড়ার পর সাক্ষীর অভাবে সঠিক বিচার করা যাচ্ছে না। ফলে ছাড়া পাওয়ার কিছুদিনের মধ্যে নতুন উদ্যমে ফের মাদক অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে।

বৈঠকে র‍্যাব  মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে কিশোর গ্যাং সমাজের জন্য আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোথায় কোন কিশোর গ্যাং আছে, তাদের কারা আশ্রয় দিচ্ছে– সেই তালিকা করা হয়েছে। শিগগিরই অভিযান চালানো হবে।

কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে সদস্য সামছুল হক, ময়েজ উদ্দিন, চয়ন ইসলাম, মো. সাদ্দাম হোসেন ও হাছিনা বারী চৌধুরী বৈঠকে অংশ নেন।

আরও পড়ুন

×