ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

রোহিঙ্গাদের শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়ার দাবি

রোহিঙ্গাদের শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়ার দাবি

বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন দেশি–বিদেশি প্রতিনিধিরা। ছবি: সংগৃহীত

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৪ | ১৮:১২

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, জেনেভা কনভেনশনে স্বাক্ষর না করেও ভারত ১৯৭১ সালে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশিদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। বাংলাদেশও এখন রোহিঙ্গাদের এ স্বীকৃতি দিতে পারে। আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলে অনেক সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আন্তর্জাতিক অনলাইন সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। কোস্ট ফাউন্ডেশন ও কক্সবাজার সিএসও-এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ) বৃহস্পতিবার এ সেমিনার আয়োজন করে।

নারীপক্ষের শিরীন হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন- এশিয়া প্যাসিফিক রিফিউজি রাইটস নেটওয়ার্কের (এপিআরআরএন) ক্লাউস ডিক নিয়েলসেন ও হাফসার তমিজউদ্দিন, ইনহারিড ইন্টারন্যাশনালের গোপাল শিয়াকোটি, ফরটিফাই রাইটসের জন কুইনলি, ডিজাস্টার ফোরামের গওহার নঈম ওয়ারা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর, ইপসার আরিফুর রহমান, কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী, সিসিএনএফের জাহাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ ম্যাক্স। 

সেমিনারে প্রধান বক্তা ছিলেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের বরকত উল্লাহ মারুফ। কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় সেমিনারে কক্সবাজারে মানবিক সহায়তা কাজে যুক্ত প্রায় পাঁচ শতাধিক কর্মী ও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিনিধিরা যুক্ত ছিলেন।

বরকত উল্লাহ মারুফ বলেন, রোহিঙ্গা শিশুদের এখন শিক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সার্টিফিকেট নেই বলে সে শিক্ষার প্রতি তাদের আগ্রহ কম। রোহিঙ্গাদের ট্রাভেল ডকুমেন্ট দেওয়া হলে তারা ঝুঁকিপূর্ণ পথে সাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে অন্যদেশে যেত না। বৈধ পথে গিয়ে তাদের পরিবারকেও সেখানে নিয়ে যেতে পারত।

ক্লাউস ডিক নিয়েলসেন আন্তর্জাতিক এজেন্সিগুলোকে কক্সবাজারের স্থানীয় এনজিওগুলোকে রোহিঙ্গা রেসপন্সে সার্বিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসার আহবান জানান। 

রোহিঙ্গা হিসেবে জন্মলাভ করে বর্তমানে নিউজিল্যান্ডে অবস্থানরত হাফসার তমিজউদ্দিন বলেন, মিয়ানমারের মংডু ও বুথিডংয়ে এখনও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। এটা আন্তর্জাতিক মহল জানে না। 

জন কুইনলি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে নিরাপত্তা ঝুঁকি থেকে বাঁচতে কোনো পরিবার যদি অন্যত্র যেতে চায়, তাহলে সে অধিকার তাদের প্রাপ্য।

গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দিলে বাংলাদেশের লাভ আছে। প্রবাসী শরণার্থীরা হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠায়। স্বীকৃতি থাকলে তারা ব্যাংকের মাধ্যমে বৈধপথে টাকা পাঠাতে পারত। বাংলাদেশের ফরেন রিজার্ভ বাড়ত।

আসিফ মুনীর বলেন, রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে একটা নেতিবাচক মনোভাব আছে, যেন রোহিঙ্গা মানেই অপরাধী। 

গোপাল শিয়াকোটি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নিজেরই অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তার ওপর এতে বড় জনসংখ্যাকে আশ্রয় দেওয়া অনেক বড় মহানুভবতা। 

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্রত্যাবাসন ছাড়া রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে অন্য উপায় নেই। 

সভাপতির বক্তব্যে শিরীন হক বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নির্যাতন নিপীড়নের ঘটনা ঘটছে। এগুলো কঠোরভাবে মনিটরিং করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
 

আরও পড়ুন

×