ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ভোলায় ৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদের তথ্য সঠিক নয়: জ্বালানি বিভাগ

ভোলায় ৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদের তথ্য সঠিক নয়: জ্বালানি বিভাগ

ভোলার একটি গ্যাসক্ষেত্র। ছবি: সংগৃহীত

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৬:২১ | আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২১:২০

গ্যাজপ্রমের গবেষণার বরাতে ভোলায় গ্যাসের মজুদ বেড়েছে বলে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। বৃহস্পতিবার ভোলার গ্যাস মজুদ নিয়ে এক পর্যালোচনা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে জ্বালানি বিভাগের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, ভোলায় ৫ দশমিক ১০৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) গ্যাসের মজুদ নিয়ে গণমাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা সঠিক নয়। বর্তমানে সেখানে ২ টিসিএফ গ্যাসের প্রমাণিত মজুদ রয়েছে।

চলতি মাসের মাঝামাঝি বাপেক্স ও গ্যাজপ্রমের এক যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনের বরাতে গণমাধ্যমে বলা হয়, দ্বীপ জেলা ভোলায় ৫ দশমিক ১০৯ টিসিএফ উত্তোলনযোগ্য গ্যাস মজুদের সন্ধান পাওয়া গেছে। ওই প্রতিবেদনে তখন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ইতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন। এরপর বৃহস্পতিবারই বিষয়টি নিয়ে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শোয়েব, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরুল ইমাম, ম. তামিমসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে পর্যালোচনায় বসেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

বৈঠক শেষে ফাওজুল কবির খান বলেন, ভোলায় ৫ দশমিক ১০৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদের তথ্যটা যদি সঠিক হতো, তাহলে আজ আমরা উৎসব করতাম। কারণ কোনো সংকট থাকতো না। আমদানির প্রয়োজন হতো না।

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শোয়েব জানান, ভোলার চরফ্যাশনে কোনো সাইসমিক জরিপের ডাটা নেই। শাহবাজপুর, ভোলা এবং ইলিশা গ্যাসক্ষেত্রে ২ দশমিক ০৪৭ টিসিএফ (উত্তোলনযোগ্য ১.৪৩২ টিসিএফ) প্রমাণিত গ্যাস রিজার্ভ রয়েছে। ভোলায় এ পর্যন্ত ৯টি কূপ খনন করা হয়েছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন, গ্যাসের মজুত নির্ণয়ের জন্য প্রথমে সাইসমিক সার্ভে করা হয়। তারপর সার্ভের তথ্য উপাত্ত দেখে কোম্পানিগুলো ঠিক করে সবচেয়ে বেশি কোথায় সম্ভাবনা রয়েছে গ্যাসের। সেখানে তারা কূপ খনন করে। খননের পর যদি গ্যাস পাওয়া যায়, তখন তারা এটাকে প্রমাণিত মজুত হিসেবে ঘোষণা দেয়। তিনি বলেন, প্রমাণিত কিংবা সম্ভাব্য না হলে আমরা কোনো গ্যাসের মজুদ হিসাবে আনি না। মজুদের যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে সেটা বিভ্রান্তিকর।

বদরুল ইমাম বলেন, ভোলাতে যে ৫ টিসিএফ গ্যাসের কথা বলা হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ ভুল। খনন না করা পর্যন্ত মজুদ বলা যাবে না।

পরে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, যেই জায়গাটির কথা বলা হচ্ছে; সেখানে আমরা সাইসমিক সার্ভে ও খনন শুরু করবো। বুধবার একনেকে চারটি কূপ খননের জন্য প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির অনিয়ম চিহ্নিত করতে কমিটি করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর সে অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশি কোম্পানির চেয়ে রাশিয়ার গ্যাজপ্রমের কূপ খননের ব্যয় বেশি বলে যে অভিযোগ রয়েছে তা নিয়েও তদন্ত করবে সরকার। টেন্ডার ছাড়া বিশেষ বিধানে কাজ দেওয়ায় অনিয়মের সম্ভাবনা রয়েছে। তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করা হবে। 

আরও পড়ুন

×