সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী
সংসদের ক্ষমতা বাতিল, বহাল সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল

প্রতীকী ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪ | ০৯:৫৯ | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪ | ১০:৫৯
উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণে সংসদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারপতি অপসারণ-সংক্রান্ত সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীতে বর্ণিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ব্যবস্থা সংবলিত ৯৬ অনুচ্ছেদের (২), (৩), (৪), (৫), (৬), (৭) এবং (৮) পুনর্বহালের জন্য বলা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ গতকাল রোববার এই রায় দেন। ফলে এখন থেকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমেই উচ্চ আদালতের বিচারপতি অপসারণ প্রক্রিয়া কার্যকর করতে হবে। সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতি ও পরবর্তী জ্যেষ্ঠ দু’জন বিচারপতিকে নিয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠিত হবে।
দুর্নীতি-অনিয়ম, দলীয় প্রীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে বর্তমানে উচ্চ আদালতের ১৫ বিচারপতিকে বিচারকাজের দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে তিনজন বিচারপতি পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিচারিক দায়িত্বের বাইরে রয়েছেন। অন্য ১২ বিচারপতিকে চলতি সপ্তাহ থেকে বিচারকাজের বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত দেন প্রধান বিচারপতি। রাষ্ট্রপক্ষসহ সরকার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিচারকাজের বাইরে থাকা এই ১৫ বিচারপতির বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগগুলো নিষ্পত্তির জন্য শিগগিরই সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হবে।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তির মাধ্যমে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। আগে এটা নিয়ে কিছুটা ‘কনফিউশন’ ছিল। রায়ের মাধ্যমে তা দূর হয়েছে। অর্থাৎ, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এখন সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করা যাবে।
আদালতে গতকাল রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং রিট আবেদনকারীদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এ ছাড়া আদালতে অনুমতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মো. রুহুল কুদ্দুস কাজলও শুনানিতে অংশ নেন।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহ্দীন মালিক বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশেই বিচারপতিদের নিয়োগ ও অপসারণের বিষয়ে সংসদের ভূমিকা আছে। তবে সেই সব দেশে সংসদ সদস্যদের হাত, পা, মুখ বেঁধে দেওয়ার মতো আমাদের সংবিধানে বিদ্যমান ৭০ অনুচ্ছেদ নেই। ফলে আমাদের সংসদ সদস্যরা সংসদে বিচারপতিদের অপসারণের বিষয়ে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারেন না।’ তাঁর মতে, ৭০ অনুচ্ছেদের প্রেক্ষাপটে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পাশাপাশি রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেই ক্ষমতা বাতিলের সিদ্ধান্ত হওয়াটা জরুরি ছিল। এর ফলে বিচার বিভাগের স্বাধীনভাবে কাজ করার পথ আরও উন্মুক্ত হয়েছে।
রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, এখন থেকে কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ এলে সেই অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ দু’জন বিচারপতিকে নিয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠিত হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ওই বিচারপতিকে অপসারণ বা ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।’ তিনি আরও বলেন, এই রায়ের ফলে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের একটা জায়গায় পৌঁছেছে। বিচার বিভাগ দুর্বৃত্তায়ন ও রাজনীতি থেকেও বেরিয়ে এলো।
বিগত সরকারের আমলে রিভিউ আবেদনে উল্লেখিত যুক্তি (গ্রাউন্ড) উপস্থাপন না করা প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘রিভিউ আবেদনে ৯৪টি গ্রাউন্ড ছিল। আমরা এই ৯৪টি গ্রাউন্ড এক্সামিন করেছি, পূর্ণাঙ্গভাবে পড়েছি। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, ৯৪টি গ্রাউন্ডের মধ্যে একটি গ্রাউন্ডও মামলা রিভিউ হওয়ার মতো না। আমরা আদালতকে বলেছি, এ গ্রাউন্ডগুলো আমরা উপস্থাপন করব না।’
সম্প্রতি হাইকোর্টের যে ১২ জন বিচারপতিকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে, তাদের ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে– এমন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আগেও নেওয়া যেত। কারণ, আপিল খারিজের পর রিভিউ হলেও স্থগিতাদেশ ছিল না। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে ক্ষমতা তখনও ছিল।’
আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের ২ থেকে ৮ পর্যন্ত বিধান ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিল করা হয়েছিল। এগুলো পুনর্বহাল করেছেন আপিল বিভাগ।
রিটকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, এই রায় ঐতিহাসিক। আমরা মনে করি, সংসদের হাতে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা থাকলে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারতেন না। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলই এর জন্য যথোপযুক্ত। তাঁর মতে, বিদ্যমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংসদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী অধিকাংশ রাজনীতিবিদের মামলা উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ফলে তাদের হাতে বিচারপতি অপসারণ ব্যবস্থা থাকলে এর অপব্যবহার হতে পারে।
দীর্ঘপথ পাড়ি
বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিল আনে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে পাস হয়। পরে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ৯ জন আইনজীবী। ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
রায়ে বলা হয়, ‘সংসদের মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণ প্রক্রিয়া ইতিহাসের একটি দুর্ঘটনা মাত্র’। সংবিধানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার যে বিধান রয়েছে, ষোড়শ সংশোধনী তার পরিপন্থি। আদালত তাঁর পর্যবেক্ষণে আরও বলেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের কিছু কিছু দেশে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে। তবে সেসব দেশের সাংসদদের কার্যপদ্ধতি আর বাংলাদেশের সাংসদদের কার্যপদ্ধতি একরকম নয়। ওই সব দেশের সাংসদরা দলের যে কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুক্ত ও স্বাধীনভাবে মত ব্যক্ত করতে পারেন। বাংলাদেশে সাংসদরা সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সংসদে ভোট দিতে পারেন না। কমনওয়েলথভুক্ত ৬৩ শতাংশ দেশেই বিচারপতিদের অপসারণের জন্য ট্রাইব্যুনাল, জুডিশিয়াল কাউন্সিলসহ অন্যান্য পদ্ধতি রয়েছে। বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে থাকলে বিচারকদের সাংসদদের করুণাপ্রার্থী হয়ে থাকতে হবে।
২০১৬ সালের ১১ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ ওই রায় প্রকাশিত হয়। এর পর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই ওই আপিল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। পরে ওই রায় রিভিউ চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
রিভিউ আবেদনে বিগত সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ৯৪টি যুক্তি তুলে ধরেছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান গতকাল ওই যুক্তিগুলো উপস্থাপন করবেন না বলে আদালতকে জানান। অবশ্য তিনি শুনানিতে নতুন একটি যুক্তি হিসেবে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের ৮ পুনর্বহালের জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করেন। এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কোনো বিচারক রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করিয়া স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন।’ ২০১৭ সালে আপিল বিভাগের রায়ে ৯৬ অনুচ্ছেদের ২ থেকে ৭ অনুচ্ছেদ বহাল করা হলেও ৯৬ (৮) অনুচ্ছেদ বাতিল করা হয়েছিল। গতকাল ৯৬ অনুচ্ছেদ পুরোটাই পুনর্বহাল করা হয়।
যে কারণে আলোচিত
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ের মূল অংশ লেখেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা। এতে তিনি গণতন্ত্র, রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, সুশাসন, দুর্নীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দেন। এ নিয়ে তখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেয়। তাঁর পদত্যাগের দাবি তোলেন সরকারের মন্ত্রীসহ দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থক আইনজীবীরা। এক পর্যায়ে বিচারপতি সিনহা ছুটি নিয়ে বিদেশে চলে যান। তাঁকে অসুস্থতার কথা বলে ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়েছে বলেও তখন আলোচনা ছিল। যদিও ২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর বিদেশে যাওয়ার প্রাক্কালে তিনি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তিনি অসুস্থ নন, ক্ষমতাসীনদের সমালোচনায় তিনি বিব্রত। পরে অবশ্য বিদেশে থাকা অবস্থায়ই তিনি পদত্যাগ করেন। আর দেশে ফেরেননি। তবে বিদেশে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে তাঁকে জোর করে বিদেশে পাঠানো হয়েছিল বলে জানান।
এক নজরে বিচারক অপসারণ পদ্ধতি
বাহাত্তরের মূল সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের ওপর ন্যস্ত ছিল। পঁচাত্তরের ২৪ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে ওই ক্ষমতা রাস্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত হয়। পরে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে ন্যস্ত করা হয়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে উচ্চ আদালতের বিচারক অপসারণের ক্ষমতা ফের সংসদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়।
ষোড়শ সংশোধনীর ৯৬(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রমাণিত অসদাচরণ বা অসামর্থ্যের কারণে সংসদের মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ ছাড়া কোনো বিচারককে অপসারিত করা যাবে না।’
আইন উপদেষ্টার ব্রিফিং
সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের হাইকোর্টে কিছু বিচারক আছেন, তাদের ব্যাপারে সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। তারা গত জুলাই গণবিপ্লবে পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তির নিপীড়ক যন্ত্রে পরিণত হয়েছিলেন। তা ছাড়া কারও কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। এ জন্য তাদের নিয়ে ছাত্র-জনতার অনেক ক্ষোভ রয়েছে। এসব ক্ষোভ সাংবিধানিকভাবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার একটি পথ খুলে গেছে।
তিনি আরও বলেন, উচ্চ আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীন। উচ্চ আদালত তাদের মতো করে ব্যবস্থা নেবেন। তবে আমরা মনে করি, এখন অন্তত ছাত্র-জনতা তাদের অভিযোগ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করার জন্য একটা উপযুক্ত ফোরাম পেল। আমরা এটার একটা ইতিবাচক অগ্রগতি দেখতে চাই।
আইন উপদেষ্টা বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের বিষয়ে সংবিধানেই বলা আছে। প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম দু’জন বিচারক মিলে এই কাউন্সিল গঠিত হয়। কেউ যদি আজই সেখানে কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন, তাহলে সেটির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল যখন বাতিল ছিল, তখন উচ্চ আদালতের বিচারকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার ফোরাম ছিল না। আবার জবাবদিহি নিশ্চিত করার ইচ্ছাও তৎকালীন উচ্চ আদালতের প্রশাসনের ছিল না। কারণ তখন তাদের ফরমায়েশি রায় হয়েছিল। আপনারা জানেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কী রকম রায় হয়েছে! তারেক রহমানকে বাংলাদেশে কথাই বলতে দেওয়া হয়নি! বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করার মতো এমন রায়ও হয়েছে। এ ছাড়া বহু মানুষ তাদের মানবাধিকার রক্ষা করার সুযোগ পাননি। বিভিন্নভাবে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। বর্তমানে যারা কর্তৃপক্ষ রয়েছে, আদালতের জবাবদিহি নিশ্চিত করার সদিচ্ছা তাদের আছে বলে আমি বিশ্বাস করি। এবার সেটা বাস্তবায়ন করার ফোরামও পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। এটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছি।
- বিষয় :
- হাইকোর্ট
- ষোড়শ সংশোধনী
- সংবিধান সংশোধনী