ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

রোহিঙ্গা ইস্যুতে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আয়োজন করতে চায় জাতিসংঘ

রোহিঙ্গা ইস্যুতে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আয়োজন করতে চায় জাতিসংঘ

রোহিঙ্গা ইস্যুতে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসংঘ। ছবি-বাসস

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ১৮:৪৬

রোহিঙ্গা ইস্যুতে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির সাধারণ পরিষদে (ইউএনজিএ) রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার রূপরেখা অনুযায়ী পরিকল্পনা প্রস্তাব প্রণয়নে ২০২৫ সালে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এতে সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায় সংস্থাটি।

গত সেপ্টেম্বরে ৭৯তম ইউএনজিএর সপ্তাহব্যাপী উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খবর বাসসের।

বুধবার (স্থানীয় সময়) ইউএনজিএর তৃতীয় কমিটিতে প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহম্মদ আবদুল মুহিত বক্তৃতা প্রদানকালে বলেন, আমাদের জন্য এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার স্বার্থে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের পরিস্থিতি তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এক বার্তায় বলা হয়, ওআইসি ও ইইউয়ের যৌথভাবে পেশ করা ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রস্তাবটি ইউএনজিএর তৃতীয় কমিটিতে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। এটিকে ১০৬টি দেশ সমর্থন দিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক সমর্থনের একটি উল্লেখযোগ্য স্তরে পৌঁছেছে।

প্রস্তাবটির মাধ্যমে সদস্য রাষ্ট্রগুলো ২০২৫ সালে যতটা দ্রুত সম্ভব মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনদের একটি উচ্চ-স্তরের সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেয়।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনসহ সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য একটি ব্যাপক, উদ্ভাবনী, সুনির্দিষ্ট ও সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা প্রস্তাব করার জন্য সম্মেলনের লক্ষ্য সামগ্রিক সংকট পর্যালোচনা করা।

এ বছর অন্যান্য বিষয়গুলোর মধ্যে প্রস্তাবটি অন্যান্য দেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা মুসলিমসহ সকল শরণার্থীর প্রত্যাবর্তনের অধিকার নিশ্চিত করার এবং স্বেচ্ছা, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তন ও পুনর্মিলনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি তৈরি করতে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

এতে হত্যা, ধ্বংস ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা, শিশুসহ বেসামরিক নাগরিক বিশেষ করে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জোরপূর্বক সশস্ত্র বাহিনী অথবা সশস্ত্র গ্রুপে নিয়োগসহ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অপব্যবহারের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। 

প্রস্তাবে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য সমস্ত দায়বদ্ধতা প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। প্রস্তাবটি একটি আঞ্চলিক সংস্থা হিসাবে আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দেয় এবং সম্পূর্ণভাবে পাঁচ দফার ঐকমত্যের উদ্যোগগুলোকে তুলে ধরা হয়।
 
রাষ্ট্রদূত মুহিত তার বিবৃতিতে বলেন, ঐক্যমতের মাধ্যমে প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা সংকটের টেকসই সমাধানের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির প্রমাণ।

তিনি বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতি কীভাবে একটি জটিল ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, তা বর্ণনা করেন।

এ সংকটের মূল কারণগুলো মোকাবিলায় গত সাত বছরে কোনও বাস্তব অগ্রগতি হয়নি বলে তিনি হতাশা প্রকাশ করেন। আজ নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে গৃহীত প্রস্তাব দুটির কথা উল্লেখ করে তিনি রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা পরিকল্পনার জন্য পর্যাপ্ত অর্থায়নের ওপরও জোর দেন।

আরও পড়ুন

×