ব্যাটারি রিকশা বৈধ হলে রাজস্ব আসবে ৫০০০ কোটি টাকা: যাত্রী কল্যাণ

ব্যাটারিচালিত রিকশা
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৪ | ২২:৪৩ | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪ | ২২:৪৭
সড়ক মন্ত্রণালয়ে তিন বছর ঝুলে থাকা নীতিমালা দ্রুত প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনটি বলছে, নীতিমালার আওতায় রিকশা, ইজিবাইকসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহন নিবন্ধন ও চালককে নামমাত্র ফি-তে লাইসেন্স দিলে সরকার বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা আয় করতে পারবে।
সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এ হিসাব দেন সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ২০২১ সালে ‘থ্রি-হুইলার ও সমজাতীয় মোটরযানের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা’র খসড়া করা হয়। ভারত থেকে একচেটিয়া সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাহিন্দ্রা, অটোটেম্পো, হিউম্যান হলার আমদানি অব্যাহত রাখতেই তৎকালীন সরকার নীতিমালা করেনি। নীতিমালা হলে ব্যাটারিচালিত যানবাহন বৈধতা পাবে। মূল সড়ক ও মহাসড়কে চলাচল নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে; দুর্ঘটনা ও যানজট কমবে।
মোজাম্মেল হকের অভিযোগ, চাঁদাবাজির জন্যই ব্যাটারিচালিত যানবাহনের লাগাম টানেনি আওয়ামী লীগ সরকার। তিনি বলেন, ৪০ লাখ অটোরিকশা, ইজিবাইক থেকে বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা চাঁদাবাজি হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা, এমপি– এমনকি মন্ত্রীরাও চাঁদাবাজিতে যুক্ত ছিলেন। তাই এ খাতের নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্থানীয় গ্যারেজে সহজে তৈরি, রাস্তায় চলার অবাধ সুযোগ ও কর্মসংস্থানের অভাবে স্বল্প পুঁজিতে লাখ লাখ শ্রমজীবী মানুষ অটোরিকশা কিনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। এতে কৃষি খাতে শ্রমিক সংকটসহ উৎপাদন ঘাটতিতে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। প্রশিক্ষণবিহীন লাখ লাখ চালকের কারণে সড়ক নিরাপত্তায় ভয়ানক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় দুর্ঘটনা ও যানজটের কারণ হিসেবে চিহ্নিত অটোরিকশা প্রধান সড়ক-মহাসড়কে অবাধে চলছে। এতে দুর্ঘটনা ও যানজট বাড়ে। ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট তিন দিনের মধ্যে ঢাকা থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় দেশের অস্থির সময়ে পরিস্থিতির অবনতি হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ৬০ লাখ লোকের জীবিকার কথা বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। জরুরিভিত্তিতে নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান তিনি।
নৈরাজ্য বন্ধে নীতিমালা দ্রুত চূড়ান্ত করা; বুয়েট, চুয়েট, রুয়েট ও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ব্যাটারিচালিত রিকশার নকশা উন্নয়ন করে ব্রেক ও গতির সমতা আনা; সড়কের সক্ষমতা বিবেচনা করে এলাকাভিত্তিক সংখ্যা নির্ধারণ করে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে এবং বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণে নিবন্ধন দেওয়া; ব্যাটারিচালিত রিকশার চালককে ন্যূনতম এক সপ্তাহের প্রশিক্ষণ দিয়ে লাইসেন্স দেওয়া; ব্যাটারিচালিত রিকশা নির্ধারিত এলাকা ও সড়কে চলছে কিনা নিশ্চিত করতে জিপিএস লাগানো; এসব রিকশা ও যন্ত্রাংশ আমদানি বন্ধ করাসহ ৮ দফা সুপারিশ করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন, চট্টগ্রাম ইলেকট্রিক থ্রি হুইলার যানবাহন মালিক ও চালক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক মিয়া প্রমুখ।
- বিষয় :
- ব্যাটারিচালিত রিকশা