ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

শাহজালালে নিরাপদে যাত্রী উদ্ধারে ৪৫ মিনিটের ঘাম ঝরানো মহড়া

শাহজালালে নিরাপদে যাত্রী উদ্ধারে ৪৫ মিনিটের ঘাম ঝরানো মহড়া

ছবি-সমকাল

শহিদুল আলম

প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২২:৪০

জরুরি মুহূর্তে এয়ারক্রাফট থেকে নিরাপদে যাত্রীদের উদ্ধার বিষয়ে বিমানবন্দরে বেবিচক কর্মীদের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইসিএও) নিয়ম অনুযায়ী কর্মীদের সচেতনতায় প্রতি দুই বছর অন্তর একবার করে বিমানবন্দরে নিরাপত্তা মহড়া করতে হয়। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তা মহড়া করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
  
এ মহড়ায় বেবিচকের নিরাপত্তা শাখার কর্মী ছাড়াও, বাংলাদেশ বিমান সেনবাহিনী, সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিস, এপিবিএন, ডিএমপি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, জাহানারা হাসপাতাল, র‍্যাব, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলা এবং নভোএয়ারসহ বিভিন্ন সংস্থা এক যোগে অংশগ্রহণ করে।
 
মহড়ার অংশ হিসেবে দেখা যায়, দেশের কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ৩৫ জন যাত্রী নিয়ে সকাল পৌনে ১০টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করে এবিসি নামে বিমানের একটি ফ্লাইট। এসময় হঠাৎ একটি মোবাইল নম্বর থেকে ঢাকার বিমানবন্দর কন্ট্রোল টাওয়ারে জরুরি কল আসে ওই ফ্লাইটে বোমা রয়েছে। এমন  হুমকি পেয়ে টাওয়ার থেকে জরুরিভাবে বিষয়টি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়। এরপর পুরো বিমানবন্দর জুড়ে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়। মুহূর্তেই কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় থাকা সংশ্লিষ্টদের। এসময় বিভিন্ন সংস্থার প্রায় দুই শতাধিক নিরাপত্তা কর্মীর অংশগ্রহণে প্রায় ৪৫ মিনিটের ঘাম ঝরানো অভিযান চালিয়ে উড়োজাহাজ থেকে বোমা সদৃশ বস্তুটি নিরাপদে উদ্ধার করেন বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা। পরে সেটিকে নিরাপদে নিষ্ক্রিয় করেন তারা। এসময় এয়ারক্রাফটটিকে চারপাশ থেকে ঘিরে রাখেন অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
 
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আসলে এটি কোনো সত্য ঘটনা নয়, এটি ছিল একটি মহড়া। যেখানে শাহজালাল বিমানবন্দরে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তারই মহড়া চালানো হয়। বিমানবন্দরে এ মহড়ার আয়োজন করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
এতে নেতৃত্ব দেন বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম। মহড়াস্থলে অন সিন কমান্ডারের ভূমিকায় ছিলেন তিনি। ডেপুটি অন সিন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এভিয়েশন সিকিউরিটির পরিচালক উইং কমান্ডার মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন। 

এ ব্যাপারে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) এনেক্স-১৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিমানবন্দরে হাইজ্যাক, অগ্নি নিরাপত্তা, বোমা হামলাসহ বিভিন্ন ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতা প্রমাণে প্রতি দুই বছর অন্তর একবার করে এ ধরনের মহড়া আয়োজন করা হয়। মূলত জরুরি মুহূর্তে বিভিন্ন সংস্থা কত দ্রুত সময়ে আসতে পারে সেটিই প্রমাণ করার লক্ষ্যেই এই মহড়া। 

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্যে দেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া। তিনি বলেন, এভিয়েশন সেক্টরে উন্নত যাত্রীসেবা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল সংস্থার সহযোগিতার প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে কারও বিরুদ্ধে অসযোগিতার অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময়ে এ্যাভসেক সদস্যরা আইকাও’র দিক নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মহড়া বাস্তবায়ন করেছেন। প্রস্তুতি ছাড়া কোনো কিছু সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এজন্য দরকার প্রশিক্ষণ ও মহড়া। সিভিল এভিয়েশনের নির্দেশনা হচ্ছে, প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে মহড়ার মাধ্যমে সক্ষমতা নিশ্চিত করা। আগামী দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরে এ মহড়া করা হবে বলেও আরও জানান বেবিচক সংশ্লিষ্টরা। 

আরও পড়ুন

×