ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

পুলিশ সপ্তাহ: উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস

নির্বাচনে পুলিশ যাতে কারও স্বার্থে ব্যবহার না হয়

অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশ জনরোষের শিকার হয়েছে

নির্বাচনে পুলিশ যাতে কারও স্বার্থে ব্যবহার না হয়

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধনকালে বাহিনীর সদস্যদের ব্যাজ পরিয়ে দেন -পিআইডি

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ | ০১:১৮ | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ | ০৭:৩৮

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুলিশ বাহিনী যাতে কারও স্বার্থে ব্যবহার না হয়, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে দেওয়া ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে সংসদ নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হয়, সে জন্য পুলিশ সদস্যদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনে সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রতি সমান আচরণ, ভোটার যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করা আপনাদের ও আমাদের সর্বোচ্চ দায়িত্ব। খবর ইউএনবি।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে কখনও যাতে পুলিশকে দলীয় বাহিনী বা অন্যায় কাজে ব্যবহার করা না যায়, সে জন্য একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জরুরি। নির্বাচনের আগের সময়টা অনেক কঠিন। আপনাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে, পরাজিত শক্তি যাতে কোনোভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে। আমরা একটি যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি।

স্বৈরাচারী শাসনামলের ১৫ বছরে পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করায় সব ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বৈরাচারের অবৈধ ও অন্যায় আদেশ পালন করতে গিয়ে এ বাহিনী ব্যাপকভাবে জনরোষে পড়েছিল। অনেক সৎ পুলিশ সদস্যকেও এ জন্য মাশুল দিতে হয়েছে।

তিনি বলেন, গত আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল; পুলিশের সঙ্গে জনগণের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। সরকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য যা কিছু প্রয়োজন, সব রকমের ব্যবস্থা নিয়েছে। সড়ক-মহাসড়কে বিশৃঙ্খলা ও জনদুর্ভোগ নিরসনে বিশেষ অভিযান পরিচালনা, অংশীজনের সঙ্গে পুলিশের আন্তঃযোগাযোগ জোরদার করা, পুলিশ সদস্যদের মনোবল বাড়ানোর প্রয়োজনীয় প্রণোদনামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সহায়তায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে জানিয়ে সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
ড. ইউনূস বলেন, নারী-শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে পুলিশ বাহিনীকে শক্তিশালী ভূমিকায় দেখতে চায় মানুষ। তাদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সংবেদনশীল হয়ে কাজ করতে হবে। সব শ্রেণি-পেশার নারী যেন যে কোনো ঘটনায় পুলিশের হটলাইনে ফোন করে সর্বোচ্চ সহায়তা পান, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। নারী-শিশু নিরাপত্তা পেলে আমরা বুঝতে পারব, নিরাপত্তার দিক থেকে দেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, পুলিশ ও জনগণের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, সেটি কমিয়ে আনা এবং পুলিশ বাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থা ফেরানোই আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। এটি কঠিন না। একবার সেই আন্তরিক পরিবেশ তৈরি হলে এ বন্ধন অটুট থাকবে। 

আরও পড়ুন

×