ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

উড়োজাহাজের চাকা খুলেছে বিয়ারিং ত্রুটিতে

পাইলটসহ ৩ জন পেলেন সম্মাননা

উড়োজাহাজের  চাকা খুলেছে  বিয়ারিং ত্রুটিতে

ফাইল ছবি

 সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৫ | ০১:২১

কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটির চাকা বিয়ারিং ত্রুটির কারণে খুলে পড়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার বিমানের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। কী কারণে এ ত্রুটি দেখা দিয়েছে, তা তদন্তের পর জানা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিরাপত্তা ও তদন্তের বিষয়ে বিমান কর্তৃপক্ষ দুটি কমিটি গঠন করেছে। 

এদিকে ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজটির নিরাপদ অবতরণের স্বীকৃতি হিসেবে গতকাল রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমানের বলাকা ভবনের সম্মেলন কক্ষে উড়োজাহাজের ক্যাপ্টেন জেএসএমএম বিল্লাহ, ফার্স্ট অফিসার জায়েদ তাজিম ও কেবিন ক্রু  মোহাম্মদ জামাল উদ্দিনকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়েছে। তাদের হাতে স্মারক তুলে দিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজগুলোর প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কানাডার ডি-হেভিল্যান্ড এয়ারক্রাফট কোম্পানি। গত ১৬ মে’র ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ডি-হেভিল্যান্ড থেকে প্রস্তুত করা ম্যানুয়ালে বলা আছে চাকার বিয়ারিংয়ে ত্রুটি দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট চাকা অথবা টায়ার বিচ্যুত হতে পারে; যা সে দিন ঘটেছে। 

এতে বলা হয়, ফ্লাইট নম্বর বিজি-৪৩৬ উড়োজাহাজটি দুপুর ১টা ২১ মিনিটে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পর একটি চাকা খুলে যায়। পরে বিষয়টি কক্সবাজার কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে ফ্লাইটের বৈমানিককে জানানো হয়। বৈমানিক কক্সবাজার থেকে ঢাকা অভিমুখে যাত্রা অব্যাহত রাখেন এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে নিরাপদে অবতরণ করেন। উড়োজাহাজটি নির্দিষ্ট পার্কিং বে-তে পৌঁছানোর পর প্রকৌশলীরা বাম দিকের ল্যান্ডিং গিয়ারের একটি চাকা না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, চাকাটি বিয়ারিং ফেল করে বিচ্যুত হয়েছে। উড়োজাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রণীত রক্ষণাবেক্ষণ ম্যানুয়ালের টাস্ক সূত্র ০৫-৫০-১৭-২১০-৮০১ অনুযায়ী চাকার ‘বিয়ারিং ফেউলুর’ হলে সম্পূর্ণ চাকা খুলে যেতে পারে বলে উল্লেখ আছে। এর সঠিক কারণ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর জানা যাবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনার পর বিমান প্রকৌশল বিভাগের তাৎক্ষণিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ঢাকায় অবস্থানরত সব ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজের সব চাকা পর্যবেক্ষণ করা হয়। ইতোমধ্যে কানাডার কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে অবিলম্বে টেকনিক্যাল স্টাফ পাঠানোর বিষয়ে অনুরোধ করা হয়েছে। কোম্পানি সোমবার (গতকাল) স্পেশালাইজড টিম পাঠানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চিফ অব ফ্লাইট সেফটির নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট সেফটি ইনভেস্টিগেশন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া প্রকৌশল ও ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট পরিদপ্তরের আওতায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ। দুটি কমিটি ঘটনার মূল কারণ অনুসন্ধান, এ সম্পর্কিত মেইনটেন্যান্সের শর্ত ও রেকর্ড পরীক্ষা এবং এমন ঘটনা পুনঃসংঘটন রোধে পরামর্শ দেবে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করবে। উড়োজাহাজটিকে আবার যাত্রীসেবায় ফিরিয়ে আনতে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ। উড়োজাহাজটির প্রস্তুতকারকের কাছে ঘটনাটি সম্পর্কে রিপোর্ট করে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের পর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে উড্ডয়নের জন্য উড়োজাহাজটিকে উপযুক্ত বলে ঘোষণা করা হবে।

 

আরও পড়ুন

×