ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

৯৩ আসামির সম্পদের তথ্য মিলেছে

৯৩ আসামির সম্পদের তথ্য মিলেছে

.

 ওয়াকিল আহমেদ হিরন

প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫ | ২৩:২৬

জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার ১৭০ আসামির স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য চেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। গত বছর আগস্ট মাসের শেষ দিকে এ-সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) চিঠি পাঠানো হয়। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯৩ জনের বৈধ-অবৈধ সব সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে বলে সমকালকে নিশ্চিত করেছে তদন্ত সংস্থা।

তদন্ত সংস্থা থেকে এ-সংক্রান্ত চিঠির অনুলিপি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান, মহাপরিচালক জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা, পুলিশের বিশেষ শাখাসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সম্পদের হিসাব চাওয়াদের মধ্যে রয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবার, বোন শেখ রেহানা ও তাঁর পরিবার, সাবেক মন্ত্রী-সংসদ সদস্য, সাবেক সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ ও তাঁর অঙ্গসংগঠনের নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত সংস্থার একাধিক কর্মকর্তা সমকালকে জানান, মামলা তদন্তের স্বার্থে আসামির সম্পদের হিসাব চাওয়া হয়। এটি তদন্ত সংস্থার চলমান প্রক্রিয়া। কার কী পরিমাণ সম্পদ আছে, সেটি তদন্ত কর্মকর্তার জানা প্রয়োজন। তা ছাড়া ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সঙ্গে আসামির স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব জমা দিতে হবে। এসব কারণে তাদের সম্পদের হিসাব চাওয়া হয়েছে। সম্পদের হিসাব ছাড়া কোনো তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে সেটা অসম্পূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
কর্মকর্তারা আরও জানান, ইতোমধ্যে এ-সংক্রান্ত অনেক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তা ছাড়া সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্যদের নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা থেকেও এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রায়ে ভুক্তভোগীর পরিবারকে দেওয়া বা সম্পদ বাজেয়াপ্ত ঘোষণার বিধান আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন তামিম সমকালকে বলেন, মামলা তদন্তের স্বার্থে প্রত্যেক কর্মকর্তা আসামিদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব চেয়ে থাকেন। এটি তাদের নিজস্ব উদ্যোগ। তবে রায়ের সময় ট্রাইব্যুনাল মনে করলে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ এসব সম্পদ দিতে পারেন বা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে পারেন।
এদিকে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত ৩৪২টি অভিযোগ করা হয়েছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা ২২ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৪৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
এর মধ্যে ৭০ জন বেসামরিক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৬২ জন এবং ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রয়েছেন। এসব মামলার তদন্তে এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি ব্যক্তির জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। পরোয়ানা জারির পর ৫৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকি ৮৭ আসামি পলাতক। ৪২টি মামলার তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুন

×