ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সিঙ্গাপুরে যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর বিলিয়ন ডলার!

সিঙ্গাপুরে যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর বিলিয়ন ডলার!

ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২০ | ০৯:৫৭

এক বাংলাদেশির সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন ব্যাংকে বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ রয়েছে। এ অর্থের মালিক মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর। যদিও তার পরিবার এ অর্থের দাবি না করায় টাকা ফিরিয়ে আনতে সমস্যা হচ্ছে। তবে সরকার পাচার হওয়া ওই টাকা ফিরিয়ে আনতে তৎপর রয়েছে। 

চ্যানেল২৪-এর এক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরেই দেশে আলোচনার শীর্ষে বিদেশে অর্থ পাচার। গত ১৮ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউতে 'মিট দ্য প্রেস' অনুষ্ঠানে অর্থ পাচার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, রাজনীতিবিদরা নয়, বিদেশে বেশি অর্থ পাচার করেন সরকারি কর্মচারীরা। তার কাছে তথ্য এসেছে, দেশের অনেক সরকারি কর্মচারীর বাড়িঘর রয়েছে কানাডায়। সেখানে তাদের ছেলেমেয়েরা থাকে। মন্ত্রী আরও জানান, তার কাছে এ রকম ২৮টি কেস এসেছে এবং এর মধ্যে রাজনীতিবিদ হলেন চারজন।

পরদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে গত ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে উষ্ফ্মা প্রকাশ করে আদেশও দেন। আদেশে বিদেশে অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের যাবতীয় তথ্যসহ তালিকাও (নাম-ঠিকানা, মামলাসহ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের তথ্যাদি) তলব করা হয়। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের এ তথ্য দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এরই মধ্যে অর্থ পাচারকারীদের তালিকায় নাম এসেছে সাকা চৌধুরীরও। জীবদ্দশায় এই ব্যক্তিই কিনা সিঙ্গাপুরে পাচার করেছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ, যা এখন রক্ষিত আছে সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন ব্যাংকে। ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর ঢাকায় তৎকালীন কেন্দ্রীয় কারাগারে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।

অবশ্য পাচার হওয়া ওই অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যদিও এই আইনি প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি জানান, আইনি প্রক্রিয়ায় পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনা সময়সাপেক্ষ। তবে পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে দুদক কাজ করছে।

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, বিদেশে যদি পাচার হওয়া কোনো টাকা বা সম্পদ থাকে তাহলে সেটি অবশ্যই সরকার আইনি প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনবে। এ ব্যাপারে সরকার তৎপর রয়েছে।

মুদ্রা পাচারের পরিসংখ্যান বলছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৭৫৩ কোটি ২৭ লাখ ডলার পাচার হয়। বর্তমান বাজারদরে যা ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এসব অর্থ ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক ও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়।


আরও পড়ুন

×