সুদর্শন ফুল নীলঘণ্টা

দেশে সহজলভ্য নীলঘণ্টা ফুল লেখক
মোকারম হোসেন
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২১ | ২০:৪৫ | আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২১ | ২০:৪৫
নামের ক্ষেত্রে নীলঘণ্টা আর নীলকণ্ঠ নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি রয়েছে। অনেকেই নীলঘণ্টা ফুলকে নীলকণ্ঠ নামে চেনেন। আদতে নীলকণ্ঠ একটি পাখির নাম। আর নীলঘণ্টা হচ্ছে একটি সুদর্শন ফুলের নাম। নাম শুনে মনে হতে পারে, এ আবার কেমন ফুল! ঘণ্টা কোনো ফুল হয় নাকি। আসলে ফুলটি দেখলে সত্যি সত্যি তাই মনে হবে। কারণ, এরা ঘণ্টার মতো ঝুলে থাকে। ফুলটি দেখার জন্য আমাদের যেতে হবে কোনো পার্ক বা উদ্যানে। ঢাকায় রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বোটানিক্যাল গার্ডেনসহ বিভিন্ন পার্ক ও উদ্যানে এই গাছ সহজদৃষ্ট।
এদের ঝোপাল গাছের পাতার আড়ালে ফুলগুলো অনেকটাই লুকিয়ে থাকে। ভালো করে দেখে তারপর খুঁজে বের করতে হয়। ফুল ফোটে কিছুটা এলোমেলোভাবে। তা ছাড়া সারাবছরই গাছগুলো অসংখ্য পাতার ঠাসবুননীতে ঢেকে থাকে। এ কারণে চট করে ফুল নজরে আসে না।
নীলঘণ্টা আজকাল প্রায় সব বাগানেই দেখা যায়। কখনও কখনও মাথা মুড়ানো ছোট ঝোপগুলো বাগানের সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে ওঠে। বিশেষত, বড় ধরনের ল্যান্ডস্কেপ বাগানের ক্ষেত্রে নীলঘণ্টার ঝোপগুলো ছেঁটে বিশেষ আকৃতিতে রাখলে বেশ মনোলোভা হয়। কেউ কেউ শুধু বেড়ার জন্যও এ গাছ লাগান। তাতে ফুল ও পাতার সৌন্দর্য দুটোই পাওয়া যায়। এ জন্য অবশ্য কিছু বাড়তি ব্যবস্থা ও পরিচর্যা প্রয়োজন। ফুলগুলো সব সময় দৃশ্যমান রাখার জন্য আর্চের ওপর সরু কাণ্ড ও ডালগুলো তুলে রাখলে ফুলের শোভা উপভোগ করা যায়। নীলঘণ্টা প্রায় সারাবছরই ফোটে এবং বাগান সাজানোর কাজে বেশ কার্যকর।
গাছ (Thunbergia erecta) প্রায় দেড় মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে, শীতকালে অল্প সময়ের জন্য পাতা ঝরে। গাছ না ছেঁটে লতাও বানানো যায়। পাতা ছোট, তিন থেকে পাঁচ সেন্টিমিটার লম্বা ও মসৃণ। ফুল ফোটে পাতার কোলে, একেকটি বা সজোড়, গাঢ়-নীল বা নীল-বেগুনি, চওড়া ও সামান্য বাঁকা, তিন সেন্টিমিটার লম্বা দলনল সাদা, ভেতর হলুদ, মুখ প্রায় চার সেন্টিমিটার চওড়া। গোড়ার চারা ও কলমে চাষ। আদি আবাস দক্ষিণ আমেরিকা।
- বিষয় :
- নীলঘণ্টা
- মোকারম হোসেন