ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সিনহা হত্যা মামলার রায়

সুপারিশ ফাইলবন্দি

সুপারিশ ফাইলবন্দি

ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ০০:০৯

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই কমিটির প্রতিবেদনে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা বন্ধে ১৩ দফা সুপারিশ করে। সুপারিশগুলো কখনও প্রকাশিত হয়নি, তবে যা জানা গেছে, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণগুলোই বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যতম প্রধান হিসেবে বিবেচিত সুপারিশও আসামিদের মতোই ফাইলবন্দি হয়ে রয়েছে।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা। এর দুই দিন পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করে। ওই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়।

সিনহা হত্যাকাণ্ডকে পুলিশের হঠকারী, প্রস্তুতিহীন ও অপেশাদারি আচরণ বলে উল্লেখ করে তদন্ত কমিটি। পাশাপাশি উল্লেখ করে, যথাযথ তদারকি ও জবাবদিহির অভাবে গুলিবর্ষণের বিষয়ে সংশ্নিষ্টদের মনে অসংবেদনশীলতা তৈরি হয়েছে। আত্মরক্ষার আইনি সুবিধার অপপ্রয়োগ হচ্ছে।

এসব বন্ধে কমিটি ১৩ দফা সুপারিশ করে। এর প্রথম দফায় বলা হয়, আত্মরক্ষার অধিকার নিয়ে যে আইন আছে, তার অপব্যবহার বন্ধের ব্যাপারে কার্যকরী নির্দেশনা দেওয়া দরকার। এ ছাড়া সরকারি অস্ত্র না নিয়ে খালি হাতে বা ব্যক্তিগত অস্ত্র নিয়ে দায়িত্ব পালনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। গুলি করার ঘটনার নির্বাহী তদন্তের ক্ষেত্রে ইন্সপেক্টর লিয়াকতসহ তার নিয়ন্ত্রণকারীর ভূমিকা পর্যালোচনা করা উচিত। এ ছাড়া সিনহা হত্যার ঘটনার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আরও সচেতন হওয়া, চেকপোস্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও সেখানে দায়িত্বরদের বুকে ক্যামেরা লাগানো এবং ওসিদের একই জেলায় পদায়ন ও পছন্দের ফোর্স গঠনের ব্যাপারে তদন্ত করার সুপারিশ করে কমিটি। ওসি প্রদীপসহ সংশ্নিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করে কমিটি। পাশাপাশি 'বন্দুকযুদ্ধের' মতো ঘটনা তদন্তের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি নিরপেক্ষ সংস্থা গঠন করতে বলে। এ সংস্থায় বিভিন্ন ক্যাডারের অভিজ্ঞ লোকজনকে প্রেষণে নিয়োগের কথা বলা হয়।

জানা গেছে, বিভিন্ন ক্যাডারের প্রতিনিধি নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত সংস্থা গঠনের অন্যতম প্রধান সুপারিশটি ফাইলবন্দি হয়ে রয়েছে। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা মন্তব্য করতেও রাজি হননি। সিনহা হত্যার পর কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হলেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তদন্ত কমিটির ওই সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন গতকাল বলেন, চেকপোস্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা ক্যামেরা নিয়ে চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি দায়িত্ব পালন করার সময়ে সরকারি অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

×