২১ বছর পর গ্রেপ্তার হলো শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আজিজুল হক
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২২ | ০০:২৮ | আপডেট: ২৭ জুন ২০২২ | ০৬:২০
২০০০ সালে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আজিজুল হক রানাকে গ্রেপ্তার করেছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও আজ বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে কর্মকর্তারা এই তথ্য জানান।
সিটিটিসি কর্মকর্তারা বলছেন, চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনায় দায়ের মামলার রায়ে আদালত এই আজিজুল হককে ফায়ারিং স্কোয়ার্ডে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছিলেন। তবে সে ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিল।
মৃত্যুদণ্ডের পরোয়ানা মাথায় নিয়ে পালিয়া থাকা এই আসামি কখনও নিজেকে রানা, কখনও শাহনেওয়াজ, আবার রুমন নামেও পরিচয় দিতো। সে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হুজির নেতা মুফতি হান্নানের ঘনিষ্ট সহযোগী বলেও জানিয়েছে সিটিটিসি কর্মকর্তারা।
আজ সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান জানান, এই আজিজুল হক দীর্ঘ ২১ বছর বিভিন্ন ছদ্মপেশার আড়ালে নিজেকে আত্মগোপন করে রাখে এবং অত্যন্ত গোপনে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যায়। সে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে টেইলারিং, মুদি দোকানদার, বই বিক্রেতা, ড্রাইভ্রার এবং সবশেষ প্রিন্টিং ও স্ট্যাম্পপ্যাড বানানোর কাজ করত। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে জিহাদী বই, ২টি মোবাইল ফোন, পেনড্রাইভ ও কম্পিউটারের হার্ডডিক্স উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে খিলক্ষেত থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।
২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার সফরসঙ্গীদের হত্যার উদ্দেশে কোটালীপাড়াস্থ শেখ লুৎফর রহমান সরকারি আদর্শ কলেজ মাঠে অবস্থিত সভামঞ্চের পাশে মাটির নিচে একটি ৪০ কেজি ওজনের বোমা এবং হেলিপ্যাডের (ডহর পাড়া) পাশে মাটির নিচে একটি ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখে জঙ্গিরা। গ্রেপ্তার আজিজুল হক মুফতি হান্নানের সঙ্গে বোমা পুঁতে রাখার দায়িত্বে ছিল। ঘটনাটি প্রকাশ পেলে বোমা দুইটি উদ্ধারের পর আজিজুল হক কোটালীপাড়া থেকে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসে।
সিটিটিসির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল হক বলেছে, সে ১৯৮৭ সালে গাজীপুরের শ্রীপুরে জামিয়া আনোয়ারিয়া মাদ্রাসায় নূরানী বিভাগে ভর্তি হয় এবং উক্ত মাদ্রাসার ওস্তাদ ও হরকাতুল জিহাদের সক্রিয় সদস্য, মুফতি হান্নান এর অনুসারী, মাওলানা আমিরুল ইসলাম এর সংর্স্পশে আসে। মাওলানা আমিরুল ইসলাম তাকে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশে যোগদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। উক্ত মাদ্রাসায় মুফতি হান্নান, আব্দুর রউফ, আব্দুস সালাম সহ হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ এর বিভিন্ন সিনিয়র সদস্যদের যাতায়াত ছিল এবং হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজি-বি) সদস্যদের উক্ত মাদ্রাসায় গোপন বৈঠক হতো।