ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

প্রথম আলোর নিবন্ধন বাতিল চেয়ে শহীদ মিনারে মানববন্ধন

প্রথম আলোর নিবন্ধন বাতিল চেয়ে শহীদ মিনারে মানববন্ধন

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে স্বাধীনতা সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় - সাজ্জাদ নয়ন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৩ | ১১:২৫ | আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৩ | ১৪:৫৭

স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোতে প্রকাশিত আলোচিত প্রতিবেদনটিকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি ষড়যন্ত্রমূলক’ আখ্যা দিয়ে পত্রিকাটির নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘স্বাধীনতা সচেতন নাগরিক সমাজের’ ব্যানারে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিজামুল হক ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা, ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এম অহিদুজ্জামান, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সংসদসদস্য আসাদুজ্জামান নূর, অভিনেতা পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য দেন।


অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা নিয়ে কটাক্ষ করা, বিভিন্নভাবে স্বাধীনতার মূল্যবোধকে বিনষ্ট করার অপপ্রয়াসের প্রতিবাদে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার মর্যাদা সমুন্নত রাখার দাবিতে আমরা সমবেত হয়েছি। ১/১১ এর কুশীলবরা এখনও সমাজে আছে, নানা ধরণের অপপ্রয়াস তারা নিচ্ছে।

তিনি বলেন, যখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ অভাবনীয় উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত, উন্নত দেশগুলোতে বাংলাদেশের নাম উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বারবার উচ্চারিত হচ্ছে, একই সঙ্গে একটি নির্বাচিত সরকারের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়ে নির্বাচন এগিয়ে আসছে, এ সময়ে নানা অপকৌশল শুরু হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মৌলিক দায়িত্ব। একটি বিশেষ পটভূমির উদ্দেশ্যে আমাদের স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। যে সকল পত্রিকা এ সকল অপকর্মে যুক্ত আছে তাদের বিরুদ্ধে সকলের সম্মিলিত সোচ্চার হওয়া সময়ের দাবি। মহান স্বাধীনতার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে আমাদের এ ধরণের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।

শাহরিয়ার কবির বলেন, আমাদের স্বাধীনতা দিবসে যেভাবে একটি খবর সুপরিকল্পিতভাবে পরিবেশিত হয়েছে, সেটার নিন্দা জানাবার ভাষা আমার নাই। ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের মূল্যের স্বাধীনতার অবমূল্যায়ন, কটাক্ষ করা, উপহাস করার স্বাধীনতা কোনো নাগরিকের নেই। সে যত বড় সাংবাদিক হন যতবড় সংবাদপত্র হোক না কেন।

তিনি বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের অবমূল্যায়ন, কটাক্ষ করবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিদানে কঠোর আইন গ্রহণ করতে হবে। শুধু প্রেস কাউন্সিলের ক্ষমতা বৃদ্ধি নয়, পৃথক আইন করতে হবে। আইন কমিশনকে এ ধরণের অপরাধের জন্য যাবজ্জীবন শাস্তি দিতে হবে। সরকারের কাছে দাবি জানাই, মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃত ইতিহাস অস্বীকার অপরাধ আইন প্রণয়ন করুন। এ ধরণের চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি গ্রহণ করতে হবে।

নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যখন কোনো বিবৃতি দিই, ছাত্রলীগ কোনো বিবৃতি দেয়, আমাদের বিবৃতি তারা (প্রথম আলো) ঠিকমত ছাপায় না। আমাদের নামগুলোও তারা লেখে না, তাদের কষ্ট হয়। অর্থাৎ এরা মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করে না। প্রথম আলোকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যদি পত্রিকা চালাতে চান, আপনারা নায়ক হওয়ার চেষ্টা করুন, খলনায়ক হবেন না।  

শাহাদাত হোসেন নিপুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রফিকুল আলম ও মনোরঞ্জন ঘোষাল, অভিনয় শিল্পী তারিন জাহান, তানভীন সুইটি, ঊর্মীলা শ্রাবন্তী কর, চিত্রনায়ক রিয়াজ, কবি ও সাবেক সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, প্রথম আলোর বিরুদ্ধে মামলাদায়েরকারী মশিউর মালেক, চিত্রশিল্পী মনিরুজ্জামান, সংগীতশিল্পী শুভ্র দেব, আহসানুল হক মিনু, শাহেদ শরীফ খান, আনজাম মাসুদ, শামীমা তুষ্টি প্রমুখ।  

মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ঐক্যমঞ্চ, বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংঘ, জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, গৌরব ৭১, বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী আন্তর্জাতিক পর্ষদ, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ, বাংলাদেশ শিশু সংগঠন ঐক্যজোট, বৃত্তান্ত ‘৭১ ফাউন্ডেশন, জয়বাংলা সাংস্কৃতিক জোট, স্লোগান '৭১, সম্প্রীতি বাংলাদেশ, বাংলার মুখ, জাতীয় ওলামা সমাজ প্রভৃতি সংগঠন যোগদান করে।

আরও পড়ুন

×