ঈদের ছুটিতে ঢাকার ৪ ঐতিহাসিক স্থাপনা ধ্বংসের অভিযোগ

নারিন্দা স্যুয়ারেজ পাম্পিং স্টেশন ঢাকার প্রথম আধুনিক স্যুয়ারেজ ব্যবস্থার অংশ। ভবনটি না ভাঙতে আদালতের নির্দেশ ছিল। তবে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ তা ভেঙে ফেলেছে। এ ছাড়া শঙ্খনিধি হাউস, মঙ্গলালয় ও নাসিরউদ্দিন স্মৃতি ভবনও ভাঙা হয়েছে -সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫ | ০১:০১
পুরান ঢাকার শতবর্ষী নারিন্দা স্যুয়ারেজ পাম্পিং স্টেশন ঢাকার প্রথম আধুনিক স্যুয়ারেজ ব্যবস্থার অংশ। হ্যারিটেজের অংশ হিসেবে ভবনটি না ভাঙতে আদালতের নির্দেশনা ছিল। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে এটি ভেঙে ফেলেছে। শুধু তাই নয়, কোরবানি ঈদের আগে-পরে পুরান ঢাকায় আরও চারটি ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যিক গুরুত্বসম্পন্ন ভবন ধ্বংসের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার আরবান স্টাডি গ্রুপের প্রধান নির্বাহী তাইমুর ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একযোগে পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর ধ্বংস প্রচেষ্টা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরবান স্টাডি গ্রুপ জানায়, সম্প্রতি পুরান ঢাকার একাধিক ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যিক গুরুত্বসম্পন্ন ভবন ধ্বংসের যে অপতৎপরতা চলছে, তা আমাদের চরমভাবে উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত করেছে।
নারিন্দা স্যুয়ারেজ পাম্পিং স্টেশন ভাঙা নিয়ে বলা হয়, ‘সরকারি মালিকানাধীন এই স্থাপনাটি উচ্চ আদালতের রায় লঙ্ঘন করে সরকারি উদ্যোগেই ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঈদুল আজহার প্রাক্কালে টিপু সুলতান রোডের শতবর্ষী শঙ্খনিধি হাউসের (রাধাকৃষ্ণ মন্দির) ঝুল বারান্দাসহ সামনের অংশ ধসে পড়ে। বেআইনিভাবে নির্মিত একটি বাথরুম এই ধসের মূল কারণ। কয়েক দশক ধরে জবরদখল, অবৈধ পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও ধ্বংসের শিকার এই ঐতিহাসিক ভবনটির সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব অন্তত চারটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থার ওপর ন্যস্ত থাকলেও, তাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই ভবনটির অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে।’
ফরাশগঞ্জের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা মঙ্গলালয়ে আবারও ভাঙচুর শুরু হয়েছে।
এ ছাড়া গত শুক্রবার রাতে বিংশ শতাব্দীর শুরুতে মুসলিম জাগরণের অন্যতম ব্যক্তিত্ব সাংবাদিক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন এবং তাঁর কন্যা নারী নূরজাহান বেগমের বাসভবন, যা নাসিরউদ্দিন স্মৃতি ভবন হিসেবে পরিচিত, সেখানেও বহুতল নির্মাণের উদ্দেশ্যে বেআইনি ভাঙচুর শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ ভবনগুলোর অন্যতম এই ভবনটি কোনো অনুমতি ছাড়াই ভাঙা শুরু করা হয়।
আরবান স্টাডি গ্রুপের প্রধান নির্বাহী তাইমুর ইসলাম বলেন, ‘২০১৮ সালে হাইকোর্ট থেকে ঐতিহ্য সংরক্ষণের রায় ঘোষণা হলেও সরকারি দপ্তরগুলোর সমন্বয়হীনতা, অবহেলা এবং সদিচ্ছার অভাবে এই রায়ের কোনো সুফল পাওয়া যায় নাই। বরং গত সাত বছরেও চূড়ান্তভাবে তালিকাভুক্ত করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে এগুলোর অস্তিত্ব আজ সংকটাপন্ন।’
- বিষয় :
- ঈদের ছুটি