ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

গর্ভাবস্থায় মূত্রনালির সংক্রমণ

গর্ভাবস্থায় মূত্রনালির সংক্রমণ

.

ডা. সারাবান তহুরা

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৪ | ২২:৫৫

মূত্রনালির সংক্রমণ বা ইউটিআই এখন একটি সাধারণ বিষয় আর গর্ভাবস্থায় জীবাণু মূত্রনালিতে প্রবেশ করলে এটি মূত্রনালির সংক্রমণ ঘটায়। সাধারণত গর্ভাবস্থার ৬-২৪তম সপ্তাহ হচ্ছে সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সময়। গবেষণা থেকে জানা যায় যে, প্রায় ৩১ শতাংশ মহিলার গর্ভাবস্থায় উপসর্গহীন মূত্রনালির সংক্রমণ হয়ে থাকে।
গর্ভাবস্থায় মূত্রনালির সংক্রমণের কারণগুলো lঅন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া: মহিলাদের মূত্রনালি থেকে মলদ্বারের দূরত্ব খুব কম; যার ফলে ব্যাকটেরিয়া সহজেই মূত্রনালিতে প্রবেশ করতে পারে।
-শারীরিক পরিবর্তন: হরমোনের মাত্রা (প্রোজেস্টেরন ও ইস্ট্রোজেন) ও গর্ভাশয় এবং জরায়ুর আকার বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মূত্রাশয়ের ওপর চাপ পড়ে এবং মূত্রনালির মূত্রপ্রবাহ ধীরে হয়। মূত্রাশয় সম্পূর্ণরূপে মূত্র বের করতে পারে না। গর্ভাবস্থায় প্রস্রাবে প্রোটিন, হরমোন ও চিনির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রস্রাবের অম্লতা কমে যায়, তখন জীবাণুর প্রকোপ বৃদ্ধি পায়।
- গর্ভাবস্থায় সহবাস করলে অনেক ক্ষেত্রে যোনিপথের জীবাণু মূত্রনালিতে প্রবেশ করতে পারে।
lদীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব আটকে রাখা।
- ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব।
- নিয়ন্ত্রণহীন ডায়াবেটিস, মূত্রনালিতে পাথর অপারেশন ও অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা।
মূত্রের সংক্রমণের সাধারণ লক্ষণগুলো
-তলপেটে ব্যথা/টান ধরা। lকাঁপুনি ও জ্বর।
-মূত্রের সঙ্গে মিউকাস বা রক্ত যাওয়া।
-প্রস্রাব করার সময় জ্বালা বা যন্ত্রণা।
-প্রস্রাবে দুর্গন্ধ। lবারবার প্রস্রাব করার তাগিদ। lযৌন সহবাসের সময় যন্ত্রণা। lকিডনি সংক্রমিত হলে: পিঠে ব্যথা, বমি-বমি ভাব, বমি হওয়া, উচ্চমাত্রায় জ্বর। lগর্ভস্থ বাচ্চার নড়াচড়া কমে যাওয়া। lমূত্রের পরিমাণ কমে যাওয়া।
মূত্রনালির সংক্রমণের জটিলতা ও ঝুঁকিগুলো
-নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্রসব (প্রি-টার্ম লেবার)। lনির্দিষ্ট সময়ের আগে পানি ভেঙে যাওয়া।
-জন্মের সময় শিশুর ওজন কম হওয়া।
- কিডনিতে সংক্রমণ বা পাইলোনেফ্রাইটিস– যা মা ও শিশু উভয়ের জন্যই প্রাণঘাতী হতে পারে।
-বারবার সংক্রমণ হওয়া।
গর্ভাবস্থায় ইউটিআই কীভাবে নির্ণয় করা হয়
ইউরিন আর এমইও কালচার মূলত প্রতি প্রসব-পূর্ববর্তী ভিজিটে এ পরীক্ষাটি করানো উচিত।
ইউটিআই নিরাময়ের উপায়গুলো
-গর্ভাবস্থায় নিরাপদ অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। গুরুতর সংক্রমণের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করা উচিত।
- প্রচুর তরল ও পানি পান করা। যেমন– ডাবের পানি, তাজা ফলের রস, বাটার মিল্ক, দুধ, লেবু পানি ইত্যাদি।
-ভিটামিন সি যুক্ত তাজা ফল-সবজি: পাতিলেবু, কমলালেবু, কিউই, ক্যাপসিকাম, বাদাম, ওটস ইত্যাদি খাওয়া।
মূত্রের সংক্রমণের সাধারণ লক্ষণগুলো
-তলপেটে ব্যথা/টান ধরা। l কাঁপুনি ও জ্বর। l মূত্রের সঙ্গে মিউকাস বা রক্ত যাওয়া। প্রস্রাব করার সময় জ্বালা বা যন্ত্রণা। lপ্রস্রাবে দুর্গন্ধ। lবারবার প্রস্রাব করার তাগিদ। lযৌন সহবাসের সময় যন্ত্রণা। lকিডনি সংক্রমিত হলে: পিঠে ব্যথা, বমি-বমি ভাব, বমি হওয়া, উচ্চমাত্রায় জ্বর।
-গর্ভস্থ বাচ্চার নড়াচড়া কমে যাওয়া।
- মূত্রের পরিমাণ কমে যাওয়া।
মূত্রনালির সংক্রমণের জটিলতা ও ঝুঁকিগুলো
ক. নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্রসব (প্রি-টার্ম লেবার)। খ. নির্দিষ্ট সময়ের আগে পানি ভেঙে যাওয়া। গ. জন্মের সময় শিশুর ওজন কম হওয়া। ঘ. কিডনিতে সংক্রমণ বা পাইলোনেফ্রাইটিস– যা মা ও শিশু উভয়ের জন্যই প্রাণঘাতী হতে পারে। l বারবার সংক্রমণ হওয়া।
গর্ভাবস্থায় ইউটিআই কীভাবে নির্ণয় করা হয়
ইউরিন আর এমইও কালচার মূলত প্রতি প্রসব-পূর্ববর্তী ভিজিটে এ পরীক্ষাটি করানো উচিত।
ইউটিআই নিরাময়ের উপায়গুলো
-গর্ভাবস্থায় নিরাপদ অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। গুরুতর সংক্রমণের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করা উচিত।
- প্রচুর তরল ও পানি পান করা। যেমন– ডাবের পানি, তাজা ফলের রস, বাটার মিল্ক, দুধ, লেবুপানি ইত্যাদি।
-মিষ্টি ছাড়া ক্র্যানবেরির রস, প্রোবায়োটিক যেমন– দই, চিজ ও অন্যান্য সাপ্লিমেন্ট– বিটা কেরোটিন, জিংক ইত্যাদি খাওয়া। l খাদ্যাভ্যাস থেকে চিনি, পরিশোধিত খাবার, ক্যান্ড জুস, অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন বাদ দিতে হবে।
-সহবাসের সময় কনডম ব্যবহার করতে হবে। যৌন মিলনের আগে ও পরে প্রস্রাব করা এবং স্থানটি ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। ইউটিআইয়ের চিকিৎসা চলা অবস্থায় সহবাস এড়িয়ে চলাই ভালো।
-প্রস্রাব আটকে রাখা হতে বিরত থাকা।
-মহিলাদের হাইজিন প্রোডাক্ট যেমন– পাউডার, ডিওডোরেন্ট, অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ইত্যাদি ব্যবহার না করা।
-সবসময় আরামদায়ক সুতির মাতৃত্বকালীন আন্ডারওয়ার পরা।
-কিছুদিন পর যন্ত্রণা কমে গেলেও অ্যান্টিবায়োটিকের নির্দিষ্ট প্রেসক্রিপশন অবশ্যই মেনে চলা।
উপসংহার : সব ইউটিআইয়ের ক্ষেত্রে মেডিকেল চিকিৎসা প্রয়োজন না হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে ভবিষ্যতে সংক্রমণ থেকে দূরে থাকা যায়। গর্ভবতী মায়ের মূত্রাশয়ে সংক্রমণের লক্ষণ দেখা গেলে তা পরীক্ষা করানো আবশ্যক এবং জটিলতা এড়ানোর জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।
[কনসালট্যান্ট, গাইনি অ্যান্ড অবস
চেম্বার : আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার]

 

আরও পড়ুন

×