আলোচনায় অর্থনীতিবিদরা
বাজেটের সঙ্গে মুদ্রানীতির সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৩ | ১৮:০০
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বিনিয়োগ গতিশীল রাখার মতো বিষয়গুলোতে বাজেট ও মুদ্রানীতির মধ্যে সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে। এর মাধ্যমেই সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব। শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ের কার্যালয়ে আয়োজিত বাজেট পর্যালোচনায় এমন মতামত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও উন্নয়ন সমন্বয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা থাকলেও, কী কৌশলে তা নিয়ন্ত্রণ করা হবে তার সুনির্দিষ্ট পথনকশা দেওয়া হয়নি। মুদ্রানীতি সংকোচনমূলক রাখার বিষয়টিও বাজেট বক্তৃতায় আসেনি। তবে রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি ঘোষণায় বিষয়টি থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ২৫ শতাংশ টাকার অবমূল্যায়ন ও বাজার ব্যবস্থার সমস্যার কারণে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। তবে সমকালীন মূল্যস্ফীতি যাতে দীর্ঘমেয়াদে চেপে না বসে, সে জন্য মুদ্রানীতিতে যথার্থ সিগনাল বা ইঙ্গিত দিতেই হবে। সে জন্য নীতি সুদহার ও বাজারনির্ভর সুদহার নির্ধারণে মুদ্রানীতি দিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম. এম. আকাশ বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকায় আমদানি ঘোষণা দেওয়ার পরই স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে যায়। সারাদেশের ভোজ্যতেল ও ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে মাত্র তিন থেকে চারটি কোম্পানি। বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরিতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. এ. কে. এনামুল হক বলেন, অযৌক্তিকভাবে কর আরোপের ফলে অনেক ব্যবসায়ী দেশের বাইরে গিয়ে ব্যবসা করছেন। এতে করে দেশীয় কোম্পানি বিদেশি হয়ে যাচ্ছে। তাই করের হার না বাড়িয়ে আওতা বাড়ানোর মধ্য দিয়ে রাজস্ব বাড়াতে হবে।
বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. এস. এম. জুলফিকার আলী বলেন, ক্রমবর্ধমান আয়বৈষম্য কমিয়ে আনতে ধনীদের কাছ থেকে বেশি কর আদায় করে সামাজিক সুরক্ষায় প্রকৃত ব্যয় বাড়াতে হবে।
জলবায়ুসহিষ্ণু উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বাজেট বাস্তবায়নের আহ্বান জানান ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ড. নাজনীন আহম্মেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. রুমানা হক বলেন, বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ ৫ শতাংশের আশেপাশে আটকে আছে বহুদিন। এর ফলে স্বাস্থ্যসেবা বাবদ ব্যয়ের চাপ বাড়ছে জনগণের ওপর।
আরও বক্তব্য রাখেন বিআইজিডির সিনিয়র ফেলো ড. মাহীন সুলতান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়নের অধ্যাপক ড. এম. আবু ইউসুফ, বিআইজিডির ভিজিটিং ফেলো খন্দকার সাখাওয়াত আলী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব এবং বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর।
- বিষয় :
- মুদ্রানীতি
- বাজেট