ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

‘অন্যান্য রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মতো বেসিক ব্যাংকও সরকারি’

বিভ্রান্তি দূর করতে কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা

‘অন্যান্য রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মতো বেসিক ব্যাংকও সরকারি’

ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ১৮:২৪ | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ১৮:২৫

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী, রূপালী, অগ্রণী, জনতা ও বিডিবিএলের মতো বেসিক ব্যাংক সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংক। এটি একই পরিচালন কাঠামো, নীতিমালা, বেতন কাঠামোর আওতায় পরিচালিত হয়ে আসছে। এখানকার কর্মীরা অন্য সরকারি ব্যাংকের মতো পেনশনসহ একই সুবিধা পেয়ে আসছেন। সরকার ব্যাংকটির চেয়ারম্যান, পরিচালক, এমডি নিয়োগ দেয়। উচ্চ আদালত, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের বিভিন্ন নথিতেও বেসিক ব্যাংক সরকারি মালিকানাধীন হিসেবে স্বীকৃত।

গত ১৬ এপ্রিল ‘বেসিক ব্যাংক সরকারি নয়’ বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্রের দেওয়া বক্তব্যে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর করতে নিজেদের ব্যাখ্যায় এসব তথ্য তুলে ধরেছে ব্যাংকটির কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি বেসরকারি সিটি ব্যাংকের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক একীভূত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ব্যাংকের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত না করে সরকারি ব্যাংকের সঙ্গে এক করে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গত ১৬ এপ্রিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, সোনালী, জনতার মতো বেসিক ব্যাংক সরকারি নয়। বেসিক ব্যাংক সরকারের কোনো ব্যাংক অর্ডার দ্বারা স্থাপিত হয়নি। সরকার যেমন কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হোল্ড করে, তেমনি বেসিকেরও শেয়ার হোল্ড করে। অন্য ব্যাংকের সঙ্গে বেসিকের পার্থক্য হচ্ছে সরকার যেটা রাজস্ব থেকে দেয় সেটাই সরকারি প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আছে সরকারের বাণিজ্যিক কাজের জন্য প্রতিষ্ঠিত। বেসিক ব্যাংকও তেমন একটি প্রতিষ্ঠান।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বেসিক ব্যাংকের জনসংযোগ প্রধান মোহাম্মদ ইশতিয়াক আজাদ স্বাক্ষরিত লিখিত ব্যাখ্যায় জানানো হয়, নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের এমন বক্তব্যে গ্রাহকদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সরকারি গেজেট, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিপত্রের মাধ্যমে বেসিককে শতভাগ রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। আদালতের রায়ে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সরকারি কর্মচারী হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, বর্তমানে দেশে কার্যরত রাষ্ট্র মালিকানাধীন অন্যান্য ব্যাংকের মতো বেসিক ব্যাংকও একই বিধিমালা ও নীতিমালার আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বিডিবিএলের মতো বেসিক ব্যাংকের সাংগঠনিক কাঠামোও অভিন্ন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বার্ষিক প্রতিবেদনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের তালিকায় বেসিক ব্যাংকের নাম রয়েছে। এ ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের তালিকায় বেসিক ব্যাংকের নাম রয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান, পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ অনুযায়ী, বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা নির্ধারিত গ্রেডে বেতন ও অন্যান্য ভাতা পেয়ে থাকেন। কর্মকর্তা–কর্মচারীদের পেনশন সুবিধা রয়েছে। বেসিক ব্যাংকে নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণরূপে সরকারি ব্যাংকের অনুরূপ বিধিবিধান অনুসরণ করা হয়। সরকারি ব্যাংকের পদোন্নতি নীতিমালার অধীনে বেসিক ব্যাংকের অনেকেই পদোন্নতি পেয়ে এখন অন্যান্য সরকারি ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত আছেন। একইভাবে সোনালী, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির পর বেসিক ব্যাংকে পদায়ন করা হয়েছে। এসব তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, দেশের অন্যান্য রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ন্যায় শতভাগ রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে বেসিক ব্যাংক একই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।

আরও পড়ুন

×