তিন মাস পর কিছুটা বাড়ল মূল্যস্ফীতি

কোলাজ
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫ | ০০:৪৭
টানা তিন মাস কমার পর কিছুটা বাড়ল মূল্যস্ফীতি। গত মার্চ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বর, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ধারাবাহিকভাবে কমে আসে। মার্চে এসে তা ফের বাড়ল। তবে ইতিবাচক দিক হচ্ছে, গত মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি আরও খানিকটা কমে এসেছে। বেড়েছে শুধু খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ প্রতিবেদনটি গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশ করেছে বিবিএস। এতে দেখা যায়, গত মার্চ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। এর আগে জানুয়ারিতেও খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছিল। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মার্চে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ, যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
প্রতি মাসে মাঠ পর্যায় থেকে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার দামের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে থাকে বিবিএস। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) প্রণয়ন করা হয়। এ সূচক আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কতটা বাড়ল তার শতকরা হারই পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি।
এটির ১২ মাসের চলন্ত গড় হিসাব হচ্ছে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি।
বিবিএসের হিসাবমতে, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মার্চ মাসে গ্রামে মূল্যস্ফীতি কমেছে। তবে বেড়েছে শহর এলাকায়। গত মাসে গ্রামে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ, যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। মার্চে শহর পর্যায়ে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এদিকে ১২ মাসের চলন্ত গড় হিসাবে মার্চে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ২৬ শতাংশ।
উল্লেখ্য, ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। ওই অর্থবছর বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি হয় ৯ শতাংশের কিছু বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা বেড়ে হয় ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এরপর চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত ৯ শতাংশের ওপরেই রয়েছে মূল্যস্ফীতি।
গত বছর ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া কিছু পদক্ষেপে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছিল। আগস্টে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয় ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ হয়, যা জুলাইয়ে ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে আরও কিছুটা কমে হয় ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ।
অক্টোবর ও নভেম্বরে তা ফের বেড়ে যায়। কমতে দেখা যায় ডিসেম্বর থেকে। যদিও ওই তিন মাসই দুই অঙ্কের ঘরে ছিল মূল্যস্ফীতি। ২০২৪ সালে সব মিলিয়ে পাঁচ মাস মূল্যস্ফীতি ছিল দুই অঙ্কের ঘরে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কের ঘরে নেমে আসে। ফেব্রুয়ারিতে তা আরও কিছুটা কমে।
গত কয়েক অর্থবছর ধরে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাখা যাচ্ছে না। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। তবে বাস্তবতার আলোকে সে লক্ষ্যমাত্রায় সংশোধন আনা হয়েছে। গড় মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৭ শতাংশের নিচে রাখতে চাইছে সরকার।
- বিষয় :
- মূল্যস্ফীতি