ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

সাক্ষাৎকার: ড. মোসলেহ উদ্দিন আহমদ

স্থানীয় সরকারের দর্শন উপেক্ষিত, আছে শুধু কাঠামো

স্থানীয় সরকারের দর্শন উপেক্ষিত, আছে শুধু কাঠামো

সাক্ষাৎকার গ্রহণ: দেবব্রত চক্রবর্তী বিষুষ্ণ

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ১২:০০

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. মোসলেহ উদ্দিন আহমদ বিভিন্ন সময় ইউএনডিপি, ডব্লিউএফপি, ইইউ, ইউনেস্কো, ইউএনসিআরডি, এশিয়া ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করেছেন। তিনি বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনার পাশাপাশি  ৪৮টি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। ২০০২ থেকে ২০০৭ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী এই শিক্ষাবিদ অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটির সভাপতি, কাউন্সিল অব কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটির কার্যনির্বাহী সদস্য ও ইউজিসির অর্থ কমিটির সদস্য ছিলেন।
সমকাল: নির্বাচন ব্যবস্থায় অসংগতি-অনিয়ম, কমিশনের নানামুখী ব্যর্থতাসহ সমালোচনা যখন প্রকট হয়ে ওঠে, তখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা কি বার্তা পেলাম বলে আপনি মনে করেন?
ড. মোসলেহ উদ্দিন আহমদ: বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ প্রায় অন্তিমে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাসহ অন্য কমিশনাররা দায়িত্ব নেওয়ার পর কুমিল্লা সিটি করপোরেশন বাদে আর কোনো ভালো নির্বাচন করতে পারেননি- এই অভিযোগ নানা মহল থেকে জোরালোভাবে ওঠে। নির্বাচনকেন্দ্রিক অনিয়ম-অব্যবস্থা-অস্বচ্ছতার পাশাপাশি জননিরাপত্তাও পড়ে হুমকির মুখে। এমতাবস্থায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন তাদের অধীনে অনুষ্ঠিত হলো এবং আমরা এই স্পষ্ট বার্তাই পেলাম, তারা ইচ্ছা করলেই সব পারে। আমাদের সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দিয়েছে এর অনুশীলন-প্রতিপালনে এবং তারা তাদের শপথ অনুসারে দায়িত্ব পালন না করলে গোটা ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হবে- এটিই স্বাভাবিক। কোনো কোনো ক্ষেত্রে হয়েছেও তা-ই। আমরা আশা করব, নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের মাধ্যমে অর্জিত শিক্ষা নির্বাচন কমিশন ও সরকার তো বটেই, সংশ্নিষ্ট সব পক্ষই আমলে রাখতে সক্ষম হবে।
সমকাল: নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন কি তাহলে নির্বাচন ব্যবস্থা ও বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আশার আলো দেখাল?
মোসলেহ উদ্দিন: আমি তা-ই মনে করছি। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন একটি বড় এলাকা নিয়ে। ভোটারও অনেক বেশি। তবে এই ব্যতিক্রমী নির্বাচনটিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে ইভিএম ত্রুটি। অনেকেই ভোট দিতে পারেননি এ কারণে। তা না হলে হয়তো আরও অনেক বেশি ভোট পড়ত। তবে এই নির্বাচন পর্বের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমরা কাঙ্ক্ষিত গণতান্ত্রিক রাজনীতির চেহারাই দেখলাম। আওয়ামী লীগের নির্বাচিত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী নিঃসন্দেহে তারকা প্রার্থী এবং তার ব্যক্তি ইমেজ ও কর্মদক্ষতায়ই তিনি তৃতীয়বারের মতো দলের ভেতরে-বাইরে নানা প্রতিকূলতায়ও বিপুল ভোট পেয়েছেন। তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তৈমূর আলম খন্দকারও জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। নির্বাচন-উত্তর ডা. আইভী ও তৈমূর আলমের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও তাদের যৌথ অঙ্গীকারের যে খবর সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে, তাও রাজনীতির জন্য শুভপ্রদ। এক কথায়, এই নির্বাচন আমাদের অনেকগুলো ভালো খবর দিয়েছে।
সমকাল: গণতন্ত্র ও স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণের জনদাবি নতুন নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তা কতটুকু কার্যকর করা সম্ভব হয়েছে?
মোসলেহ উদ্দিন: আমাদের সংবিধানের প্রথমভাগের ৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, 'প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে', এবং দ্বিতীয় ভাগে রাষ্ট্র পরিচালনার অনুচ্ছেদ একুশে বলা হয়েছে, 'সকল সময় জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য।' একটা প্রশ্ন বরাবরই রয়েছে, স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো কি নিজেরাই স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে তাদের ওপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম নয়? স্থানীয়ভাবে উন্নয়নের ক্ষেত্রে তাদেরই মুখ্য ভূমিকা থাকবে- এটিই স্বাভাবিক। তারা যাতে স্বনির্ভর থেকে কাজ করতে পারে, এজন্য সংশ্নিষ্টদের প্রশিক্ষণসহ আর্থিকভাবে প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা অত্যন্ত জরুরি। এ কাজ স্বাধীনতা-উত্তরকালে শুরু হলেও তা আজ পর্যন্তও সম্পন্ন হয়নি, এটাই দুঃখজনক বাস্তবতা। স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণের বিভিন্ন কমিশন সুপারিশ করার পরও তা হয়নি। একই সঙ্গে তারা সরকারসহ অন্যান্য যে ক্ষেত্র থেকে অনুদান পায়, এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের সঙ্গে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সমন্বয় করে কাজ করবে বটে, কিন্তু সরকারের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। তাহলে তারা অনেকটাই স্বাধীনভাবে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করতে পারবে।
সমকাল: সম্প্রতি কয়েক ধাপে স্থানীয় সরকারের নিম্নস্তর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতায় প্রাণহানি ঘটেছে একশরও বেশি। এই সহিংসতা কী বার্তা দেয়?
মোসলেহ উদ্দিন: নির্বাচনকেন্দ্রিক যে সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটছে, তা অন্তর্দলীয় কোন্দলের কারণেই বেশি ঘটছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ রুদ্ধ নয়। স্থানীয় সরকার কাঠামো আগে শক্তিশালী করা এবং তা নিশ্চিত করতে মানুষের মুক্তভাবে কথা বলার পথ মসৃণ করতে হবে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের জন্য দরকার শক্তিশালী সরকার, একই সঙ্গে শক্তিশালী বিরোধী দলও। এখন বলতে গেলে বিরোধী দলের অবস্থান খুবই দুর্বল। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে সরকারি দলের প্রার্থীরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ।
সমকাল: ইউপি নির্বাচনে পেশিশক্তির ব্যবহার যখন উদ্বেগজনকভাবে লক্ষ্য করা গেছে, তখন অভিযোগ ওঠে, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায় ও কর্তব্য যাদের, তাদের অনেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নামে আইনের অপব্যবহার করেছেন। আপনি বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
মোসলেহ উদ্দিন: বিভিন্ন দেশ এমনকি আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের দিকেও যদি আমরা তাকাই তাহলে এমন উৎকট চিত্র দেখি না। আমি মনে করি, আমাদের দেশে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত চিত্র পরিলক্ষিত হওয়ার পেছনে মূলত কারণ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দর্শনের উপেক্ষার বিরূপ ফল। এর নিরসন ঘটতে পারে যদি রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করা যায় এবং সরকারি-বিরোধী দলের মধ্যে জনকল্যাণের চিন্তাটা প্রাধান্য পায়। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক অধিকারের বিষয়গুলোও সমভাবেই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় জনগণকে শামিল করতে হবে। তাদের কথা শুনতে হবে। তাদের মূল্যায়ন করতে হবে। তবেই পেশিশক্তির উত্থান ঠেকানো সম্ভব।
সমকাল: ইউপি নির্বাচনে অংশীজন অনেকেরই দেখা গেছে বেপরোয়া মনোভাব। এরইবা কারণ কী?
মোসলেহ উদ্দিন: স্থানীয় সরকারের দর্শনটা উপেক্ষিত, আছে শুধু কাঠামো। স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো যেন হয়ে পড়েছে প্রশাসনের বর্ধিতকরণকৃত কোনো স্তর। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারা তাদের মতো করে স্থানীয় সরকারকে ব্যবহার করছে। স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো সরকার নিয়ন্ত্রিত-নির্দেশিত প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্তশাসিত নয়। কারণ তাদের নিজেদের শক্তি খুব কম, বিশেষভাবে অর্থনৈতিক শক্তি। তারা নিজেরা নিজেদের আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রেও দূরদর্শী কোনো পরিকল্পনা নিতে পারেনি। স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দর্শন ভুলে যাওয়ার ফলটা ভালো হয়নি। ভবিষ্যতেও এ জন্য কোনো সুফল আশা করা যায় না।
সমকাল: ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এত সহিংসতা ও প্রাণহানির পরও নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীলরা বলেছেন, উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হয়েছে। আবার একজন কমিশনার তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছেন, নির্বাচনযুদ্ধে যুদ্ধ আছে, ভোট নেই। তাদের পরস্পরবিরোধী এবং কারও কারও বাস্তবতাবিবর্জিত মন্তব্যে কী প্রতীয়মান হয়?
মোসলেহ উদ্দিন: উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে দেখা যাবে, একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে অর্থাৎ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তর থেকে জাতীয় পর্যায়েও অনেকে উঠে এসেছেন, এমনকি রাষ্ট্র পরিচালনায়ও যুক্ত হয়েছেন। যেমন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন লন্ডন সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন। এ রকম দৃষ্টান্ত আরও আছে। নির্বাচন কমিশন গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য ভোটারদের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকলে এবং তাদের ওপর প্রদত্ত দায়িত্বকে সমন্বিত কর্তব্য বলে মনে করলে তাদের কাছ থেকে এমন কথা শুনতে হতো না। সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা ও গণতন্ত্রের বিকাশের সুফলের নজির আমাদের অনেক আছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে সাধারণ মানুষের আস্থায় তো ক্ষয় ধরবেই। তাই এখন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীরা জয়ী হওয়ার জন্য নির্বাচনযুদ্ধে অংশ নেন, দায়িত্বশীল হয়ে জনগণকে সেবা প্রদানের জন্য ভোটযুদ্ধে অংশ নিতে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেন না।
সমকাল: অনেকেই বলেছেন, দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার কাঠামোর বিভিন্ন স্তরের নির্বাচন হওয়ার কারণেই সংঘাত-সহিংসতা চরমে পৌঁছেছে। আপনি কি মনে করেন শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ক্ষেত্রে এটিই মুখ্য অন্তরায়?
মোসলেহ উদ্দিন: দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার কাঠামোর নির্বাচন আরও অনেক দেশেই হয়ে আসছে। তবে আমি মনে করি, এ ক্ষেত্রে আইনি কাঠামো তৈরি হলেও তা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আরও সময়োপযোগী করার বিষয়ে ভাবতে হবে। আগে প্রত্যক্ষভাবে দলীয় মনোনয়নে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরে নির্বাচন না হলেও পরোক্ষ প্রভাব তো ছিলই। এখনও অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে স্থানীয়ভাবে নির্বাচন করেন, তাদের স্থানীয় জনগণের চেয়ে কেউ বেশি চেনে না। এখানে দলীয় প্রতীক বা দলের মনোনয়নটা মুখ্য বিষয় নয়। মুখ্য বিষয় হলো, মানসিকতা। মানসিকভাবে উদার হতে না পারলে কোনো প্রচেষ্টায়ই সুফল মিলবে না।
সমকাল: বিতর্কের মুখেই জাতীয় সংসদে পাস হলো ইসি আইন। তাতে কি বিদ্যমান সংকট নিরসনে পথ খুলল বলে মনে করেন?
মোসলেহ উদ্দিন: আরও অনেক আগেই তো নির্বাচন কমিশন গঠন আইন করা উচিত ছিল। যে বিধিবিধান রেখে আইনটি পাস হলো, তাতে কাঙ্ক্ষিত নির্বাচন কমিশন গঠনের পথে অন্তরায় দূর হয়েছে বলে মনে হয় না। সরকারের সদিচ্ছা প্রশ্নমুক্ত হলো তাও বলা যাচ্ছে না। সংবিধানে নির্দেশিত পথে হাঁটলে এ নিয়ে বিতর্ক থাকত না। নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনই নিয়ামক শক্তি। নির্বাচন যদি কলুষিত হয়, তাহলে গণতন্ত্রের বিপর্যয় ঘটতে পারে।
সমকাল: স্থানীয় সরকার নির্বাচন ব্যবস্থার কী পরিবর্তন দরকার বলে আপনি মনে করেন?
মোসলেহ উদ্দিন: এ ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে দরকার জনগণের সম্পৃক্ততা নিবিড় করা। জনগণই গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় মূল শক্তি। গণতন্ত্র চর্চার বিকাশের পথে যেসব প্রতিকূলতা-প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান, তা দূর করতে রাজনীতিকদের উদার মানসিকতার পরিচয় দিতে হবে। রাজনীতির নামে অপরাজনীতির সব পথ রুদ্ধ করতেই হবে। এই নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে ভাবার পরিস্থিতি ফের দিয়েছে।
সমকাল: গত এক দশকে উন্নয়ন প্রশংসিত হলেও সুশাসন নিয়ে প্রশ্ন নতুন নয়। আপনার অভিমত কী?
মোসলেহ উদ্দিন: সবকিছুর আগে দেশ- এই চিন্তাটা যদি রাজনীতির মূল উপাদেয় না হয়, তাহলে অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক কিছুই ঘটতে পারে। দেশ বড়, সর্বাগ্রে এই চিন্তাটা যে পর্যন্ত রাজনীতিকরা অন্তরের অন্তস্তল থেকে প্রাধান্য না দেবেন, ততক্ষণ রাজনীতির গুণগতমান উন্নয়নে আশা দুরাশা হয়েই থাকবে। উন্নয়ন-অগ্রগতি অনেক হয়েছে, তা অসত্য নয়। কিন্তু কোনো উন্নয়নই টেকসই হবে না, যদি স্থিতিশীল ও রাজনীতির মাঠ সমতল নিশ্চিত করা না যায়। আমি মনে করি, রুলস-রেগুলেশনের বাইরে গিয়ে কোনো কিছু করা উচিত না। নিয়মনীতি অনুযায়ী চললে সুশাসন নিশ্চিত করা কঠিন কিছু নয়। সুশাসন নিশ্চিত না হলে দীর্ঘমেয়াদে এর কুফল হবে বহুমুখী। এ জন্য সরকারকেই বলিষ্ঠ ভূমিকা নিতে হবে।
সমকাল: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মোসলেহ উদ্দিন: ধন্যবাদ। সমকালের জন্য শুভকামনা।

আরও পড়ুন

×