নিজস্বতা বিসর্জন দিলে পরিচয় দেওয়ার কিছু থাকে না: মিফতাহ্

মিফতাহ্ জামান
রাসেল আজাদ বিদ্যুৎ
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২২ | ২২:২৫ | আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২২ | ২৩:০৯
মিফতাহ্ জামান। নন্দিত কণ্ঠশিল্পী ও সুরকার। সম্প্রতি তার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে একক গান 'শুধরে নিতাম'। এই আয়োজন, বর্তমান ব্যস্ততা, সংগীত নিয়ে আগামী দিনের ভাবনা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হয় তার সঙ্গে-
সম্প্রতি প্রকাশিত আপনার 'শুধরে নিতাম' গানে নিজেকে ভেঙে গায়কিতে নতুনভাবে তুলে ধরার চেষ্টা দেখা গেছে। মৌলিক গানের বিষয়ে এভাবেই সবসময় নিজেকে নতুনভাবে তুলে ধরতে চান?
প্রথমত আমি যা কিছু সৃষ্টি করি না কেন, সেখানে নিজস্বতার ছাপ রাখতে চাই। এরপর ভাবনা থেকে আগের কাজটি থেকে নিজেকে কতটা ভিন্নভাবে তুলে ধরতে পারলাম। 'শুধরে নিতাম' গানটি রেকর্ড করার আগেও আমার ভাবনায় কিছু গায়কিতে নিজেকে ভেঙে একটু নতুন ভাবে তুলে ধরা। নইলে সব গানই তো প্রায় একই রকম হয়ে যাবে।
নিজস্বয়তা ধরে রেখে গায়কিতে নিজেকে ভাঙা চ্যালেঞ্জিং মনে হয় না?
এই কাজ যে ভীষণ চ্যালেঞ্জিং তা অস্বীকারের উপায়। তাই যখনই নতুন কোনো আয়োজন শুরু করি, তখন লড়াই করি নিজের সঙ্গে নিজে। গীতিকথা হাতে নিয়েই সুর করতে বসা, এরপর কম্পোজিশন শেষ করে তা প্রকাশের চিন্তাভাবনা করা- এভাবে কাজ করা আমার হয়ে ওঠে না। কথা, সুর, সংগীতায়োজন থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপে যথেষ্ট সময় নিয়ে কাজ করি। এরপর গান কেমন হচ্ছে বা হলো, তা নিয়ে অনেকের মতামত চাই। যখন অনেকের সমর্থন পাই এবং কাজ নিয়ে নিজেও কিছুটা সন্তুষ্ট থাকি- তখনই তার প্রকাশনা নিয়ে ভাবি।
সব গানই পরিকল্পনামাফিক তৈরি করা সম্ভব হয়?
শিল্পীর কখনও তৃপ্তি হয় না। যেজন্য আমৃত্যু তারা সৃষ্টির নেশায় ডুবে থাকেন। আমিও যখন গান তৈরি করি, তা শতভাগ পরিকল্পনা অনুযায়ী হয় না। আবার এমনও হয়, আমি যেটা করতে চাচ্ছি, সেটা নিজে হয়তো নিখুঁতভাবে তুলে ধরতে পারব না। তখন অন্য কোনো গুণী সুরকার বা সংগীতায়োজকের কাছে যাই।
সুরকার নাকি শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে গানের ভুবনে পা রেখেছিলেন?
সুরকার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে গানের ভুবনে আসিনি। গান গাইব- এই ইচ্ছা থেকেই সুরের ভুবনে পা রেখেছিলাম। সুর করার ইচ্ছাও ছিল, কিন্তু সেটা নিজের জন্য। অন্য কানো শিল্পীর জন্য সুর করব, এই ভাবনা শুরুতে একদমই ছিল। কিন্তু গানের ভুবনে একটু একটু করে পথ পাড়ি সুরকার হিসেবেও কাজের সুযোগ পেয়ে গেছি।
শিল্পী হিসেবে আপনার প্রথম পছন্দ কোনটা ছিল, আধুনিক নাকি ক্ল্যাসিক্যাল?
আধুনিক আর ক্ল্যাসিক্যাল সংগীতের মিশ্রণে ভিন্ন ধারায় কিছু করা যায় কিনা, তা নিয়ে অনেকে নিরীক্ষা করেছি। গানের এই দুটি ধারা মিলিয়ে অভিনব কিছু আয়োজনের চেষ্টা সবসময় ছিল। যেখানে নিজস্ব ভাবনার ছাপ ফুটে ওঠে।
নিজস্বতার বাইরে গিয়ে কিছু করার ইচ্ছা আছে কি?
নিজস্বতা বিসর্জন দিলে নিজের পরিচয় দেওয়ার কিছু থাকে না। আমিও চাই না, জনপ্রিয়তার জন্য কিংবা যে কোনো মূল্যে যে কোনো কাজ করতে। সংগীত নিয়ে নিরীক্ষা চলতেই পারে; কিন্তু নিজের গান বা গায়কি জনপ্রিয় অন্য কারও মতো হতে হবে- এটা কোনোভাবেই নেমে নেওয়া সম্ভব না।
এবার নতুন আয়োজন খবর জানতে চাই। কী করছেন এখন?
অনেক দিন নজরুল সংগীত গাওয়া হয়নি। ক'দিন ধরে ভাবছি, এবার একটা নজরুলের গান গাইলে কেমন হয়। হয়তো শিগগিরই কাজ শুরু করতে পারব। আর এর মধ্যে মৌলিক একটি গান তৈরি করেছি। পাশাপাশি সিলন মিউজিক লাউঞ্জের জন্যও একটি গান রেকর্ড করা হয়েছে। কিন্তু কোন গান- তা নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাই না। এটা সারপ্রাইজ হিসেবেই থাকুক।
- বিষয় :
- মিফতাহ্ জামান
- কণ্ঠশিল্পী
- সুরকার
- গান