ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

'কী যেন নেই–এমন তাড়না থেকেই ঈশ্বর গানের সৃষ্টি'

'কী যেন নেই–এমন  তাড়না থেকেই ঈশ্বর গানের সৃষ্টি'

প্রিন্স মাহমুদ

রাসেল আজাদ বিদ্যুৎ

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৩ | ১২:১৬

প্রিন্স মাহমুদ। নন্দিত গীতিকবি ও সুরকার। সম্প্রতি তাঁর সুরের ‘প্রিয়তমা’ ছবির ‘ঈশ্বর’ গানটি শ্রোতাদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। এ গানের জন্মকথা, সংগীত নিয়ে নিজস্ব ভাবনা, নতুন আয়োজন ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে 

‘প্রিয়তমা’ ছবির ‘ঈশ্বর’ গানটি কবে এবং কীভাবে তৈরি হলো?

পরিচালক হিমেল আশরাফের কাছে ‘প্রিয়তমা’র গল্প শোনার পরই ‘ঈশ্বর’ গানের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করি। ছবির গল্পে একেক ধরনের সুরের অনুরণন খুঁজে পেয়েছিলাম। এরপরও পুরো গানটি তৈরি করতে ৩০-৩৫ দিন সময় লেগে গেছে। কোনো কোনো গানের জন্য এরচেয়েও বেশি সময় লেগে যায়। আসলে রাতারাতি কোনো কিছু সৃষ্টি করে ফেলা আমার কাছে অকল্পনীয়। অতীতেও হয়নি, এখনও হয় না। সুরের গহিনে ডুব দিয়ে নতুন কিছু তুলে আনা, কথা-সুর ও সংগীতের কাটাছেঁড়া– এসব কিছুর পরেই তৈরি হয় একেকটি গান। ‘ঈশ্বর’ গানের বেলায়ও সেটিই হয়েছে। সোমেশ্বর অলির লেখা গানের কথা, রিয়াদের গায়কি– সবই পছন্দসই ছিল। এরপরও মনে হয়েছে, কী যেন নেই, যা চাইছি তা খুঁজে পেতেই হবে– এমন একটি তাড়না থেকেই গিয়েছিল। সেই তাড়না থেকেই ‘ঈশ্বর’ গানের সৃষ্টি।

সুরকার হিসেবে প্লেব্যাকের জন্য রিয়াদের মতো তরুণ শিল্পীদের নির্বাচনের কারণ?

‘ঈশ্বর’ গানের সুর করার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, যার কণ্ঠ মানানসই মনে হবে, তাকেই বেছে নেব। এরপর খালি গলায় কণ্ঠ রেকর্ড করা থেকে শুরু করে রিয়াদের গায়কি নানাভাবে পরীক্ষা করেছি। যখন মনে হয়েছে আমার এই গান রিয়াদের কণ্ঠেই ভালো শোনাবে, তখনই রেকর্ডিংয়ে হাত দিয়েছি। ‘প্রিয়তমা’ শাকিব খানের সিনেমা। তাই গানের বিষয়ে নির্মাতাদের ভাবনায় জনপ্রিয় শিল্পীর নাম থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু ‘ঈশ্বর’ গানের মধ্য দিয়ে নতুন একটি সময়ের সূচনা করব বলেই সিদ্ধান্ত বদলাইনি। হিমেলও আমার ইচ্ছার প্রতি সমর্থন দিয়ে বলেছে, ভাইয়া, আপনি গানে যার কণ্ঠ চাইবেন, তার কণ্ঠই থাকবে।

চাইলেই আপনাকে দিয়ে যে কেউ গান তৈরি করিয়ে নিতে পারে না; পরিচালক হিমেল আশরাফ ‘প্রিয়তমা’ ছবির জন্য এই অসম্ভব কাজটি কীভাবে করিয়ে নিলেন?

হিমেল গানের বিষয়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে। নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়নি। সৃষ্টির প্রতি দরদ, নতুন কিছু করে দেখানোর আকাঙ্ক্ষা, ধৈর্য, বিশ্বাস– আরও অনেক কিছু তার মধ্যে খুঁজে পেয়েছি। আরেকটি বিষয় হলো, গল্পকার ফারুক হোসেনের ছোট ভাই সে; যে ফারুক ‘প্রিয়তমা’ ছবির অনেক আগে প্রথম আমার কাছে গানের জন্য এসেছিল। হিমেল ও ফারুক দু’জনেরই কথা ছিল এমন, গানের বিষয়ে তাদের যে প্রত্যাশা সেটি প্রিন্স মাহমুদ ছাড়া পূরণ করা সম্ভব নয়। এই যে তাদের বিশ্বাস, আকাঙ্ক্ষা– তা দূরে ঠেলে দেওয়া সম্ভব ছিল না।

গানের ভুবনে পথচলা তিন দশকের বেশি সময়; সুরকার হিসেবে সিনেমার গানে খুব একটা কাজ করতে দেখা যায়নি। এর কারণ কি হিমেল বা ফারুকের মতো কারও কাছে প্রস্তাব না পাওয়া?

গত দুই দশকে বহু ছবিতে গান করার প্রস্তাব পেয়েছি। সিনেমার জন্য গান তৈরির ইচ্ছা যে হয়নি তা নয়। কিছু প্রস্তাব ফিরিয়েছি নিজের মতো করে কাজের সুযোগ পাব না বলে; কিছু ছবির গল্প ও নির্মাণ পরিকল্পনা ভালো না লাগার কারণে। স্বাধীনভাবে কাজ করা, ভালো কিছু করে দেখানোর সুযোগ আছে– এমন কাজের প্রস্তাবও ছিল। কিন্তু অ্যালবাম তৈরি, নয়তো নতুন গানের ব্যস্ততার কারণেই অনেক প্রস্তাব ফেরাতে হয়েছে।

সিনেমায় কি এখন থেকে নিয়মিত কাজ করবেন?

আমি যেভাবে কাজ করতে চাই, সেভাবে কাজের সুযোগ পেলে সিনেমার জন্য নিয়মিত গান তৈরিতে আপত্তি নেই। কারণ, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ ও অনিমেষ আইচের ‘জিরো ডিগ্রি’ ছবিতে কাজ করতে গিয়ে বুঝেছি, সিনেমার গান তৈরি যেমন চ্যালেঞ্জিং, তেমনি অন্যরকম আনন্দের।

মাকসুদ, মিজানের পর নব্বই দশকের জনপ্রিয় আর কোনো শিল্পীকে নিয়ে নতুন গান করার পরিকল্পনা আছে?

এ প্রসঙ্গে এখন কিছু বলতে চাইছি না। নতুন গান তো তৈরি করেই যাচ্ছি। কাকে দিয়ে গাওয়াব বা কবে প্রকাশ পাবে, তা সবকিছু শেষ করার পরই জানাব। শুধু এটুকু বলি, আমার সুরের দারুণ একটা গান শিগগিরই আসবে।

আরও পড়ুন

×