জন্মদিন শুধু আনন্দের নয়, ভাবনারও: ববিতা

ববিতা
এমদাদুল হক মিলটন
প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৩ | ১১:২২
ববিতা। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই অভিনেত্রীর জন্মদিন ছিল গতকাল। সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এ অভিনেত্রী বর্তমানে ছেলে অনিকের সঙ্গে আছেন কানাডায়। দেশের বাইরে কাটানো জন্মদিন ও অন্যান্য প্রসঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন এমদাদুল হক মিলটন
বিদেশের মাটিতে জন্মদিন কেমন কেটেছে?
আমার এবারের জন্মদিন ছিল অন্যরকম। ছেলে অনিক সারাদিন আমাকে নিয়ে ঘুরেছে। নানা সারপ্রাইজ দিয়েছে। টরন্টোর সুন্দর সুন্দর বাগান ও ঐতিহাসিক জায়গায় গিয়েছি দু’জনে। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া সেরেছি। ছেলের সঙ্গে জন্মদিনের আনন্দ ভাগাভাগি করলে মন ভরে যায়। মাঝে দু’বার ওর সঙ্গে জন্মদিন উদযাপন করতে পারিনি বলে মন খারাপ করেছিল। এ কারণে জন্মদিনে ছেলের সঙ্গে থাকার চেষ্টা করি।
জন্মদিনে আপনার কাছে সেরা উপহার কোনটি?
মানুষের ভালোবাসাই জন্মদিনে আমার সেরা উপহার। বিশেষ করে ছেলে আমাকে নিয়ে যা আয়োজন করে, এটাই সবচেয়ে ভালো লাগে।
বিশেষ দিনটিতে কী মিস করেছেন?
এই আয়োজনে আমি দেশের অনেককেই মিস করছি। যেমন– বেশ কয়েক বছর আমার জন্মদিনে ডিসট্রেসড চিলড্রেন অ্যান্ড ইনফ্যান্টস ইন্টারন্যাশনালের [ডিসিআইআই] ছোট ছোট শিশু শুভেচ্ছা জানিয়ে আসছে। এই বিশেষ দিনে তারা আমাকে নেচে-গেয়ে-আনন্দে মাতিয়ে তুলত। তাদের পাশাপাশি বাংলাদেশের অগণিত ভক্ত ও দুই বোন সুচন্দা, চম্পাকে খুব মিস করছি।
জন্মদিন নিয়ে আপনার উপলব্ধি কী?
জন্মদিন শুধু আনন্দের নয়, ভাবনারও। আরও একটি বছর জীবন থেকে পার হয়ে গেল। সবার দোয়ায় ভালো আছি; সুস্থ আছি। এটাই আনন্দের। জীবন অনেক সুন্দর। এ পৃথিবী ছেড়ে সবাই চলে যাবে। তাই যতটুকু সময় আমাদের আছে, তা ভালোভাবে কাজে লাগাতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে ‘ডালাস বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব’-এ আজীবন সম্মাননা পেতে যাচ্ছেন। কেমন লাগছে?
খুবই ভালো লাগছে। এই সম্মান আমার দেশ, জাতি ও পরিবারের। যে কোনো সম্মাননাই একজন শিল্পীর জন্য সম্মানের। তাঁর কাজের মূল্যায়ন। ডালাস অ্যাঞ্জেলিকা ফিল্ম সেন্টারে ‘সৃজনের হাট’-এর আয়োজনে তিন দিনব্যাপী ডালাসের এই ষষ্ঠ চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হবে আগামী ৪ আগস্ট। এবারই প্রথম হবে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র উৎসবের এই আয়োজন। ডালাসের মেয়র আমাকে আজীবন সম্মাননা জানাবেন। আমার অভিনীত ‘নয়নমনি’ চলচ্চিত্র দিয়ে হবে উৎসবের উদ্বোধন। উদ্বোধনও করব আমি। আর সবকিছু আমাকে ঘিরেই– এটি অনেক আনন্দের। অস্কার, মস্কো, বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবসহ বিশ্বের প্রায় সব বড় চলচ্চিত্র উৎসবে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। দেশি-বিদেশি ৭৫টি পুরস্কার পেয়েছি। কিন্তু ডালাসের এ সম্মাননা আমার কাছে অনেক গৌরবের।
কানাডায় সময় কাটে কী করে?
মা-ছেলে মিলে টরন্টো ঘোরাঘুরি করি। আমার দুই ভাই যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। তাদের কাছে যাই। ছেলে সুন্দর বাড়ি করেছে। সেটা সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখি। একজন মা ছেলের জন্য সারাদিন যা করে, আমিও তাই করি। মাঝে মাঝে মাছ ধরতেও বেরিয়ে পড়ি।
জীবনকে আপনি কীভাবে দেখেন?
প্রতিটি মানুষের কাছে জীবন মানে একেক রকমের অনুভূতি। জীবন অনেক সুন্দর।
অভিনয়ে আর ফিরবেন না?
সেরকম ভালো চরিত্র, ভালো গল্প পাচ্ছি না বলে অভিনয় করা হয়ে উঠছে না। পেলে যে কোনো সময়ই অভিনয়ের ইচ্ছে রয়েছে। একজন শিল্পীর অবসর বলে কিছু নেই। ভালো কাজের ক্ষুধা আমাকে সারাক্ষণই তাড়িয়ে বেড়ায়। আমৃত্যু অভিনয়ে থাকতে চাই।
দেশে ফিরছেন কবে?
নভেম্বরে ফিরতে পারব বলে আশা করছি।
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে নতুন কী কাজ করছেন?
শিশুদের নিয়ে কাজ করতে আমার খুব ভালো লাগে। তাদের সঙ্গে সময় কাটাতেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। প্রতিনিয়ত ভাবি, তাদের জন্য নতুন কী করা যায়? বাংলাদেশ, নেপাল ও থাইল্যান্ডের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করেছি। ডিসিআইআইর সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমি শিশুদের লেখাপড়া, স্বাস্থ্য সচেতনতাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করছি।
- বিষয় :
- ববিতা
- জন্মদিন
- সাক্ষাৎকার