'লাইক-ফলোয়ারের জন্য তারা মরিয়া হয়ে উঠেছেন'

নাদিয়া আহমেদ
বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২০ | ১২:০০ | আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২০ | ০১:০৯
নাদিয়া আহমেদ। মডেল, নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী। বাংলাভিশনে প্রচার হচ্ছে তার অভিনীত ধারাবাহিক নাটক 'ফরেন ভিলেজ'। ফরিদুল হাসান পরিচালিত এ নাটক ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হলো তার সঙ্গে-
কেমন আছেন?
খুব একটা ভালো নেই। মনটা ভীষণ খারাপ। দু'দিন আগে আমাদের সবার প্রিয় কিংবদন্তি অভিনেতা আলী যাকেরকে হারিয়েছি। এত বড়মাপের একজন মানুষের বিদায় মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।
আলী যাকেরের সঙ্গে কখনও কাজ করার সুযোগ হয়েছিল কি?
আলী যাকেরের সঙ্গে কখনও কোনো কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়নি। তবে বেশ কিছু অনুষ্ঠানে আমার সঙ্গে তার দেখা হয়েছে। শ্রদ্ধাভাজন মানুষটির বিভিন্ন বিষয়ে বলা কথায় মুগ্ধ হয়েছি। তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেলে নিজেকে ধন্য মনে হতো, কিন্তু তা আর হলো না। মাথার ওপর যারা ছায়া হয়ে ছিলেন, তারা একে একে আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। আমরা ছায়াহীন হয়ে পড়ছি। তার অভিনীত 'গ্যালিলিও' নাটকটি দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। অভিনয়কে খুব এনজয় করতেন তিনি। তার কাছ থেকে অনেকেই শিখেছেন।
'ফরেন ভিলেজ' নাটকের গল্পটি কী নিয়ে?
প্রবাসী নারীর স্বামীদের ঘর-সংসার সামলানো নিয়ে নাটকের গল্প। উজান গ্রামের প্রায় সকল বউ-ঝি বিদেশে কর্মরত। সকাল হলেই ঘরের স্বামীরা সংসারের কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। স্ত্রীদের পাঠানো বিদেশি টাকায় এই গ্রামে কয়েকটা দালান উঠেছে। কোনো কোনো স্বামী আবার স্ত্রীর পাঠানো টাকার বড়াইয়ে বেশ দাম্ভিকতা দেখিয়ে চলেন গ্রামে। এতকিছুর পরও এই গ্রামে আছে আনন্দ, না পাওয়ার বেদনা আর আছে স্বপ্নপূরণের বাস্তবতা। এখানে আমি অভিনয় করেছি শ্রীদেবী নামের এক প্রতিবাদী নারীর চরিত্রে। গ্রামের সবাই যেদিকে যায়, আমি তার উল্টো পথে চলি। নারী-পুরুষ সবারই স্বাবলম্বী হওয়ার দরকার রয়েছে বলে মনে করি।
এ ছাড়া আর এখন আর কী কী কাজ করছেন?
আল হাজেনের পরিচালনায় ধারাবাহিক 'গোলমাল', তুষার খানের 'সংকটে সংকট', ইমরান হাওলাদারের 'ভিলেজ হট্টগোল', সাজিন আহমেদ বাবুর 'কর্পোরেট ভালোবাসা', সোহাগ কাজীর 'বৌ বিরোধ', বিপ্লব হায়দারের 'সুখ পাখি'সহ বেশ কয়েকটি ধারাবাহিকে অভিনয় করছি।
অনেকেই ধারাবাহিক নাটক এড়িয়ে চলেন। কিন্তু আপনি উল্টো হাঁটছেন। কারণ কী?
সবাই যদি ধারাবাহিক এড়িয়ে চলে তাহলে এ ধরনের নাটক করবে কে? এখন ইউটিউবের নাটকের প্রতি কারও কারও ঝোঁক বেড়েছে। অনেকেই চান রাতারাতি তারকা হতে। বেশি বেশি লাইক ফলোয়ারের জন্য তারা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এ ধরনের অভিনয় শিল্পীরাই ধারাবাহিক নাটক করতে চান না। ধারাবাহিকের কাজ করার ব্যাপারে মনে হয় পরিচালকের প্রথম পছন্দ আমি। লম্বা বিরতির পর কাজে ফিরেছি ধারাবাহিক দিয়েই। এ ধরনের নাটকে অভিনয় করলে চরিত্রের প্রতি যত্ন আসে। একটা চরিত্র নিয়ে দীর্ঘদিন চর্চা থাকে। যেসব গল্প ভালো লেগেছে এবং চরিত্রে ভিন্নতা আছে সেসব ধারাবাহিকেই কাজ করছি। অবশ্যই নির্মাতাদের প্রতি কৃতজ্ঞ যে তারা আমার অভিনয়ে আস্থা রাখছেন।
ওয়েব সিরিজেও কাজ শুরু করেছেন। নাটকের কাজের সঙ্গে ওয়েব সিরিজের কাজের পার্থক্য কী দেখলেন?
লকডাউনের আগেই তানিম পারভেজের নির্দেশনায় ওয়েব সিরিজ 'ঘোলা'য় অভিনয় করেছি। এটিই ওয়েব সিরিজে আমার প্রথম কাজ। নাটকের চেয়ে এখানে বাজেট ভালো। কোনো কোনো ওয়েব সিরিজের বাজেট সিনেমার কাছাকাছি। গল্পের জন্য যে লোকেশন দরকার নির্মাতারা সে ধরনের লোকেশনেই কাজ করছেন। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক কিছুই আমরা নাটকে দেখাতে পারি না কিন্তু ওয়েব সিরিজে তা সম্ভব।
সিনেমায় অভিনয় নিয়ে কিছু ভাবছেন?
গল্পনির্ভর ভিন্ন ঘরানার ছবিতে কাজ করার ইচ্ছা আছে। এরকম কোনো গল্পে চরিত্র পেলে যে কোনো সময়ই সিনেমায় কাজ করব।