জীবনের গল্প
পত্রমিতালি
-samakal-63047b3333d30.png)
শামীম খান যুবরাজ
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২২ | ১২:০০
প্রবহমান জীবন শত বাধা পেরিয়ে ছুটে চলে গন্তব্যে। রেখে যায় স্মৃতি, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা। সুহৃদদের লেখা অনুগল্প নিয়ে আয়োজন...
বর্ষা শেষ হয়েও যেন শেষ হচ্ছে না, থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরে পড়ছে। এমন আবহাওয়ায় ছাতা হাতে সজল বের হলো ডাকঘরের উদ্দেশে। আজও সে ডাক আসার আগেই পৌঁছবে ডাকঘরে। তারপর ডাক বয়ে নিয়ে ডাকপিয়ন এলে জানালার শিক ধরে দাঁড়িয়ে চটের ব্যাগ থেকে ঢেলে দেওয়া চিঠিগুলো দেখবে। ভাঁজ করার সময় প্রতিটি চিঠির দিকেই খেয়াল করবে সে- তার চিঠি এলো কিনা।
এ মাসের শুরুতে আরও দু'জন পত্রবন্ধু বেড়েছে তার। একজনকে অবশ্য নিজেই পাঠিয়েছিল বন্ধুত্বের আহ্বান জানিয়ে সুন্দর হাতের লেখা চিঠিটি। সময়মতো উত্তরও পেয়েছে; বাড়িয়েছে বন্ধুত্বের হাত। প্রত্যুত্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ফিরতি চিঠি পাওয়ার অপেক্ষায় আছে সজল। নতুন দুই বন্ধুসহ মোট আটজন পত্রবন্ধু তার। দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্ধু আছে সজলের। তার মধ্যে কয়েকজন পত্রপত্রিকায় লেখালেখিও করে। খুদে লেখক মশিউর রহমান মামুন থাকে খাগড়াছড়ি শহরে। পড়ালেখার পাশাপাশি লেখালেখিও করে। শিশু-কিশোর পত্রিকা টইটম্বুরের মাধ্যমে পরিচয় হয় সজলের সঙ্গে। তার চিঠিগুলোও থাকে সাহিত্যের মনোমুগ্ধকর ভাষায় লেখা।
সজলের বন্ধু তালিকায় আছে খুদে তারকাও। সেই তাসলিমা রহমান মিশু ঈদের শুভেচ্ছাস্বরূপ কার্ড পাঠায় সজলকে। মেয়েবন্ধুর তালিকায় আছে যশোরের প্রমা, কিশোরগঞ্জের এফরানা আইরিনসহ অনেকে। তারা তখন নিয়মিত লিখত অবশ্য এখন আর যোগাযোগ নেই। আরেক বন্ধুর কথা না বললেই নয়, সাদাত জামান চৌধুরী নির্ঝর। বেশ সুন্দর হাতের লেখা তার। থাকে ঢাকায়।
সজলের অপেক্ষার পালা শেষ হলো। ডাকপিয়ন এলো, কিন্তু হরতালের জন্য ডাকের গাড়ি আসেনি বলে খালি হাতে ফিরতে হলো তাকে। গোমড়ামুখে সজল বাড়ির দিকে রওনা হয়।
গল্পটি ১৯৯৬ সালের। এখন ২০২২। ধুলাবালি জমে থাকা পুরোনো একটি চিঠি খুঁজে পায় সজল। মনের ক্যানভাসে ভেসে ওঠে পুরোনো দিনের স্মৃতি। আহা, কত মজারই না দিন ছিল সেসব! চিঠির জন্য অপেক্ষা, চিঠি হাতে পেলে উল্লাসে ফেটে পড়া, নতুন চিঠি লিখতে বসা, সহপাঠীদের সঙ্গে পত্রমিতালি বন্ধুদের গল্প বলা। আজ আর চিঠি আসে না কারও। সবার হাতে অ্যান্ড্রয়েট মোবাইল ফোন, ই-মেইল, ফেসবুক আরও কত কী! পত্রমিতালি বন্ধুরা কোথায় আছে, কেমন আছে- জানে না সজল।
পুরোনো চিঠি হাতে নিয়ে আবেগী হয়ে ওঠে সজল। ভাবে- সেই দিন ফিরবে না আর। চিঠিও লেখা হবে না কাউকে। তবুও পত্রমিতালির সেইসব বন্ধুর স্মৃতি আজীবন গেঁথে থাকবে সজলের মনে।
সুহৃদ চট্টগ্রাম
বর্ষা শেষ হয়েও যেন শেষ হচ্ছে না, থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরে পড়ছে। এমন আবহাওয়ায় ছাতা হাতে সজল বের হলো ডাকঘরের উদ্দেশে। আজও সে ডাক আসার আগেই পৌঁছবে ডাকঘরে। তারপর ডাক বয়ে নিয়ে ডাকপিয়ন এলে জানালার শিক ধরে দাঁড়িয়ে চটের ব্যাগ থেকে ঢেলে দেওয়া চিঠিগুলো দেখবে। ভাঁজ করার সময় প্রতিটি চিঠির দিকেই খেয়াল করবে সে- তার চিঠি এলো কিনা।
এ মাসের শুরুতে আরও দু'জন পত্রবন্ধু বেড়েছে তার। একজনকে অবশ্য নিজেই পাঠিয়েছিল বন্ধুত্বের আহ্বান জানিয়ে সুন্দর হাতের লেখা চিঠিটি। সময়মতো উত্তরও পেয়েছে; বাড়িয়েছে বন্ধুত্বের হাত। প্রত্যুত্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ফিরতি চিঠি পাওয়ার অপেক্ষায় আছে সজল। নতুন দুই বন্ধুসহ মোট আটজন পত্রবন্ধু তার। দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্ধু আছে সজলের। তার মধ্যে কয়েকজন পত্রপত্রিকায় লেখালেখিও করে। খুদে লেখক মশিউর রহমান মামুন থাকে খাগড়াছড়ি শহরে। পড়ালেখার পাশাপাশি লেখালেখিও করে। শিশু-কিশোর পত্রিকা টইটম্বুরের মাধ্যমে পরিচয় হয় সজলের সঙ্গে। তার চিঠিগুলোও থাকে সাহিত্যের মনোমুগ্ধকর ভাষায় লেখা।
সজলের বন্ধু তালিকায় আছে খুদে তারকাও। সেই তাসলিমা রহমান মিশু ঈদের শুভেচ্ছাস্বরূপ কার্ড পাঠায় সজলকে। মেয়েবন্ধুর তালিকায় আছে যশোরের প্রমা, কিশোরগঞ্জের এফরানা আইরিনসহ অনেকে। তারা তখন নিয়মিত লিখত অবশ্য এখন আর যোগাযোগ নেই। আরেক বন্ধুর কথা না বললেই নয়, সাদাত জামান চৌধুরী নির্ঝর। বেশ সুন্দর হাতের লেখা তার। থাকে ঢাকায়।
সজলের অপেক্ষার পালা শেষ হলো। ডাকপিয়ন এলো, কিন্তু হরতালের জন্য ডাকের গাড়ি আসেনি বলে খালি হাতে ফিরতে হলো তাকে। গোমড়ামুখে সজল বাড়ির দিকে রওনা হয়।
গল্পটি ১৯৯৬ সালের। এখন ২০২২। ধুলাবালি জমে থাকা পুরোনো একটি চিঠি খুঁজে পায় সজল। মনের ক্যানভাসে ভেসে ওঠে পুরোনো দিনের স্মৃতি। আহা, কত মজারই না দিন ছিল সেসব! চিঠির জন্য অপেক্ষা, চিঠি হাতে পেলে উল্লাসে ফেটে পড়া, নতুন চিঠি লিখতে বসা, সহপাঠীদের সঙ্গে পত্রমিতালি বন্ধুদের গল্প বলা। আজ আর চিঠি আসে না কারও। সবার হাতে অ্যান্ড্রয়েট মোবাইল ফোন, ই-মেইল, ফেসবুক আরও কত কী! পত্রমিতালি বন্ধুরা কোথায় আছে, কেমন আছে- জানে না সজল।
পুরোনো চিঠি হাতে নিয়ে আবেগী হয়ে ওঠে সজল। ভাবে- সেই দিন ফিরবে না আর। চিঠিও লেখা হবে না কাউকে। তবুও পত্রমিতালির সেইসব বন্ধুর স্মৃতি আজীবন গেঁথে থাকবে সজলের মনে।
সুহৃদ চট্টগ্রাম
- বিষয় :
- জীবনের গল্প