ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

শরীরের উত্তাপ থেকে বিদ্যুৎ

শরীরের উত্তাপ  থেকে বিদ্যুৎ

গ্লাসগো শহরের ‘এসডব্লিউজিথ্রি’ ক্লাব পার্টির ড্যান্স ফ্লোরে অতিথিরা

হিল্লোল চৌধুরী

প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৩ | ০৪:০৭

জ্বালানির অপ্রতুলতা ও কার্বন নিঃসরণ সমসাময়িক বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বড় সংকটগুলোর একটি। এ বাস্তবতায় ব্যক্তিগত স্তরে জ্বালানি সাশ্রয়ের ভাবনাটা অনেকের জন্যই অস্বস্তির। তবে স্কটল্যান্ডের একটি ক্লাব গ্রাহকদের পরিবেশ সংরক্ষণে অবদান রাখার অভিনব সুযোগ করে দিচ্ছে। শরীরের তাপকে ক্লাবটি বিদ্যুতে রূপান্তরিত করছে। এতে ওই ক্লাবের জ্বালানির ব্যবহারও কমেছে।

গ্লাসগো শহরের ‘এসডব্লিউজিথ্রি’ ক্লাব পার্টির অতিথিদের শরীরের উত্তাপ সংরক্ষণ করে পুনর্ব্যবহার করে। ‘বডিহিট’ নামের এক প্রযুক্তির আওতায় ড্যান্স ফ্লোরকে ছোটোখাটো জ্বালানি উৎপাদন কেন্দ্রে রূপান্তরিত করেছে তারা। আর এতে প্রত্যেক মানুষের অবদান ১৫০ থেকে ৪৫০ ওয়াট।

২০২২ সাল থেকে ক্লাবটি সারাদিন ধরে সেই জ্বালানি ব্যবহার করে। জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানির মাত্রা শূন্যে নিয়ে আসাই ক্লাবটির লক্ষ্য। ক্লাবের অপারেশনস ম্যানেজার বব জাভাহেরি বলেন, ‘আমরা উত্তাপের ফলে সৃষ্টি হওয়া শক্তি ধারণ করে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। সেই শক্তি সংরক্ষণ করে সেটি দিয়ে সরাসরি বা পরে কোনো সময়ে হিটিং বা এয়ারকন্ডিশনিং করার চেষ্টা করছি। এভাবে নিজেদের এনার্জি ফুটপ্রিন্ট এবং বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে চাই। সেই সঙ্গে গ্যাসের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে চাই।’

সিলিংয়ে বসানো বিশেষ ফ্যান তিনটি ড্যান্স ফ্লোর থেকে উষ্ণ বাতাস শুষে নেয়। তারপর হিট পাম্প সেই শক্তি এক ধরনের তরলের মাধ্যমে উঠানে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে দুটি ১০০ মিটার গভীর গর্তে সেই তরল সংরক্ষণ করা হয় এবং পরে সেটির উত্তাপ ব্যবহার করা হয়।

টাউনরক এনার্জি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড টাউন্সএন্ড তিন বছর ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পুরো ব্যবস্থাটি গড়ে তুলেছেন। তিনি এই প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘এক মিনিট বা তারও কম সময়ে সিলিংয়ের বাক্স থেকে উত্তাপ সরাসরি গর্তে চলে যায়। সেই উত্তাপ প্রয়োজনমতো সময়ে ধারণ করা যায়। যেমন রাতে উত্তাপ ভরে দিনের বেলায় সেটা বের করতে পারি। অথবা গ্রীষ্মে আমরা অনেক পরিমাণ উত্তাপ সঞ্চয় করে শীতে তা ব্যবহার করতে পারি। অর্থাৎ শক্তি সংরক্ষণ করে প্রয়োজন অনুযায়ী সময়ে ব্যবহার করতে পারি।’

তবে প্রশ্ন থাকতে পারে– এই প্রক্রিয়া কতটা কার্বন ডাই-অক্সাইড কমাতে পারে এবং তা কতটা টেকসই হবে। এ প্রসঙ্গে ডেভিড টাউন্সএন্ড বলেন, ‘হিট পাম্প সত্যি খুব দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে। তা ছাড়া সামান্য পরিমাণ বৈদ্যুতিক শক্তি দিয়ে অনেক হিটিং বা কুলিং করা সম্ভব। অর্থাৎ হিটিং সিস্টেম থেকে গ্যাস বয়লার সরিয়ে আমরা বছরে ৭০ টন কার্বন-ডাইঅক্সাইড সাশ্রয় করছি। বিদ্যুৎ গ্রিড থেকে আসে। কিন্তু এই ক্লাব ১০০ শতাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুতের ট্যারিফ বেছে নিয়েছে। স্কটল্যান্ডে এমন বৃষ্টির দিনে সেই বিদ্যুৎ বায়ুশক্তির মাধ্যমে উৎপাদিত হয়।’ সূত্র: ডয়েচে ভেলে


আরও পড়ুন

×