প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত বিশ্ব

২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ফরাসি ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল মায়োত্তে ওঙ্গোজু শহরের উপকণ্ঠে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে শিশুরা। ছবি: এএফপি
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২০:২৮
ছোট্ট মায়োত্তে থেকে তেলসমৃদ্ধ সৌদি আরব, উন্নত ইউরোপিয়ান শহর থেকে আফ্রিকার বস্তিগুলো– ২০২৪ সালে কোনো কিছুই বাদ যায়নি জলবায়ুর বিপর্যয়কর প্রভাব থেকে। এ বছরটি ছিল ইতিহাসের অন্যতম উষ্ণতম। বায়ুমণ্ডলের রেকর্ড ভাঙা তাপমাত্রার সঙ্গে চরম আবহাওয়ার জন্য সমুদ্রগুলো যেন জ্বালানি হিসেবে কাজ করেছে।
ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন জানিয়েছে, গত ১২ মাসে তারা যেসব প্রাকৃতিক বিপর্যয় বিশ্লেষণ করেছে, তার সবগুলোই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হয়েছে– এমনটি খুঁজে পাওয়া গেছে। জলবায়ু বিজ্ঞানী ফেদ্রেকে ওট্টো বলেছেন, জীবাশ্ম জ্বালানি উষ্ণায়নের প্রভাব ২০২৪ সালে সবচেয়ে স্পষ্ট হয়েছে। আমরা একটি বিপজ্জনক যুগে বাস করছি।
চলতি বছরের জুনে হজের সময় অস্বাভাবিক তাপমাত্রায় মক্কায় প্রায় ১ হাজার ৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়। ওই সময় মক্কার তাপমাত্রা ৫১ দশমিক ৮ ডিগ্রিতে ওঠে। এ ছাড়া চরম তাপে বিপর্যস্ত হয়েছে থাইল্যান্ড, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র। মেক্সিকোর অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল, সেখানে গাছ থেকে বানর নিচে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ইউরোপের অনেক দেশেও পরিলক্ষিত হয়েছে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা।
অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে এ বছর বৃষ্টিপাতও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়েছে। গত এপ্রিলে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক দিনে দুই বছরের সমান বৃষ্টিপাত হয়। এতে দেশটির বিশাল অংশে বন্যার সৃষ্টি হয়। আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায় দেখা দেয় স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ খরা। এর ঠিক পরই প্রচণ্ড বৃষ্টিতে ইতিহাসের অন্যতম প্রাণঘাতী বন্যার কবলে পড়ে দেশটি। আফগানিস্তান, রাশিয়া, ব্রাজিল, চীন, নেপাল, পাকিস্তান, ভারতসহ অনেক দেশ বন্যার কবলে পড়ে।
এ ছাড়া এবার বিশ্বে অন্যবারের তুলনায় বেশি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। শুধু ফিলিপাইনে এ বছর আঘাত হানে ছয়টি বড় ঝড়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের একপ্রান্তে যখন প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে; তখন আরেক দিক ভয়াবহ খরা ও দাবানলে পুড়েছে। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাজন বনের বড় অংশ পুড়ে ছাই হয়েছে। এই জলবায়ু শুধু মানুষের জীবনযাত্রায় নয়, প্রভাব ফেলেছে অর্থনীতিতেও। এতে বিশ্বের অনেক দেশের মানুষ দরিদ্রতার মুখে পড়েছে। খবর এএফপির।
- বিষয় :
- জলবায়ু পরিবর্তন