আপন দর্পণ
‘দ্য প্রফেট’ প্রভাবিত করেছে

আরিফ মঈনুদ্দীন
আরিফ মঈনুদ্দীন
প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪ | ০০:১৪
যখন নবীন লেখক
সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় নিজের ভেতরে একজন লেখকের ভ্রূণ প্রত্যক্ষ করি। এটা-ওটা লিখি অন্ত্যমিল দিয়ে, ছন্দবদ্ধ কথামালা লেখার চেষ্টা করি। স্কুল পাঠাগারের বই পড়ে পড়ে ভাবি, এরা কত্ত বড় বড় লেখক! আমি যদি ওরকম হতে পারতাম! তারপর কলেজে পড়ার সময় দেখা গেল বড়সড় একটি খাতা ভরিয়ে ফেলেছি অন্ত্যমিল দিয়ে কবিতা লিখে। আমাদের বাংলার শিক্ষক শ্রদ্ধেয় নূর হোসেন স্যারকে এসব দেখালাম। তিনি খাতার পাশে লিখে দিলেন ‘তুমি একদিন কবি হবে, বিশ্ববিদ্যালয় গিয়ে বাংলা সাহিত্যে পড়ো।’ আমার এসব কর্মকাণ্ড দেখে অনেক সতীর্থ আমাকে দিয়ে অন্ত্যমিলের তথাকথিত এসব কবিতা লিখিয়ে নিয়ে তাদের প্রেমিকার মন জয় করার চেষ্টা করত। মজার বিষয় হলো, কবিতা না-হলেও আমার লেখায় ওদের কাজ হতো। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর বুঝলাম, কবিতা কাকে বলে? কবিতা কীভাবে লিখতে হয়? কবিতার ছন্দ প্রকরণ কী?
প্রিয় লেখক যারা এবং যে কারণে তারা প্রিয়
প্রিয় লেখকদের মধ্যে মসনবীখ্যাত জালালউদ্দিন রুমি, কাহলিল জিব্রান, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, সুকান্ত ভট্টাচার্য, জীবনানন্দ দাশ, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, নাজিম হিকমত, পাবলো নেরুদা, মাহমুদ দারবিশ, আলী আহমদ সাঈদ ইসবার (অ্যাডোনিস), রবার্ট ফ্রস্ট, কবি শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, সৈয়দ শামসুল হক, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুমায়ূন আহমেদ।
রুমির মসনবী শরীফ অধ্যয়ন করলে বোঝা যায়, এটি একটি পরিপূর্ণ বিশ্বাসের রজ্জু, যার পঙ্ক্তিতে পঙ্ক্তিতে ঝুলে আছে অসংখ্য জীবনধর্মী গল্প, জীবনঘনিষ্ঠ ঘটনা। জিব্রানের ‘দ্য প্রফেট’ কাব্যগ্রন্থে একজন সতর্ককারী সুসংবাদদাতা পয়গম্বরের উপদেশের প্রায় সব বিষয়ই জিব্রান নিজের ভাষায় তুলে ধরেছেন।
আড্ডা-তর্কের সঙ্গী যারা
আমরা যে সময়ে লেখার প্রথম পাঠ ধারণ করি, তখন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে চমৎকার একটি আড্ডা বসত। কবি আল মাহমুদ থেকে শুরু করে তখনকার নবীন-প্রবীণ অনেকেই আসতেন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ছাদে তুমুল আড্ডা চলত। রাতের খাবার গ্রহণের মাধ্যমে যার ইতি ঘটত। সম্ভবত ব্যাপারটা এরকম ছিল এক-একদিন এক-একজন খাবারটা স্পনসর করতেন। প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের সাথে নুহাশ পল্লী অথবা উনার ‘দখিন হাওয়া’র বাসভবনে আড্ডায় যেতাম।
ভাবনাদর্শকে প্রভাবিত করেছে যে গ্রন্থ, যে ব্যক্তি এবং যে পথে
আমার ভাবনাদর্শকে তুমুলভাবে প্রভাবিত করেছে যে গ্রন্থটি, তা হলো– কাহলিল জিব্রানের বিশ্বখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘দ্য প্রফেট’ এবং মওলানা জালালউদ্দিন মোহাম্মদ রুমির ‘মসনবী শরীফ’। এই দুই বিশ্বখ্যাত মনীষীর লেখায় আমার ব্যক্তিমানস গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে এবং যে পথে আমার আদর্শিক দিকনির্দেশনা তৈরি হয়েছে সেই পথের কথাই তাদের কাব্যগ্রন্থের পরতে পরতে পৃথিবীব্যাপী প্রতিনিয়ত ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।
মানুষের যে গুণ সবচেয়ে আকৃষ্ট করে
মানুষের সততাই আমাকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করে। সৎলোকের বড় আকাল চলছে সমাজে।
নিজের যে সীমাবদ্ধতা কষ্ট দেয়
পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে ওঠার পথে জাগতিক যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা উতরে যেতে না-পারা।
lপ্রিয় উদ্ধৃতি
ll‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য।’
- বিষয় :
- পাঠাগার