বাংলাদেশ আমার বিষয়

.
ফরিদা জামান
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫ | ০০:১৩
lশৈশবের প্রিয় মুহূর্ত
আমার বাবা সরকারি চাকরির সুবাদে চন্দ্রঘোনায় থাকতেন। শৈশবের কিছু মুহূর্ত আছে; যা ভুলতে পারি না। এখন বয়স বেড়ে গেছে কিন্তু সেসব মুহূর্ত চোখের সামনে ভাসে। আমাদের বাসাটি ছিল একদম পাহাড়ের চূড়ায়। খুব সুন্দর। তখন আমি চন্দ্রঘোনায় কেপিএম হাইস্কুলে প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করি। সেই সময়কার স্মৃতি খুব বেশি মনে পড়ে। পাহাড়ি এলাকায় আমরা স্কুলে যেতাম। খুব আনন্দ করেই যেতাম। সাম্পানওয়ালা দেখতাম। স্কুল থেকে নদীর ওপারে ঘুরতে যেতাম। আমাদের স্কুলটি ছিল বেশ আধুনিক। শিল্পচর্চা হতো। সেখান থেকেই আমার মনের ভেতরে প্রেরণা সৃষ্টি হয়েছে। পরে ছবি আঁকা বা অনেক কাজ করতে উৎসাহ পেয়েছি। পাঁচ দশক ধরে চারুকলার অঙ্গনে কাজ করে আসছি। আমি পাস করার সাথে সাথেই লেকচারার হিসেবে যোগদান করেছি। সেই থেকে এখনও একটি কথাই বলি, আমি কিন্তু ক্যারিয়ার সচেতন ছিলাম না। অনেকেই ক্যারিয়ার ছাড়া কিছু বোঝে না। আমি সাংসারিক একজন মানুষ। আমার স্বামী চিত্রশিল্পী শওকাতুজজামান মাটির মানুষ ছিলেন। তিনি মারা গেছেন দুই দশক হয়। আমার বাচ্চাদের কোলেপিঠে নিয়ে কাজ করেছি। সারারাত কাজ করতাম, সারাদিন সংসার ও শিক্ষকতায় ব্যস্ত থাকতাম। আমার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের সঁচিয়াখালী। মাঝে মাঝে গ্রামের বাড়ি যেতাম। নৌকায় করে একদম বাড়ির ভেতর পর্যন্ত যেত। তখন যা দেখেছি নিজের ভেতর তা আত্মস্থ করেছি। ‘জাল’ সিরিজের ছবি তারই প্রতিফল। বাংলাদেশকে আমি ধারণ করার চেষ্টা করি। এই ধারণ করাটা আমার ভেতর থেকে আসে। ইচ্ছে করলেও সরে যেতে পারি না। বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড পেতাম দেশের বাইরে থেকে। সেখান থেকে আমন্ত্রণ পেতাম। সরকারি ও বেসরকারি নিমন্ত্রণে দেশের বাইরে অনেকবার গিয়েছি। সেখানে বিভিন্ন দেশের কাজ দেখেছি। কিন্তু আমার নিজের দেশের সংস্কৃতি, সোঁদা মাটির গন্ধ ভুলে যেতে পারিনি।
lআড্ডা-তর্কে সঙ্গী যারা
আমি কাজপ্রিয় মানুষ। অনেকেই মনে করে আমি কম কথা বলি। সংসার জীবন বা সামাজিক জীবন বলেন আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ; নিজের মতো করে চলি। সততা নিয়ে চলি। ছবি বিক্রির জন্য কখনও ক্রেজি হয়ে যাই না।
lপ্রথম চিত্র প্রদর্শনী
১৯৭৮ সালে চারুকলায় প্রদর্শিত হয়। সেটা ছিল অন্যরকম অনুভূতি।
lপ্রিয় চিত্রশিল্পী, যে কারণে প্রিয়
দেশে বা দেশের বাইরে অনেকেই প্রিয় চিত্রশিল্পী। ফিদা, মার্ক সেগোল। মনোজের কথা মনে পড়ে। তাঁর কালার আমার খুব পছন্দ। একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে কে জি সুব্রামানিয়ান খুব প্রিয়। আধুনিক চিত্রকলার চোখ খুলে দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের মধ্যে জয়নুল আবেদিন, রফিকুন নবী, আনোয়ারুল হক, কাইয়ুম চৌধুরী, হাশেম খান, মনিরুল ইসলামের কাজ ভালো লাগে।
lযা আঁকছি
আমি চিত্রে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। বাংলাদেশ আমার বিষয়। সে হিসেবে এখন বিভিন্ন সিরিজ নিয়ে কাজ করছি।
lপ্রিয় উদ্ধৃতি
আমি সততা নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি। সততা ও পরিশ্রম যার ঊর্ধ্বে কিছু নেই। v
lগ্রন্থনা: ফরিদুল ইসলাম নির্জন
- বিষয় :
- গল্প