ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

সহিংসতায় প্রাণহানি

কবিতা-গানে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ

কবিতা-গানে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোর সমাবেশ। ছবি: সমকাল

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১৪:১১ | আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১৪:২৪

সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় প্রাণহানির সঙ্গে মিথ্যা মামলা ও নির্বিচারে গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো।

'প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের' ব্যানারে শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করেন তারা।

কর্মসূচির ব্যানারে লেখা ছিল সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার লাইন, ‘স্বজন হারানো শ্মশানে তোদের চিতা আমি তুলবোই’। 

বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে প্রতিবাদী গান গেয়ে আর কবিতা পড়ে প্রতিবাদ জানান শিল্পী ও সমাজকর্মীরা। স্লোগান দিয়ে তারা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। 

‘বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা, আজ জেগেছে সেই জনতা’, ‘এই শিকল পরা ছল’, ‘কারার ঐ লৌহ-কবাট’ গেয়ে গেয়ে প্রতিবাদ জানান সবাই। শিল্পী সায়ান গান ‘ভয় বাংলায়, ভয় বাংলায়/ এই বাংলা নাকি তাদের আর অন্য কারও নয়, জয় ক্ষমতার জয় ক্ষমতার’ গান গাওয়া হয়।

সমাবেশে দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান বলেন, 'কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল ন্যায়সঙ্গত। কিন্তু সরকার আন্দোলন দমনের জন্য শক্তি প্রয়োগ করে, যার ফলে অসংখ্য লোক মারা যায়।' 

‌'এত বিপুলসংখ্যক মৃত্যুর পরও সরকার দুঃখ প্রকাশ করেনি', বলেন তিনি।

সমাবেশে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘জাতিসংঘের অধীনে এসব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চাই। প্রতিটি গুলিবিদ্ধ দেহের বিপরীতে জবাব চাই।’ 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ, ছাত্রদল কাদের সৃষ্টি? এই নষ্ট রাজনীতি বন্ধ চাই। সব বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হোক। আর একটা গুলিও যেন না হয়।’

সমাবেশে বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা বলেন, ‘যেসব বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে, হত্যার শিকার হয়েছে কেবল স্থাপনা, মানুষের প্রাণহানি হয়নি।’ 

চলমান আন্দোলন ঘিরে যাদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে নেওয়া হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের তথ্য প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ যদি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা তৈরি না করা যায়, তাহলে আমরা কোনো দিন স্বৈরশাসকের হাত থেকে বের হতে পারব না।’

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ, সাংস্কৃতিক সংগঠন বিবর্তনের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান (লালটু), সাংবাদিক আশরাফ কায়সারসহ অনেকে।

সমাবেশ শেষে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যেতে চাইলে নিরাপত্তার কারণে তা বাতিল করা হয়। সমগীত, বটতলা, বিবর্তন, চারণ শিল্পীগোষ্ঠী, উত্তরসূরিসহ দেশের মোট ৩১টি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা সমাবেশে অংশ নেন। 

আরও পড়ুন

×