ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

রাজধানীতে বিক্ষোভ, অবরোধ

দক্ষিণ ঢাকা অচল, জনদুর্ভোগ

সদরঘাট, সায়েদাবাদ, মতিঝিল নয়াপল্টন, কাকরাইল, শাহবাগ মগবাজারসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক দুর্ভোগ

দক্ষিণ ঢাকা অচল, জনদুর্ভোগ

আন্দোলন-বিক্ষোভের নগরীতে পরিণত হয়েছে রাজধানী। প্রায়ই অচল হয়ে পড়ছে জনজীবন। বুধবারও একাধিক স্থানে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের কারণে অনেক এলাকায় যানবাহন দীর্ঘ সময় আটকে থাকে। যাত্রীরা নেমে হাঁটতে শুরু করেন। মৎস্য ভবন এলাকা থেকে তোলা সাজ্জাদ নয়ন

 সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫ | ০১:০৯ | আপডেট: ২২ মে ২০২৫ | ০৭:৪৭

বিভিন্ন দাবিতে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ রাজপথে নেমে বিক্ষোভ-অবরোধ করায় সীমা ছাড়িয়েছে রাজধানীবাসীর ভোগান্তি। এর মধ্যেই আবার নামে ভারী বৃষ্টি। ফলে গতকাল বুধবার রাজধানীর দক্ষিণাঞ্চল কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, কোনো দিকেই গাড়ি এগোচ্ছিল না। সড়কগুলোর সংযোগস্থলে রিকশা-বাস-প্রাইভেটকারে তৈরি হয় ভজঘট। অনেক মোটরসাইকেল চালককে যানজটে আটকে বৃষ্টিতে কাকভেজা হতে হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, সকাল ১০টার দিকে গুলিস্তান থেকে শুরু করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনের সামনে দিয়ে মৎস্য ভবন হয়ে কাকরাইল মসজিদ পর্যন্ত সড়ক ছিল বন্ধ। মেয়র পদে শপথের দাবিতে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা রাস্তা দখলে নেওয়ায় যান চলাচল করতে পারেনি। পাশাপাশি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনেও ইশরাকের কিছু সমর্থক বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।

এর পাশেই ছিল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন। এসব ঘটনায় সদরঘাট, বাবুবাজার, সায়েদাবাদ, মতিঝিল, নয়াপল্টন, কাকরাইল, শাহবাগ, শান্তিনগর, মগবাজারসহ আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে অনেকটা অসহায় দেখা গেছে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের। তারা বিভিন্ন সড়কে ডাইভারশন দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সগুলোও যানজট থেকে মুক্তি পায়নি। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক ছিল, উল্টো পথেও যাওয়ার উপায় ছিল না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে গভীর রাত হয়ে যায়। 
মোহাম্মদপুর থেকে রামপুরা পথের রমজান পরিবহনের হেলপার মাসুদ হোসেন বলেন, ‘কাকরাইলে পৌঁছালে সব যানবাহন মগবাজারের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। সেই কাকরাইল থেকে দুই ঘণ্টার বেশি সময় লাগে মগবাজার হয়ে বাংলামটর পার হতে।’

রাইড শেয়ার চালক মাহমুদ হাসান বলেন, ‘প্রতিদিন একটা না একটা ঝামেলা লেগেই আছে। আজ যানজটের মধ্যে বৃষ্টিতে ভিজেছি।’
পশ্চিম শেওড়াপাড়ার অটোরিকশাচালক গগন সরকার বলেন, ‘তিনশ টাকার এক ট্রিপ নিয়ে মতিঝিল যাব। ফার্মগেটেই যানজট শুরু। গাড়ি ঘুরিয়ে যাই তেজগাঁও সাতরাস্তার দিকে। ট্রাকস্ট্যান্ড পার হওয়ার পর দেখি, ওইদিকেও ভয়াবহ অবস্থা। এক পর্যায়ে যাত্রী দেড়শ টাকা ভাড়া দিয়ে নেমে যান। পরে মগবাজার ফ্লাইওভারের ওপরেই এক ঘণ্টা আটকে থাকি।’ 

প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকার কারণে অলিগলির মধ্যেও বাস ঢুকিয়ে দিতে দেখা গেছে। ফলে সেসব সড়কেও জট পাকে। বিকেল ৪টার দিকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে দেখা যায়, বাস-প্রাইভেটকার-ব্যাটারিচালিত রিকশা আর মোটরসাইকেলে স্থবির ওই এলাকা। কেউ কোনোদিকে যেতে পারছে না। অফিস শেষে ঘরমুখী মানুষের ভোগান্তির অন্ত ছিল না। অনেকে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হন। ফুটপাত ছিল মানুষে ঠাসা। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ট্রাফিক) রমনা বিভাগের উপকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল দুপুরে বলেন, ‘মৎস্য ভবন, কাকরাইল মসজিদ ও হেয়ার রোড বন্ধ থাকায় গাড়ি বিকল্প সড়কে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কাকরাইল থেকে আসা গাড়ি রাইট টার্ন করে মগবাজার ফ্লাইওভারে, মগবাজার থেকে আসা গাড়ি লেফট টার্নে কাকরাইল মোড়ের দিকে ঘুরিয়ে দিচ্ছি।’


 

আরও পড়ুন

×