ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

আবর্জনার চাপে মরছে চাম্বল ছড়া

আবর্জনার  চাপে মরছে চাম্বল ছড়া

আবদুল মতলব কালু, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪ | ০৮:১১

বাঁশখালী উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ চাম্বল ছড়া দখল করে গড়ে উঠেছে নানা স্থাপনা। বর্তমানে ছড়াটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ময়লা-আবর্জনা ফেলে ছড়া ভরাট করে নিয়মিত তৈরি করা করা হচ্ছে স্থাপনা।
চাম্বল ইউনিয়নের পূর্ব চাম্বল পাহাড়ের পানি এ ছড়া দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পশ্চিম চাম্বল বাংলাবাজার হয়ে জলকদর খালে গিয়ে পড়ে। আঁকাবাঁকা প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ ছড়ায় দখলদারিত্ব চালাচ্ছে ভূমিদস্যুরা। অবৈধ দোকান নির্মাণের কারণে ছড়ার নিচের অংশ ছোট হয়ে গেছে। ফলে বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহিত হতে না পেরে মানুষের ঘরবাড়ি ও আশপাশ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অনুপম পাল বলেন, ‘চাম্বল ছড়াটি দখল করে স্বাভাবিক পানি চলাচলের পথ বন্ধ রাখার বিষয়টি সরেজমিন দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সরেজমিন দেখা যায়, চাম্বল বাজারের প্রধান সড়কের ওপর নির্মিত সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম পাশে প্রবহমান চাম্বল ছড়ার বেশির ভাগ অংশ ভূমিদস্যুরা দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করেছে। বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় লোকজন অব্যাহতভাবে ময়লা ফেলায় ছড়াটি ভরাট হয়ে গেছে। ছড়ার পশ্চিমের মুখ দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
চাম্বল ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী বলেন, ‘পূর্ব চাম্বল ও আশপাশ এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত চাম্বল ছড়া। এটি দখল করে নির্মিত দোকানপাট, অবৈধ স্থাপনা কয়েক যুগ পার হলেও উচ্ছেদ করতে পারেনি প্রশাসন। বর্ষার সময় প্রবল বর্ষণে স্থানীয় বাজারের পূর্ব পাশের কয়েক হাজার একর মাছের ঘের, ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যায়। ছড়াটি দখলমুক্ত করে পানি চলাচলের স্বাভাবিক গতি ফেরাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।’
স্থানীয় আব্দুল আজিজ বলেন, ‘গোটা বাঁশখালীতে খাল ও ছড়া দখল নানা স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। অথচ প্রশাসন যেন দেখেও দেখে না। প্রভাবশালীদের ভয়ে স্থানীয়রাও সহজে মুখ খুলতে চান না। কারণ প্রশাসনের এক শ্রেণির কর্মকর্তার যোগসাজশে এসব দখলবাণিজ্য চলে বলে আলোচনা আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাঁশখালীর জলকদর খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দেশের সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এখনও উপজেলার প্রধান এই খালে অবৈধ স্থাপনা রয়ে গেছে। আসলে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা উৎসাহী নন। অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনের লোকজন প্রভাবশালীদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা পেয়ে থাকেন।’
বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল খালেক পাটোয়ারী বলেন, ‘সরকারি ছড়া দখল করে পানি চলাচলের পথ বন্ধের বিষয়টি খতিয়ে দেখে জনস্বার্থে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আরও পড়ুন

×