ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

আমিরাতে গাড়ির ইঞ্জিনের সক্ষমতা বৃদ্ধি

আমিরাতে প্রশংসিত ফটিকছড়ির সরোয়ার

আমিরাতে প্রশংসিত  ফটিকছড়ির সরোয়ার

যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে ইন্টারনেট ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে সরোয়ার অনায়াসে বলে দিতে পারেন সমস্যা ও সমাধানের পথ সমকাল

 কামরুল হাসান জনি, সংযুক্ত আরব আমিরাত

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪ | ২২:৩২

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিভিন্ন গাড়ির ইঞ্জিনে বিশেষ যন্ত্রাংশ সংযোজন করে সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তিগত ব্যবহারের কারণে প্রশংসায় ভাসছেন ফটিকছড়ি উপজেলার প্রবাসী সরোয়ার হোসেন। গত শুক্রবার রাতে আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত ‘অটো মোটো শো’তে তার হাতে ওঠে মধ্যপ্রাচ্যের বেস্ট কার পারফরম্যান্স টিউনার অ্যাওয়ার্ড। যেখানে অংশ নেয় সৌদি আরব ও আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যে নামিদামি বেশকিছু প্রতিষ্ঠান। এর আগেও কাজের মূল্যায়ন হিসেবে তিনি আমিরাতে পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার।
মূলত সরোয়ারের তৈরি ইঞ্জিন ব্যবহার হয় রেসিং কার ও ব্যয়বহুল গাড়িতে। এসব ইঞ্জিনের দাম ধরা ৩ লাখ ৭৫ হাজার দিরহাম; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এই ইঞ্জিন তৈরিতে সময় লাগে তিন থেকে ছয় মাস। বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে গিয়ে এই ইঞ্জিন ব্যবহৃত গাড়িতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে ইন্টারনেট ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে সরোয়ার অনায়াসে বলে দিতে পারেন সমস্যা ও সমাধানের পথ। প্রযুক্তির এমন ব্যবহারের কারণে বিলাসী ক্রেতাদের পছন্দ তার তৈরি এই গাড়ির ইঞ্জিন।
কর্মদক্ষতার উদাহরণ টেনে সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘৫০০ হর্স পাওয়ারের এল এস সেভেন নতুন ইঞ্জিন ক্রয় করে তাতে সংযোজন করা হয় বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। উত্তীর্ণ করা হয় দুই হাজার হর্স পাওয়ারে। এ ছাড়া সফটওয়্যার সক্রিয় করতে ব্যবহার করা হয় কম্পিউটারাইজড প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি ব্যবহারে খরচ পড়ে প্রায় ৭৫ হাজার দিরহাম; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৪ লাখ টাকা। এতে ইঞ্জিনের সক্ষমতা বেড়ে যায় অনেকগুণ। তার এই উদ্ভাবন ইতোমধ্যে দুবাই ছাড়িয়ে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে সাড়া ফেলেছে। গাড়ির এই ইঞ্জিন একনজর দেখতে মধ্যপ্রাচ্যের অনেকে ছুটে আসেন আমার প্রতিষ্ঠানে।’ 
১৯৯১ সালে সাধারণ কর্মী হিসেবে আমিরাতে

 প্রবাস–জীবন শুরু করেন সারোয়ার হোসেন। মাত্র ৩০০ দিরহামের বিনিময়ে কাজ করতেন একটি গাড়ি মেরামত প্রতিষ্ঠানে। ওই প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিয়ে ১৯৯৭ সালে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ ওমানের কাছাকাছি বেরুমি শহরে চালু করেন নিজের প্রতিষ্ঠান। ২০০১ সালে দুবাইয়ের আল কোচ ও বর্তমানে স্থানান্তরিত হয়ে দুবাইয়ের ইনভেস্টমেন্ট পার্কে এই প্রবাসী গড়ে তুলেছেন ফিউচার রেসিং নামে গাড়ি মেরামতের প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানে বছরে গড় খরচই কেবল প্রায় ১০ লাখ দিরহাম।
এই অর্জনের পেছনে রহস্য জানতে চাইলে সরোয়ার বলেন, ‘১৯৯৬-৯৭ সাল থেকে এই কাজ শুরু করি। তবে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। এই কাজে শ্রমের চেয়ে বেশি প্রয়োজন মেধা। কারণ একদিকে এটি ব্যয়বহুল অন্যদিকে এই কাজের ঝুঁকি বেশি। তাই বছরে দুই-তিন বার প্রশিক্ষণে যেতে হয়। ইতোমধ্যে ২০ বারের বেশি সময় অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপসহ কয়েকটি দেশে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। বলা যায়, যতটুকু আয় করছি তার বেশিরভাগই ব্যয় হচ্ছে প্রশিক্ষণের পেছনে।’

আরও পড়ুন

×