৪ কোটি টাকার ভবন যেন ভূতুড়ে বাড়ি

অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে রাউজান হাইওয়ে থানা ভবন সমকাল
রাউজান (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৪ | ২২:৪১
দুই যুগ ধরে ভাড়া বাসায় পরিচালিত হচ্ছে রাউজান হাইওয়ে থানার কার্যক্রম। নিজস্ব ভবনে কাজ করতে চায় হায়ওয়ে পুলিশ। কিন্তু ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সেই ভবনের কাজ অর্ধ অবস্থায় ফেলে ঠিকাদার লাপাত্তা। নির্মাণকাজ শেষ হয়নি গত ছয় বছরেও। ঝোপঝাড়ে ভূতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে নির্মাণাধীন ভবনটি। ২০১৮ সালে গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের বড়পুল এলাকায় রাউজান হাইওয়ে থানা ভবন নির্মাণকাজ শুরু করে। চারতলা বিশিষ্ট থানা ভবনটির তিনতলার ছাদ ঢালাই শেষ হয়েছে। দুই তলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলেও ঠিকাদার কাজ বুঝিয়ে না দেওয়ায় হাইওয়ে পুলিশের মুক্তি মেলেনি ভাড়া বাসা থেকে।
এদিকে, পুলিশের রাজস্ব বাজেটের প্রকল্পগুলোয় তহবিল নেই, তাই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রাপ্য পরিশোধ করতে না পারায় কাজ বন্ধ বলে জানিয়েছেন গণপূর্ত অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা। গত দুই যুগ আগে রাউজান হাইওয়ে পুলিশ প্রথমে পৌরসভার সাবেক গহিরা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে কার্যক্রম শুরু করে। কয়েক বছর পর পৌরসভার গহিরা বড়পুল এলাকায় কুণ্ডেশ্বরীর মালিকাধীন দ্বিতল ভাড়া ভবনে শুরু হয় রাউজান হাইওয়ে থানা কার্যক্রম। সেখানে ১৭ বছর ভাড়ায় থাকার পর সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য ভবনের একাংশ ভাঙা পড়ে। গত ৬ বছর ধরে গহিরা কলেজ মার্কেটের ভাড়া ভবনে চলছে হাইওয়ে থানা কার্যক্রম।
রাউজান হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক ও উপপরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম সমকালকে জানান, হাইওয়ে থানা পুলিশের ২২ জন সদস্য চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কের হাটহাজারী থেকে রাউজান রাবার বাগান, হাটহাজারীর ফতেয়াবাদ থেকে নাজিরহাট পর্যন্ত চট্টগ্রাম-নাজিরহাট সড়কে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমান থানা ভবনের বাসা ভাড়া ২৪ হাজার ৫০০ টাকা। পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিং না থাকা, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িগুলো রাখার জায়গা না থাকা, পানি ও আবাসন সংকটে সমস্যায় আছে পুলিশ।
২০১৮ সালে রাউজান হাইওয়ে থানা পুলিশের আবাসন, পয়োনিষ্কাশন ও বিশুদ্ধ পানির সংকট লাঘবে স্থায়ী ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর থানা ভবন
নির্মাণের জন্য চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের পাশে এক একর জমি অধিগ্রহণ করে। একই বছরের ১৪ ডিসেম্বর থানা ভবন নির্মাণে দরপত্র আহবান করা হয়। ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুইতলা থানা ভবন নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি পাইলিংয়ের কাজ শুরু করে। পরে তিন ও চার তলার কাজ শুরু করে আরও একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ভবন নির্মাণ সংশ্লিষ্ট দুই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫০-৬০ লাখ টাকা পরিশোধ না করায় তারা অসম্পন্ন অবস্থায় নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়।
এই প্রসঙ্গে গণপূর্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির রায়হান সমকালকে বলেন, ‘পুলিশের রাজস্ব বাজেটের প্রকল্পগুলোতে তহবিল নেই। এ কারণে ঠিকাদার ৩০-৪০ লাখ টাকা পাবেন। একতলা ও দুই তলায় একজন ঠিকাদার, তিন ও চার তলায় আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছিল। প্রথম ঠিকাদার দ্বারা ভেতরে কাজ শেষ হলেও বাইরে কিছু কাজ বাকি আছে। আমি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তহবিল আসলে আগামী মাসে কাজ শুরু করা হবে।’
- বিষয় :
- ভবন ধস