ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে মিলেছে ১০ কোটি

৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ  চেয়ে মিলেছে ১০ কোটি

নগরীর জলাবদ্ধতাবিষয়ক সেমিনারে বক্তব্য দেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন সমকাল

 সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৫ | ০০:০১

চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্প অনুমোদন ও পর্যাপ্ত বরাদ্দ পাচ্ছেন না বলে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের ১৫-২০ বছরের পুরোনো যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না। যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ৩০০ কোটি টাকা চাওয়া হলেও নালা, কালভার্ট পরিষ্কার করার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে আট থেকে ১০ কোটি টাকা।’ সম্প্রতি নগরের টাইগারপাসে সিটি করপোরেশন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। 
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘২০২২ সালে একটা প্রকল্প জমা দেওয়া হয় ৩৯৮ কোটি টাকার। সেটা যেভাবে আছে, ওভাবে এখনও পড়ে আছে। আমি বেশ কয়েকবার মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পর একটা জায়গায় এসেছে। ফাইনালি সেটা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আরও ১০০ কোটি টাকা ছেঁটে ২৯৮ কোটি টাকা করা হয়েছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেছি। তাকে বলেছি জলাবদ্ধতা মুক্ত করতে হলে এ প্রকল্পটি দিতে হবে। আমার যন্ত্রপাতি দরকার। যে যন্ত্রপাতি আছে সেগুলো ১৫-২০ বছরের পুরোনো। এ মেশিনগুলো নিয়ে যখনই কাজ করতে যাই ফেল করছে সেখানে। সেটা তিনি দেখছেন বলেছেন।’
মেয়র বলেন, ‘২০২২ সালে প্রকল্পটি দেওয়া হয়েছে। আজকে হলো ২০২৫ সাল। জলাবদ্ধতার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটি। খাল-নালা পরিষ্কারের মেশিনারিজ যদি না থাকে কীভাবে জলাবদ্ধতার এত বড় বিশাল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব? ১৫-১৬ লাখ টাকায় একেকটা মেশিন আমরা ভাড়া করছি।’
মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘জলাবদ্ধতায় বাজেট কী দিয়েছে? পাঁচ কোটি টাকা নালা পরিষ্কার করার জন্য। আড়াই কোটি টাকা একটা বক্স কালভার্ট পরিষ্কারের জন্য। ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা সংস্কার করার জন্য দিয়েছে। আমরা এগুলো চাইনি। আমরা চেয়েছি মেশিনারিজ কেনার জন্য ৩০০ কোটি টাকা।’
চট্টগ্রামের জন্য সরকারি বাজেট বরাদ্দ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ঢাকা শহরে যে বাজেট দেওয়া হচ্ছে, চট্টগ্রাম শহরের ৭০ লাখ মানুষের জন্য সে বাজেট দেওয়া হয় কি? ৭০-৮০ লাখ মানুষের বাজেট কি এটাই? সিটি করপোরেশন একটা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। বছরে শিক্ষা খাতে ৮০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। স্বাস্থ্যসেবা খাত আছে। দেশের আর কোনো সিটি করপোরেশনে এগুলো নেই। জনগণ থেকে কর নিয়ে কি আমি মানুষকে সেবা দিব? তাহলে কি মানুষকে করের বোঝা চাপাব? আপনাকে তো বাজেট দিতে হবে। সে বাজেট আপনি ঢাকাতে দেন, চট্টগ্রাম শহরে দিতে চান না কেন?’
তিনি বলেন, ‘বরাদ্দ হচ্ছে মাত্র ৫ কোটি। কিন্তু তাতে প্রকল্প ১৪৮টা। মানুষ তো ভাববে যেন ৫ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট। এতই হাস্যকর যে, সেটাও আমাদের নয়, জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। বলার পর আমাদের ৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে খালগুলো পরিষ্কার করার জন্য।’
বাংলাদশে জনসংযোগ সমতিি চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি অভীক ওসমানরে সভাপতত্বিে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ভুঁইয়া নজরুল। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্থপতি জেরিনা হোসাইন, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক নছরুল কদির, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার পাশা, সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইফতেখার উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, জনসংযোগ সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি এএসএম বজলুল হক । অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনসংযোগ সমিতি চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ সাকী।

আরও পড়ুন

×