কানাডায় তিন বাংলাদেশির মৃত্যু
এঞ্জেলার লাশ আসছে ২৪ ফেব্রুয়ারি, দেরি হবে আরিয়ান ও শাহরিয়ারের

গাড়িটি র্যাম্প ছেড়ে কংক্রিটের প্রাচীরের উপর দিয়ে খাদে পড়ে
ভ্রাম্যমাণ সংবাদদাতা, টরন্টো
প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৬:০১ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৯:০৩
কানাডার হাইওয়েতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে একজনের মরদেহ দেশে পাঠাতে যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। তবে বাকি দুজনের মরদেহ পাঠাতে আরও কিছুটা দেরি হবে বলে জানিয়েছেন টরন্টোয় বাংলাদেশ কনস্যুলার জেনারেল।
নিহত অপর দুই শিক্ষার্থী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় মারা গেলে অনেকগুলো আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে যেতে হয় এখানে। পুলিশ ও ময়না-তদন্তের রিপোর্টের পাশাপাশি ইন্সুরেন্সের ব্যাপার আছে। অন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে তা শেষ করতে হবে। এ জন্য নিহত আরিয়ান আলম দীপ্ত এবং শাহরিয়ার খানের পরিবারকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি এ কাজ শেষ হবে, তত দ্রুত তাদের মরদেহ দেশে পাঠানো যাবে। দূতাবাস সবসময় যোগাযোগ রাখছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে একমাত্র ছেলে নিবিড় কুমারের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন সংগীত শিল্পী কুমার বিশ্বজিতের স্ত্রী নাঈমা সুলতানা। ভয়ঙ্কর ওই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা একমাত্র শিক্ষার্থী নিবিড়। টরন্টোর সেন্ট মাইকেল হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের নিবিড়-পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) সামনে দাঁড়িয়ে কান্নাবিজড়িত কন্ঠে কথা বলছিলেন নাঈমা। এ সময় কুমার বিশ্বজিত বিমর্ষ হয়ে বসেছিলেন ওয়েটিং রুমে।
নাঈমা বলেন, 'দেশবাসীকে অনুরোধ, আপনারা দোয়া করুন নিবিড় যেন দ্রুত সুস্থ্য হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসে।' ছেলের চিকিৎসার সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি জানান, নিবিড় এখন বেশ স্থিতিশীল। ধীরে ধীরে শঙ্কা কাটছে।
ছেলের দুর্ঘটনার খবরে স্ত্রীকে নিয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি টরন্টো পৌঁছান কুমার বিশ্বজিত। তার আগের দিন আমেরিকা থেকে আসেন তাদের মেয়ে। চিকিৎসকদের মুখে একটু ভালো খবরের আশায় পুরো পরিবারের সময় কাটছে হাসপাতালটির আইসিইউয়ের সামনে।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি টরন্টোর হাইওয়েতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। আরও তিন শিক্ষার্থীকে নিয়ে কানাডার সেনেকা কলেজের শিক্ষার্থী নিবিড়ই বিএমডব্লিউ ব্রান্ডের গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। অন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার আগে গাড়িটিকে অতিরিক্ত গতিতে চলতে দেখা গেছে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে সড়ক বিভাজকে ধাক্কা লাগে, তারপর উল্টে যায়। একপর্যায়ে আগুন লেগে ঘটনাস্থলেই মারা যান দুই শিক্ষার্থী। হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয় আরও একজনের। এ ঘটনায় বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বিরাজ করছে শোকের ছায়া। অবশ্য কেউ কেউ বলছেন, বাংলাদেশে উচ্চগতিতে গাড়ি চালানোর যে অপসংস্কৃতি, তা কানাডাতেও বয়ে আনছেন অনেকে।
- বিষয় :
- কানাডা
- সড়ক দুর্ঘটনা
- বাংলাদেশি শিক্ষার্থী
- মৃত্যু