ঠোঁট ফাটছে?

ফাইল ছবি
ইসরাত জাহান
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪ | ২৩:২০
প্রকৃতিতে হালকা শীতের আমেজ। এ সময় ঠোঁট ফাটা একটি সাধারণ সমস্যা। ঠোঁট ফাটলে শুধু সৌন্দর্যহানি ঘটে না, বরং অনেক সময় ব্যথা করে, চুলকানি হয়। ত্বকের অন্যান্য অংশের তুলনায় ঠোঁটের চামড়া অনেক পাতলা ও সংবেদনশীল হওয়ায় এটি দ্রুত শুষ্ক হয়। শোভন’স মেকওভারের রূপবিশেষজ্ঞ শোভন সাহা বলেন, ‘ঠোঁট ফেটে গেলে তার যত্ন নিতে হবে। যদি ঠোঁট শুকিয়ে যায় তাহলে বারবার জিহ্বা দিয়ে ভেজানো যাবে না, এতে ঠোঁট আরও বেশি ফেটে যাবে। এই অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করতে হবে। মাঝেমধ্যে ঠোঁটে স্ক্রাব করতে হবে। ঘরোয়া পদ্ধতিতে আইসিং সুগার এবং লেবু মিক্স করে স্ক্রাবার বানিয়ে তা ঠোঁটে স্ক্রাব করলে মরা চামড়াগুলো উঠে যাবে। এরপর পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে নেবেন।’
তিনি জানান, এ সময় লিপস্টিকের ক্ষেত্রে ড্রাই বা ম্যাট লিপস্টিক এড়িয়ে চলবেন। ক্রিমবেজড লিপস্টিকের সঙ্গে লিপগ্লস ব্যবহার করতে পারেন। তবে লিপস্টিক ব্যবহারের আগে ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে ঠোঁট ভালো করে হাইড্রেট করে তারপর টিস্যু দিয়ে মুছে লিপস্টিক লাগাবেন। তেল দিয়ে লিপস্টিক ভালোভাবে রিমুভ করে তারপর আবার পেট্রোলিয়াম জেলি লাগাবেন। কিছু লিপ মাস্ক পাওয়া যায় তা লাগাতে পারেন। প্রফেশনাল ট্রিটমেন্ট নিতে চাইলে পার্লারে যাবেন।
ঠোঁটের যত্নে যা করবেন
পর্যাপ্ত পানি পান
ঠোঁট ফাটা অনেক সময় শরীরের ডিহাইড্রেশনের ফলেও হতে পারে। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা জরুরি। এটি শুধু ঠোঁটকেই নয়, সারা শরীরের ত্বককেও মসৃণ ও সজীব রাখে।
ভালো মানের লিপবাম ব্যবহার
ঠোঁটের শুষ্কতা রোধ করতে লিপবাম ব্যবহার করা জরুরি। লিপবামে থাকা
ময়েশ্চারাইজিং উপাদান ঠোঁটের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তবে কেনার সময় এমন লিপবাম বেছে নিন যেন মোম, মাখন বা তেল থাকে। শিয়া বাটার, কোকো বাটার বা প্রাকৃতিক তেলের লিপবাম
ঠোঁটের জন্য ভালো।
প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার করুন
ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধে নারকেল তেল, জলপাই তেল বা বাদামের তেল ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে সরাসরি লাগিয়ে ঘুমালে ভালো ফল পাওয়া যায়। তেলে থাকা প্রাকৃতিক ফ্যাট ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করে এবং ত্বককে নরম করে।
ঘরোয়া মধু এবং চিনির স্ক্রাব
মধু একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার, যা ঠোঁটকে নরম রাখতে সহায়ক। এক চামচ মধুর সঙ্গে অল্প পরিমাণ চিনি মিশিয়ে ঠোঁটের ওপর আলতো করে ম্যাসাজ করুন। এটি ঠোঁটের মৃত চামড়া সরিয়ে নতুন চামড়া তৈরি করতে সহায়তা করে। সপ্তাহে একবার এই স্ক্রাব ব্যবহার করলে ঠোঁট নরম ও উজ্জ্বল থাকবে।
বাতাসে বেশি সময় কাটানো এড়িয়ে চলুন
এ সময় বাইরের প্রচণ্ড শুষ্ক বাতাস ঠোঁটের আর্দ্রতা দ্রুত শুষে নেয়; ফলে ঠোঁট ফেটে যায়। তাই ঠোঁটের যত্ন নিতে শীতকালে বাইরে বের হলে স্কার্ফ বা মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। এটি ঠোঁটকে শুষ্ক হাওয়া থেকে রক্ষা করবে।
লবণাক্ত ও মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
লবণাক্ত বা অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার ঠোঁটের সংস্পর্শে এলে শুষ্কতা বৃদ্ধি পায়। এসব খাবার খাওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং খাওয়ার পর ঠোঁট ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
ময়েশ্চারাইজিং মাস্ক ব্যবহার করুন
ঠোঁটের যত্নে বিশেষ ময়েশ্চারাইজিং মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ঘরোয়া উপাদান যেমন দই, শসার রস, মধু ও নারকেল তেল মিশিয়ে ঠোঁটে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি ঠোঁটকে ময়েশ্চারাইজড রাখবে, শুষ্কতা কমাবে।
ভিটামিন সি ও ই সমৃদ্ধ খাবার
ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই ঠোঁটের সুস্থতার জন্য খুবই কার্যকর। তাজা ফলমূল, সবুজ শাকসবজি ও বাদাম এই ভিটামিনগুলোর উৎস। খাদ্যতালিকায় এসব খাবার যোগ করলে ঠোঁটের চামড়া ভালো থাকবে।
পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম
পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নিলে ঠোঁটের ত্বকও প্রভাবিত হয়। তাই সুস্থ ও নরম ঠোঁটের জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন।
ধূমপান এড়িয়ে চলুন
ধূমপান ঠোঁটের আর্দ্রতা নষ্ট করে এবং ঠোঁট শুষ্ক ও কালো করে তোলে। তাই ঠোঁটের যত্নে ধূমপান পরিত্যাগ করাই উত্তম। v
- বিষয় :
- ঠোঁট ফাটা