ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সুরক্ষায় আইন ও বাস্তবায়ন অন্তর্ভুক্তি জরুরি

রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সুরক্ষায় আইন ও বাস্তবায়ন অন্তর্ভুক্তি জরুরি

--

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৮:০০

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনের অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টজন। পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহন ও জনসমাগমের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রবেশগম্যতা এবং অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করারও দাবি জানিয়েছেন তারা।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সমকাল সভাকক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব দাবি জানান। ‘রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনের অন্তর্ভুক্তি’ শীর্ষক এ বৈঠকের আয়োজন করে যৌথভাবে সমকাল ও ‘সমতার বাংলাদেশ’।

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইনটি প্রতিবন্ধী আইন ২০০১ সালের এপ্রিলে প্রণয়ন করা হয়। ওটার ভিত্তি ধরেই ২০১৩ সালে আইনটি হয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও পিছিয়ে পড়া মানুষের অধিকার বাস্তবায়নে এ আইন করা হয়েছে। এ আইন বাস্তবায়ন করাই এখন আমাদের লক্ষ্য। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকারের বিষয়গুলো আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে আগেও উল্লেখ করা হয়েছে। এবার আরও সংযোজন ও বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করে নির্বাচনী ইশতেহারে করা হবে। দ্বাদশ নির্বাচনকে লক্ষ্য করে কাজ চলছে। সরকার বা রাষ্ট্রের একার পক্ষে কোনো কিছুই সম্ভব নয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার বাস্তবায়নে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।


সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ২০১৩ সালে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন করা হয়েছে। ২০১৯ সালে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এই পরিকল্পনার অনেক বিষয়ই ২০১৭ সালের মে মাসে বিএনপির ‘ভিশন ২০৩০’ নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে আরও বেশি অঙ্গীকার অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নির্বাচনী ইশতেহার করার আগে ‘সমতার বাংলাদেশ’সহ সবার সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তিনি আরও বলেন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ও দার্শনিক অমর্ত্য সেন তাঁর সর্বশেষ গ্রন্থ ‘হোম ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’-এ লিখেছেন বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বিভিন্ন বিষয়ে। এও বলেছেন বিভিন্ন খাতে জোরেশোরে উন্নয়নের অগ্রসরের কথাও। এর পেছনে বাংলাদেশের দুই নেত্রীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এবং এটাও বলেছেন যে রাজনৈতিক একটা কমিটমেন্ট থাকার কারণে এটা সম্ভব হচ্ছে।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নিশ্চয়ই প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকারের বিষয়গুলো এবার তুলে ধরবে। এখন যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় আছেন, আগামীতে রাষ্ট্রক্ষমতায় দ্রুত যেতে চান, আপনাদের প্রত্যাশাটা বেশি, তাদের অবশ্যই এ মানুষগুলোর কথা বিবেচনা করতে হবে। পুরো রাষ্ট্রক্ষমতা কাঠামোর যে ভূমিকা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষার কথা কিন্তু আপনাদের বলার কথা নয়, আমাদের বলার কথা। তাদের বাংলাদেশের জনগণ হিসেবে বিবেচনা করেন। তবে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পুরো সমাজকে আন্দোলিত করতে হবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কথা তুলে ধরতে হবে এবং বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে সম্পৃক্ত করতে হবে। দেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সুরক্ষায় আইন হয়েছে, বিধিমালা হয়েছে; কিন্তু বলেন তো বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে নির্ভর করতে হয় কাদের ওপর? আমলাদের ওপর। অতএব, তাদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। ওরিয়েন্টেশন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই, এটা একটা মোদ্দাকথা। আরেকটা বড় বিষয় হচ্ছে, এটি সংস্কৃতির ব্যাপার। এই যে আন্দোলিত করার কথা বলছিলাম, যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আছে, তারা প্রথমত কৈফিয়তের তালিকায় পড়ে গেছে। প্রতিটা দলের কর্মীদের মধ্যেও মানসিকতা তৈরি করতে হবে। তাহলেই অর্জন সম্ভব। দলীয় লোকদের মধ্যে প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার আদায়ের কাজ করার বিষয়টি ভিত্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

অমৃতা রেজিনা রোজারি সাইটসেভার্স একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা, যার মূল লক্ষ্য হলো এমন একটি বিশ্ব বিনির্মাণ করা, যেখানে চিকিৎসার অভাবে নিরাময়যোগ্য অন্ধত্বের কারণে কেউ দৃষ্টিহীন থাকবেন না। যেখানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীসহ সব প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সমাজে সমান অধিকার ভোগ করবেন। এই অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের রূপকল্পকে ধারণ করে ১৯৭৩ সাল থেকে সাইটসেভার্স বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, প্রতিবন্ধী ভাইবোনরা মানবিক মর্যাদায় সমান অধিকার ভোগ করবেন। শারীরিক অবস্থার কারণে কেউই অসাম্য ও বঞ্চনার শিকার হবেন না। এই উদ্দেশ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক চক্ষু স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণে সাইটসেভার্স বাংলাদেশ সরকারসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের সংস্থাগুলোর সঙ্গে অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বাংলাদেশে সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা, মাতৃ-মৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে আনা, নারীশিক্ষার প্রসারে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশ থেকে এগিয়ে রয়েছে। এ সবই সম্ভব হয়েছে গত ৫০ বছরে সব রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ নীতি প্রণয়ন এবং কার্যকরী আইন ও নিয়মকানুন বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে। রাজনৈতিক দলগুলোর আদর্শ ও উদ্দেশ্যের ভিন্নতা থাকলেও এসব সামাজিক উন্নয়নকাজে সবাই সমানভাবে অবদান রেখেছে। সাইটসেভার্স ২০১৯ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ইকুয়াল ওয়ার্ল্ড ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে; যার মূল উদ্দেশ্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও মর্যাদাকে সমুন্নত রাখা। আমরা এমন একটি বৈষম্যহীন বিশ্ব দেখতে চাই, যেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, বিশেষ করে নারী ও মেয়েরা এবং নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে বসবাসকারী ব্যক্তিরা যেন শিক্ষা, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়াগুলোয় সহজেই অংশ নিতে পারেন। জাতিসংঘ ২০২৩ সালের এসডিজি সম্মেলনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকারের দাবি জানিয়ে ‘প্রমিস ইন পেরিল’ নামে একটি বৈশ্বিক ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে এই দাবিকে সমর্থন করে ১২১টি দেশ থেকে ৪৮ হাজারের বেশি পিটিশন সাইনআপ করেছে। পিটিশন সাইন করার এ উদ্যোগ নিয়েছে সাইটসেভার্স। সাইটসেভার্স ইকুয়াল ওয়ার্ল্ড ক্যাম্পেইনের অধীনে বাংলাদেশে এই প্রথম সমতার বাংলাদেশ নামে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে। এ ক্যাম্পেইনের ভিত্তিই হলো ওই দুটি জাতীয় নির্দেশক দলিল; যার সফল বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এই ক্যাম্পেইন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক একটি সমাজ তৈরি করতে চায়, যেখানে সবাই সমানভাবে অংশ নিতে পারে।

অয়ন দেবনাথ বাংলাদেশ সরকার প্রায় সব মানবাধিকার চুক্তি স্বাক্ষরসহ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সনদ (ইউএনসিআরপিডি) অনুমোদন করেছে। নতুন আইনগুলোর প্রণয়ন ও সংশোধনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাগুলোকে দেশীকরণের জন্যও পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অন্তর্ভুক্তি এবং তাদের দাবি ও চাহিদাগুলোকে রাজনৈতিক এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করা যায়। এ সভার সুপারিশগুলোর মধ্যে প্রথমত হচ্ছে– আইনি প্রতিশ্রুতি। এ প্রতিশ্রুতির আওতায় নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইনকে সমুন্নত ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেওয়া উচিত। এই প্রতিশ্রুতি আরও নিশ্চিত করবে যে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষার আইনটি বিবেচনায় রেখে ভবিষ্যতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও কার্যক্রমসমূহ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। দ্বিতীয়ত রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩’ এবং ‘জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা’ সম্পর্কে আরও সুস্পষ্টভাবে ধারণা দিতে হবে। তৃতীয়ত বরাদ্দকৃত সম্পদ– তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী ইশতেহারের মাধ্যমে আইন বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক ও মানবসম্পদ বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। এর মধ্যে প্রতিবন্ধিতাবিষয়ক কার্যক্রম, পরিষেবা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অবকাঠামোগত উন্নতির জন্য বাজেট বরাদ্দের বিধান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। চতুর্থত, প্রবেশগম্যতা এবং অন্তর্ভুক্তি– শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহন এবং জনসমাগমের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবেশগম্যতা এবং অন্তর্ভুক্তির গুরুত্বের ওপর জোর দিতে হবে। পঞ্চমত, সচেতনতা এবং সংবেদনশীলতা– প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সামাজিক অন্ধবিশ্বাস এবং বৈষম্য দূরীকরণে সচেতনতামূলক প্রচারণা বাড়াতে হবে। ষষ্ঠত, প্রতিবন্ধিতা কমিটির কার্যকারিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামঞ্জস্যপূর্ণ নিয়মিত মিটিং নিশ্চিত করতে এনইসি এবং এনসিসির অবিলম্বে পুনরায় সক্রিয়করণ প্রয়োজন। প্রতিবন্ধিতাবিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা, ২০১৯ বাস্তবায়নের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় অভিভাবক এবং নোডাল এজেন্সি হিসেবে রয়েছে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি বাস্তবায়নের জন্য শক্তিশালী আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় প্রয়োজন। প্রতিবন্ধিতাবিষয়ক ফোকাল পয়েন্ট, তাদের নাম ও যোগাযোগের মাধ্যম প্রতিটি মন্ত্রণালয় দ্বারা নিয়োগ করা প্রয়োজন। আইনের সঙ্গে সম্পর্কিত নীতি ও কর্মসূচিগুলো সহযোগিতামূলকভাবে তৈরি এবং বাস্তবায়ন করতে প্রতিবন্ধী অ্যাডভোকেসি সংস্থা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠন (ওপিডি) এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের প্রচারণাগুলোকে অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতিতে পরিচালনা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করতে হবে, নিশ্চিত করতে হবে যে প্রচারসামগ্রী, সমাবেশ এবং অনুষ্ঠানগুলো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক।

সাইদুল হক আমরা যখন পড়াশোনা করতাম, তখন কিন্তু ব্রেইলে কোনো বই প্রস্তুত ছিল না। এখন কিন্তু সরকার ১০০% বই দিয়েছে। কেজি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা ১০০% ব্রেইল বই পাচ্ছে। তবে পরবর্তী ধাপে শিক্ষার্থীরা কিন্তু পিছিয়ে পড়ছে। তাদের জন্যও ব্রেইল বই প্রকাশ করতে হবে। এখন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বা শারীরিক প্রতিবন্ধী অনেক শিক্ষার্থী লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস দিচ্ছে। তাদের অনেকেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কাজ করছে। চাকরি করছে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এখন আইনটি বাস্তবায়ন হওয়া দরকার। আইন বাস্তবায়নে পৃথক মন্ত্রণালয় নেই, অধিদপ্তর নেই। আমাদের যাওয়ার জায়গা নেই। তাই এই আইন বাস্তবায়নের জন্য একটা কর্তৃপক্ষ দরকার ও কমিশন গঠন করা যেতে পারে। পাশাপাশি বাজেট দরকার।


এ এইচ এম নোমান খান দেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা নিয়ে সঠিক পরিসংখ্যান বের করা জরুরি। কারণ, পরিসংখ্যান অনুযায়ী পরিকল্পনা করা হয়। প্রতিবন্ধী মানুষের এ বিষয়গুলো আমাদের পরিকল্পনা ক্ষেত্রে অনেক বাধা সৃষ্টি করে। বিচ্ছিন্নভাবে অনেক সংখ্যা কাজ করলেও এইসব তথ্যের কোনো মিল নাই। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, শিক্ষায় কিন্তু প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। কর্মক্ষেত্রে ২০০৫ সাল থেকে প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ৫ থেকে ৩২ পার্সেন্টে। আরেকটা বিষয়ে কাজ করা ভীষণভাবে জরুরি। জন্মের পরে যখন পরিবারের মানুষ জানতে পারে শিশুটি প্রতিবন্ধী, তখন থেকে শুধু একজন মানুষ শেষ পর্যন্ত ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তির যত্ন নেন। তিনি হলেন মা। আমরা কিন্তু এই মায়েদের কথা ভাবছি না। এই মায়েদের জন্যও কাজ করতে হবে। প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ প্রতিবন্ধী মানুষের পেছনে এ রকম প্রায় দুই কোটি মানুষ রয়েছেন, যারা প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কেয়ার গিভার হিসেবে আছেন। তাদের উন্নয়নেও কাজ করতে হবে।

ভাস্কর ভট্টাচার্য বাংলাদেশে বড় দুটো রাজনৈতিক দল রয়েছে, এদের মধ্যে বিএনপি– আগে আপনারা রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ধারণা দিয়েছিলেন, আমি আসলে জানি না বিএনপি সেই ধারণাপত্রে, অর্থাৎ নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কিছু রেখেছে কিনা, আমি কিছু খুঁজে পাইনি। বিএনপির প্রতি অনুরোধ, রাষ্ট্র মেরামতের যে ধারণা দিতে যাচ্ছে, প্রতিবন্ধী নাগরিকদের জন্য কী করবে, সেটি একটু সুনির্দিষ্ট করবে। আরেকটি বড় দল, আওয়ামী লীগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি– তারা কিন্তু নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সুরক্ষায় রূপরেখা তুলে ধরেছে, যা ভিশন ২০৪১। তারা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। তাদের আগামী নির্বাচনী ইশতেহারে একটা শব্দ যুক্ত করে দিতে হবে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ এবং নিউরোডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট– এ দুটো আইনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন তারা করবে। এ দুটো আইনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি যদি তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে থাকে, তাহলে আমরা খুশি হব। এবার বলতে চাই ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রসঙ্গে। এটা কিন্তু বাস্তবতা। কিন্তু আমি আমার রেলের টিকিট নিজে কাটতে পারি না। আমি আমার পাসপোর্টের আবেদনটা নিজে করতে পারি না। আমি ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবাটা নিজে ব্যবহার করতে পারি না। যেহেতু আমরা ডিজিটালাইজেশনের জায়গায় এসেছি এবং যাচ্ছি, সেখানে তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরি করার কথা বলবে। বর্তমান সরকার একটা চমৎকার কাজ করেছে। প্রথম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ করে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল এবং মাল্টিমিডিয়া ডকুমেন্ট ঠিক করেছে। এটি কিন্তু কম কথা নয়, অনেক বড় অর্জন। কিন্তু একাদশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আমরা বই পাচ্ছি না। তাই সকল দলের প্রতি অনুরোধ করছি ইউনিভার্সেল ডিজাইন করুন, যেন আমি পড়তে পারি। আমার বন্ধুরা পড়তে পারবে। যারা অটিজম আছে, সে পড়তে পারবে। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মানুষরাও পড়তে পারবে। নিরক্ষর মানুষ যিনি, কখনও স্কুলে যাননি, তিনিও পড়তে পারবেন।

মর্জিনা আহমেদ বর্তমানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই শিক্ষা, খেলাধুলা ও সৃজনশীল কাজে এগিয়ে গেছে। কিন্তু তাদের প্রতিভা প্রকাশ করার জন্য কোনো প্ল্যাটফর্ম দেশে নেই। যদি প্রতিবন্ধী ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ বাস্তবায়ন হয়, তাহলে আমাদের মানুষের কাছে দয়ার পাত্র হয়ে থাকতে হবে না। আমরা রাষ্ট্র থেকে আমাদের অধিকার আদায় করতে পারব। এ সভায় যারা উপস্থিত আছেন, তাদের চেয়েও দক্ষতাসম্পন্ন প্রতিবন্ধী মানুষ বাইরে আছেন। তাদের এ জায়গায় আসার সুযোগ করে দিতে হবে।


অসীম ডিও তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা কীভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করবে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অংশগ্রহণের বিষয়টি নির্বাচনী ইশতেহারে রাখতে হবে। স্বাস্থ্যসেবায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রধান্য দিতে হবে। অনেক সময় স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়, সেগুলো প্রতিহত করে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমানে দুর্যোগ ব্যবস্থাকেও ম্যানিফেস্টোতে আনতে হবে। দেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য আইন আছে, কিন্তু বাস্তবায়নে পিছিয়ে আছি। সে ক্ষেত্রে আইন বাস্তবায়নের জন্য নতুন কাঠামো তৈরি করতে হবে।


মো. শহিদুল ইসলাম আগামী নির্বাচনে কে ক্ষমতায় আসবে, সে বিষয়টি আমাদের আলোচনার বিষয় না। যারা আসবে তাদের কাছে দাবি হচ্ছে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় করতে হবে, সংসদে সংরক্ষিত আসন রাখতে হবে, জাতীয় বাজেটে প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, চাকরি ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কোটা দিতে হবে, প্রতিবন্ধী ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ বাস্তবায়ন করতে হবে, ভাতা ৮৫০ থেকে বাড়িয়ে সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার করতে হবে, রাজনৈতিক দলে অংশগ্রহণ করতে দিতে হবে, জাতীয় পর্যায়ে সকল পলিসিতে প্রতিবন্ধীদের কথা বলতে হবে, প্রতিবন্ধী নীতি তৈরিতে প্রতিবন্ধীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে, শিক্ষা ও পরিবহনে ৫ শতাংশ হাফ পাস বাদেও সংরক্ষিত আসন রাখতে হবে।


গোলাম ফারুক হামিম আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, তারা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার আদায়ের জন্য আইন প্রণয়ন করে আশ্বস্ত করেছে। সমস্যা হলো অধিকারের জন্য আইন করা হলেও সেটা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। উপজেলা, জেলা থেকে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিষয়ে কথা হলেও কীভাবে তারা রেজিস্ট্রেশন করবে, ভাতা পাবে এসব নিয়ে আলোচনা হয় না। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রবেশাধিকার, চলাফেরা, ভোটকেন্দ্রে যাওয়া এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট প্রদানের যে অধিকার সে বিষয়ে আলোচনা হয় না। রাজনৈতিক দলের ইশতেহার প্রতিবন্ধিতাবান্ধব সংস্কৃতি বিষয়টি আনতে হবে। তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিবন্ধী সংগঠনগুলোকে টিকে থাকার জন্য তাদের অধিকার রক্ষার জন্য আর্থিক সহায়তা দিতে হবে।


মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা পরিচয় সংকটে ভুগছে। বাংলাদেশ সরকার গত ৩৩ বছরে একটা কাজ করেছে, তাহলো প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে একটা পরিচয়ে নিয়ে এসেছে। ১৯৯৫ সালে প্রতিবন্ধী কল্যাণ নীতিমালা, ২০০১ সালে কল্যাণ আইন এবং সেটার ফলে ২০০৬ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সুরক্ষা সনদ। ২০১৩ ও ২০১৯ সালের প্রতিটি আইনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কথা উল্লেখ আছে। দেশের সকল উন্নয়ন ও রাজনৈতিক কাজে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি কথাটা উল্লেখ থাকতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার চাই। আমরা যেন ভোটে দাঁড়াতে পারি, রাজনীতি করতে পারি, যে কোনো দলকে সমর্থন করতে পারি।


নাসরিন জাহান আমাদের চাওয়া সবার এক। আইন আমাদের জন্য করা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে সেটির প্রয়োগ নাই। নারীনীতি ২০১১-এ সংসদে দু’জন প্রতিবন্ধী নারী আসনের কথা বলা আছে; কিন্তু এ বিষয়ে যখন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলা হয় তখন তারা বলেন, আপনাদের রাজনীতি করে আসতে হবে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কোটা আছে; কিন্তু এটি রোধ করা হয়েছে, এটা পুনর্বহালের কথা বলা হয়েছে, সরকার তাতে সমর্থন দেওয়ার পরও আদৌ কোনো কাজ হয়নি। যার ফলে শিক্ষিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সরকারি চাকরিতে যেতে পারছে না। আমরা এমন আইন করি, আবার সেই আইনের খর্বও করি।

ড. নাফিসুর রহমান বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধী মানুষের কল্যাণের জায়গাতেই আটকে আছে। তারা এখনও অধিকারের জায়গায় যেতে পারেনি। দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নীতিমালা করা হয়েছে, সেটিকে পরিমার্জিত করা হয়েছে; কিন্তু বাস্তবায়ন করা হয়নি। সামাজিক সুরক্ষা খাতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বাজেট দেখি, আর কোনো জায়গায় বাজেট দেখি না। ৩৫টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হওয়া সত্ত্বেও এখনও কিছুই হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছে। অথচ এখনও প্রবেশগম্যতা তৈরি হয়নি। জার্মানিসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র দেখেন, সকল ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী মানুষ চলাফেরা করতে পারে। সেই সব দেশে বাসে উঠবেন, ট্রেনে উঠবেন প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য প্রায়োরিটি দেওয়া হয়েছে। পার্কিংয়ের জন্য জায়গা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ভবনে প্রবেশগম্যতা আছে। কিন্তু বাংলাদেশে কয়টা ভবন আছে, যেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা প্রবেশ করতে পারেন? একটা বাসও নাই, যেখানে হুইলচেয়ারে করে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উঠতে পারেন। মেট্রোরেল প্রতিবন্ধীবান্ধব, তবে সেখানে যাবে কীভাবে? তাই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনুরোধ, ২০৪১ সালের মধ্যে প্রবেশগম্য বাংলাদেশ চাই।

আশরাফুল নাহার মিষ্টি স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও আমি একটা বাসে উঠতে পারিনি। এটা আমার জন্য অনেক বেদনার। নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে বাংলাদেশ উন্নীত হলেও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা আরও দারিদ্র্যের নিচে নেমেছে। কারণ প্রতিবন্ধী মানুষের চাকরির সুযোগ কম। যুবকদের স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য অনেক সুযোগ আছে, কিন্তু সেইসব প্রতিষ্ঠানে আমি যেতে পারি না। আবার যেসব শিক্ষক আছেন, তারা কীভাবে প্রতিবন্ধী যুবকদের প্রশিক্ষণ দেবেন, সে বিষয়ে তাঁর প্রশিক্ষণ আছে কী? আমরা বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলছি, অথচ আমার যাতায়াতের পথ, বসবাসের পথ, জীবনধারণের পথ, মুক্তচিন্তার পথ উন্মুক্ত করতে পারেনি কেউ। বর্তমান সরকার কোটা বাতিল করেছে। আইনের সংশোধন করে কোটা পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছি। সরকার বলছে সামাজিক নিরাপত্তার কথা। এ খাতে প্রতিবন্ধী মানুষকে ভাতা হিসেবে ৮৫০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ একজন প্রতিবন্ধী মানুষ ঘর থেকে বের হলে যাতায়াত বাবদই এ টাকা খরচ হয়ে যায়। ভাতার ক্ষেত্রে সকল প্রতিবন্ধী মানুষকে নয়, যারা শিক্ষিত, চাকরি করছে তাদের ভাতা দিতে হবে না। অন্যদের দিক কিন্তু এ ভাতার পরিমাণ বাড়াতে হবে।

নাসিমা আক্তার আমার বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নে। আমি ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মহিলা সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত। আমি যখন নির্বাচন করতে গেছি তখন বলা হয়, আপনি নিজে একজন প্রতিবন্ধী নারী, আপনি কেন এ জায়গায় আসতে চান? নানা কথা শুনতে হয়েছে। আমার মনোনয়ন উঠিয়ে দেওয়ার জন্য অনেকে চাপ দেন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও যে সমাজের সেবা করতে পারে, আমি তার দৃষ্টান্ত প্রমাণ। আমি চাই, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য রাজনৈতিক আসন সংরক্ষণের পাশাপাশি নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিবন্ধী ও নারী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কথা উল্লেখ করতে হবে। ভোটকেন্দ্রগুলো প্রতিবন্ধীবান্ধব না। আবার ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে গোপনীয়তার জায়গা থাকে না। ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জন্যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কোনো যানবাহনের ব্যবস্থা নেই।

লোটন একরাম প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইনটি বৈশ্বিক মহামারি করোনাসহ নানা সীমাবদ্ধতার কারণে বাস্তবায়ন হয়নি। যদিও এ আইনের বাস্তবায়নে ২০১৯ সালে একটি কর্মপরিকল্পনা করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সুরক্ষার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। কারণ সাংবিধানিক অধিকার বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সাংবাদিকতার পাশাপাশি সমকাল এ ধরনের জাতীয় সমস্যা নিয়ে সভা-সেমিনার করে থাকে। আজকের এ বৈঠকও সেটিরই উদ্যোগ।



সুপারিশ

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে আইন বাস্তবায়নের জন্য আলাদা কমিশন গঠন করতে হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত আসন রাখতে হবে বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে প্রতিবন্ধী সন্তানদের মায়েদের বিষয়ে ভাবতে হবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংখ্যা নির্ণয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে গণপরিবহনে চলাচল উপযোগী করে তুলতে হবে ভোটকেন্দ্র এবং নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করতে হবে। ডিজিটাল সেবায় সবার প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করতে হবে


আলোচক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামী লীগ সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যুগ্ম মহাসচিব, বিএনপি রুহিন হোসেন প্রিন্স সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সাইদুল হক নির্বাহী পরিচালক, ব্লাইন্ড এডুকেশন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন এ এইচ এম নোমান খান নির্বাহী পরিচালক, সেন্টার ফর ডিজঅ্যাবিলিটি ইন ডেভেলপমেন্ট (সিডিডি) ভাস্কর ভট্টাচার্য কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গ্লােবাল ইনক্লুসিভ আইসিটি মর্জিনা আহমেদ নির্বাহী পরিচালক ডিজঅ্যাবল্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটি অসীম ডিও পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি স্পেশালিস্ট হিউম্যানিটি অ্যান্ড ইনক্লুসন মো. শহিদুল ইসলাম পরিচালক, টাঙ্গাইল ডিজঅ্যাবল্ড পিপলস অর্গানাইজেশন টু ডেভেলপমেন্ট গোলাম ফারুক হামিম টিম লিড, প্রোগ্রাম এডিডি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ মো. জাহাঙ্গীর আলম সাধারণ সম্পাদক ভিজ্যুয়ালি এম্পায়ার্ড পিপলস সোসাইটি (ভিপস্‌) নাসরিন জাহান নির্বাহী পরিচালক, ডিজঅ্যাবল্ড চাইল্ড ফাউন্ডেশন ড. নাফিসুর রহমান ডিজঅ্যাবিলিটি এক্সপার্ট আশরাফুন নাহার মিষ্টি নির্বাহী পরিচালক, উইমেন উইথ ডিজঅ্যাবিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (ডব্লিউডিডিএফ) নাসিমা আক্তার চেয়ার, স্টিয়ারিং কমিটি, সমতার বাংলাদেশ স্বাগত বক্তব্য অমৃতা রেজিনা রোজারিও কান্ট্রি ডিরেক্টর, সাইটসেভার্স বাংলাদেশ মূল প্রবন্ধ অয়ন দেবনাথ ক্যাম্পেইন অ্যাডভাইজার, সাইটসেভার্স সঞ্চালনা লোটন একরাম সহযোগী সম্পাদক, সমকাল অনুলিখন সাজিদা ইসলাম পারুল নিজস্ব প্রতিবেদক, সমকাল কাউসার আহমেদ শিক্ষানবিশ প্রতিবেদক, সমকাল ইভেন্ট সমন্বয় হাসান জাকির হেড অব ইভেন্টস, সমকাল অধরা দাশ ক্যাম্পেইন অফিসার, সাইটসেভার্স

আরও পড়ুন

×