ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

ক্রুস: ফুটবলারের চেয়ে বেশি কিছু

ক্রুস: ফুটবলারের চেয়ে বেশি কিছু

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৩ | ০৭:৩৮

জার্মান ফুটবলের ইতিহাসে টনি ক্রুসের নামটা থাকবে স্বর্ণাক্ষরে লেখা। শুধু জার্মানি নয়, রিয়াল মাদ্রিদও তাঁকে ভুলতে পারবে না কখনও। দুই অঙ্গনের মাঝমাঠের জেনারেল এই তারকা। যার মুনশিয়ানা গত ক’বছরে ফুটবলবিশ্ব ভালোভাবেই দেখেছে। দূরপাল্লার শট, ফ্রি কিকে ম্যাজিক আর মাঝমাঠের ত্রাতা বনে যাওয়া ক্রুস শুধু এটুকুতে আটকে নেই। তাঁকে যে ভাবতে হয় আরও অনেক কিছু নিয়ে। পেশাদার ফুটবলের বাইরে দুই সন্তানের মতোই যে দুটি স্বপ্ন লালন করেন তাঁর নাম টনি ক্রুস একাডেমি ও টনি ক্রুস ফাউন্ডেশন।

নিজের পকেটের অর্থ ফাউন্ডেশনে দিয়ে থাকেন তিনি। এর বাইরে ফুটবল নিয়ে কাজ করে তাঁর একাডেমি। জার্মানির বাভারিয়ায় ২০১৫ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় একাডেমি, যেখানে শিশু-কিশোরদের ফুটবলটা হাতে-কলমে শেখানো হয়। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় একঝাঁক কোচ এবং ক্রুসের তৈরি করা পরিকল্পনায় দিনকে দিন সুনাম কুড়িয়েছে একাডেমিটি। প্রতি মৌসুমে একাধিক ব্যাচে শেখানো হয় ফুটবল, যেখানে প্রতি ব্যাচে ৫০০ থেকে হাজার শিশু-কিশোর ফুটবল কোচিং করেন। সুযোগ পেলে ক্রুস নিজেও ছুটে যান সেই একাডেমিতে। যাদের মধ্যে দারুণ প্রতিভা রয়েছে, তাদের আবার আলাদা করে স্পেশাল টেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। এ জন্য যে পরিমাণ ফি নেওয়া হয়, সেটা আবার ফাউন্ডেশনে দিয়ে দেন ক্রুস। অর্থাৎ একাডেমি থেকে অর্জিত আয় যায় ফাউন্ডেশনে। যেখানে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, শারীরিকভাবে অসুস্থ শিশু- কিশোরদের মানসিক বিকাশ ও নানা দিকের জন্য ব্যয় করা হয়।

অনেকে হয়তো তাঁকে স্রেফ একজন ফুটবলার হিসেবে চেনেন। কিন্তু তাঁর এমন দারুণ কাজ নিঃসন্দেহে বাহবা পাওয়ার মতো। ক্যারিয়ারটা হয়তো আর বেশি লম্বা হবে না। দু-তিন বছরের মধ্যেই সব ধরনের ফুটবলে ইতি টানতে পারেন তিনি। কারণ, দেখতে দেখতে বয়সও ৩৩ এর ঘরটা ছুঁয়েছে। ফুটবল ছাড়ার পর হয়তো নিজের এই দু’সন্তানকে নিয়ে কাটবে বাকিটা সময়। ১৯৯০ সালে পূর্ব জার্মানিতে জন্ম নেওয়া ক্রুসের ক্লাব ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ২০০৭ সালে বায়ার্ন মিউনিখ দিয়ে। অবশ্য সেটা সিনিয়র ক্যারিয়ার। এর পর লেভারকুসেনে কিছুদিন, সেখান থেকে ২০১৪ সালে রিয়াল মাদ্রিদের যোগ দেন। এর পর মাদ্রিদেই কাটছে তাঁর সুখের সময়। ক্লাবটির সঙ্গে আরও এক বছর চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছেন। সে অনুযায়ী ২০২৪ সালের ৩০ জুনের পর রিয়ালের সঙ্গে বন্ধনটা ছিন্ন হতে পারে। এর মধ্যে জাতীয় দল থেকে তো অবসর নিয়েই ফেলেছেন। ২০২০ ইউরো থেকে জার্মানি বাদ পড়ার পরই নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন এই মিডফিল্ডার। দেশের হয়ে তাঁর অর্জনের পাল্লা কম ভারী নয়। ২০১৪ বিশ্বকাপের জয়ী সদস্য ক্রুস। অন্য শিরোপা হাতে উঠুক বা না উঠুক সোনালি ট্রফিতে ঠিকই চুমু এঁকেছেন, যা নিয়ে তাঁর নিজেরও গর্ব হয়।


টনি ক্রুস একাডেমি

যাত্রা: ২০১৫

অবস্থান: বাভারিয়া, জার্মানি

উদ্দেশ্য: তারকা খুঁজে বের করা

ফুটবল শেখে যারা: শিশু-কিশোররা


অর্থ যায় ফাউন্ডেশনে

একাডেমি থেকে অর্জিত অর্থ তাঁর টনি ক্রুস ফাউন্ডেশনে দিয়ে থাকেন। যা দিয়ে অবহেলিত, শারীরিকভাবে অসুস্থ, অটিস্টিক শিশুদের জন্য ব্যয় করা হয়।


যেভাবে শেখানো হয়

ক্রুসের নিজস্ব পরিকল্পনা মেনে ৫ দিনের একটা অনুশীলন

ভালোদের নিয়ে স্পেশাল ব্যাচ

যোগ্য কোচদের দিয়ে ফুটবলের খুঁটিনাটি বুঝিয়ে দেওয়া


টনি ক্রুস একাডেমি ও টনি ক্রুস ফাউন্ডেশন আমার দুটি সন্তানের মতো। আমি খুব মন দিয়ে এই দুটিকে দেখাশোনা করি। আমি চাই, এখান থেকে আগামীর তারকা বের হোক। আর এখানকার অর্জিত অর্থ দিয়ে অবহেলিত শিশুদের আলোর পথে ফেরাতে চাচ্ছি    

-টনি ক্রুস (রিয়াল মাদ্রিদের জার্মান মিডফিল্ডার)

আরও পড়ুন

×