পদত্যাগ করতে সালাহউদ্দিন ও কিরণকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম

বাংলাদেশ ফুটবল সাপোর্টার্স ফোরাম
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৪ | ১০:৫৮ | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২৪ | ১২:০৬
নানা কারণে দেশের ফুটবল তার আগের জৌলুসপূর্ণ অবস্থানে নেই। খোদ বাফুফের দায়িত্বশীল লোকেরাও সেটা স্বীকার করলেও নিজেদের ব্যর্থতার কথা তারা সব সময় এড়িয়ে যান। দেশের ফুটবলপ্রেমীদের মতে দেশের ফুটবলের আজকের অবস্থার জন্য বাফুফের বর্তমান সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিটিই দায়ী। সবার প্রাণের দাবি বাংলাদেশের ফুটবল তার আগের অবস্থানে ফিরে যাক। এরই ধারাবাহিতকতায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের পদত্যাগ চেয়ে মানববন্ধন করছে বিভিন্ন সমর্থক গোষ্ঠী, সংগঠক এবং ফুটবলাররা। এবার বাংলাদেশ ফুটবল সাপোর্টার্স ফোরামের পক্ষ থেকে বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিন ও নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারপার্সন মাহফুজা আক্তার কিরণকে পদত্যাগ করার জন্য ১ দফা দাবি জানানো হয়েছে।
ঠিক কি কি কারনে তাদেরকে পদত্যাগ করতে হবে, সেটা গণমাধ্যমকে প্রেরিত এক প্রেস রিলিজে জানিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল সাপোর্টার্স ফোরাম। এর আগে তারা মতিঝিলে অবস্থিত বাফুফে ভবনের বাইরের গেটে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
ঠিক কী কারণে সালাউদ্দিন ও কিরণের পদত্যাগ চাওয়া, সে ব্যাপারে ১০টি বিষয় তুলে ধরা হয় ফোরামের পক্ষ থেকে। যাতে রয়েছে বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটিতে সভাপতির একক ক্ষমতা কমানো, সংস্থাটিতে অবৈধভাবে নিয়োগ বন্ধ করে সৎ, যোগ্য এবং দক্ষ কর্মী নিয়োগ করার কথা। পাশাপাশি দুর্নীতিগ্রস্ত একাধিক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার কথা বলা হয়েছে।
১। বাফুফে নির্বাচনের জন্য কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন রাজনৈতিক ও সরকারী প্রশাসনিক যন্ত্র ব্যবহার করে বিগত সকল নির্বাচনে তিনি জয়লাভ হয়েছেন। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা’র নিয়ম অনুযায়ী কোন দেশের ফুটবল ফেডারেশন বা মেম্বার এসোসিয়েশনের কার্যক্রমে রাজনৈতিক ও সরকারী হস্তক্ষেপ বরদাশত করা হয় না, সেরকম কিছু ঘটলে ফিফা সংশ্লিষ্ট দেশকে ফিফা হতে নিষিদ্ধ করা হয়। যার ঘটনা বাংলাদেশে একবার ঘটেছিলো কিন্তু অতীব আর্শ্চযের বিষয় বিগত নির্বাচন গুলোতে খোদ বাফুফের নির্বাচনে কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন রাজনৈতিক ও সরকারী প্রশাসনিক যন্ত্র ব্যবহার করেছে সভাপতি হয়েছেন সেটার ব্যাপারে ফিফা সম্পূর্ন নিশ্চুপ! আমরা চাই আগামীতে বাফুফে নির্বাচনে কেউ যাতে কোন ভাবে রাজনৈতিক ও সরকারী প্রশাসনিক যন্ত্র ব্যবহার করার সুযোগ না পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
২। বিভিন্ন সময় পত্র-পত্রিকা এবং মিডিয়াতে বাফুফের কার্যক্রমের বিপক্ষে যে সকল অনিয়ম ও দূর্নীতির রিপোর্ট হয়েছে সেগুলো আমলে নিয়ে দ্রুত একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক এবং দোষীদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হোক।
৩। ফিফা, এএফসি এবং দেশী-বিদেশী স্পন্সরদের হতে প্রাপ্ত ফান্ড তছরুপ করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মহল হতে জানা গেছে এবং পত্র-পত্রিকা এবং মিডিয়াতে এসব নিয়ে রিপোর্ট হওয়া সত্ত্বেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
৪। বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ কান্ডের পর ফিফা’র তদন্তের পর বাফুফের তদন্তে যেসকল অনিয়ম ও দূর্নীতির প্রমান পেয়েছিলো সে আলোকে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ায় সকলের মাঝে সন্দেহ তৈরি হয়েছে আসলেই কি কাউকে ছাড় দিয়ে সুযোগ দেয়া হচ্ছে? দোষীদের শাস্তি চাই।
৫। বিদেশী কোচ নিয়োগে বানিজ্য হয়, কমিশন বানিজ্য হয়। বিদেশী কোচেরা দেশের ট্যাক্স ফাঁকি দেন, এতে বাফুফের সায় আছে। বার বার এগুলোর সুযোগ দেয়া হয়েছে।
৬। ফিফা’র তদন্তের পর আবারও লোক দেখানো তদন্ত করতে হবে কেন? বাফুফে কি ফিফা’র চেয়ে বড় হয়ে গেলো?
৭। বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটিতে বাফুফে সভাপতি’র একক ক্ষমতা কমাতে হবে।
৮। অবিলম্বে বাফুফে ভবনের ৪র্থ তলায় অবস্থিত আয়নাঘর খ্যাত বা আবাসিক হোটেল খ্যাত মহিলা ক্যাম্প বন্ধ করে ভালো, উন্মুক্ত এবং সুন্দর পরিবেশে স্থানান্তর করতে হবে।
৯। বাফুফেতে অবৈধ ভাবে নিয়োগ বন্ধ করতে হবে, সৎ যোগ্য এবং দক্ষ কর্মী নিয়োগ করতে হবে।
১০। বাফুফের দূর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা ইমরান হোসেন তুষার, জাবের বিন তাহের আনসারী, হাসান মাহমুদ, মোজাম্মেল মিঠু, তানভীর আহমেদ ও মাহবুব আলম পলোকে অবিলম্বে চাকরিচ্যুত করতে হবে এবং তাদের দূর্নীতির তদন্ত করে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে হবে।
এই দাবিগুলো মানার জন্য বাফুফেকে ৭ দিনের সময় দিয়েছে ফুটবল সাপোর্টার্স ফোরাম। ওই সময়ের মধ্যে বিষয়গুলোর সুরাহা না হলে এবং ফুটবল সাপোর্টার্স ফোরামর দাবি মানা না হলে তারা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে।
- বিষয় :
- বাফুফে
- কাজী সালাহউদ্দিন