ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

বিশ্বে তরুণদের ৬৩ শতাংশের বাড়িতে ইন্টারনেট নেই

বিশ্বে তরুণদের ৬৩ শতাংশের বাড়িতে ইন্টারনেট নেই

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২০ | ০৭:৪৩ | আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২০ | ০৯:৩৫

বিশ্বব্যাপী স্কুল-বয়সী শিশুদের দুই-তৃতীয়াংশের বাড়িতে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নেই বলে নতুন প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউনিসেফ ও আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিইউ)। শিশু এবং তরুণদের অনলাইনে মানসম্পন্ন ডিজিটাল শিক্ষাগ্রহণ এবং অনলাইনে বিদ্যমান বিভিন্ন সুযোগ কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে বর্তমানে ডিজিটাল বিভাজন যে বাধা তৈরি করেছে, তা দূর করতে জরুরি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থা দুটি।

মঙ্গলবার প্রকাশিত ইউনিসেফ এবং আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের নতুন প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী স্কুল-বয়সী শিশুদের দুই-তৃতীয়াংশ বা তিন থেকে ১৭ বছর বয়সী ১৩০ কোটি শিশুর বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ নেই। ‘কত সংখ্যক শিশু ও তরুণের ঘরে ইন্টারনেট সুবিধা আছে?’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, একই অবস্থা ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদেরও। তরুণ জনগোষ্ঠীর ৬৩ শতাংশ বা ৭৫ কোটি ৯০ লাখ তরুণ-তরুণীর ঘরে ইন্টারনেট সংযোগ নেই।

২০১৯ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর করা মাল্টি ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে অনুযায়ী, বাংলাদেশের ৬২ শতাংশ পরিবারের বাড়িতে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নেই। একইসঙ্গে এতে একটি জাতীয় গড় এবং পরিবারের আর্থ-সামাজিক অবস্থানের ভিত্তিতে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশে সবচেয়ে দরিদ্র ২০ শতাংশ পরিবারের মাত্র ৮ দশমিক ৭ শতাংশের বাড়িতে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। যেখানে সবচেয়ে ধনী ২০ শতাংশ পরিবারের ক্ষেত্রে এই হার ৭৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

দূরশিক্ষণের আরেকটি প্রধান মাধ্যম টেলিভিশনের বেলায়, জাতীয়ভাবে ৫১ শতাংশ পরিবার টেলিভিশনের মালিক। একইসঙ্গে সবচেয়ে দরিদ্র ২০ শতাংশ পরিবারের মাত্র ৪ দশমিক ৮ শতাংশ টেলিভিশনের মালিক, যেখানে সবচেয়ে ধনী ২০ শতাংশ পরিবারের মধ্যে ৯০ দশমিক ২ শতাংশ।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি টোমো হোযুমি  বলেন, দূরশিক্ষণের এই মাধ্যমগুলো ব্যবহারের সুযোগ না পাওয়া শিশুরা ডিজিটাল বিভাজন ও বৈষম্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মহামারি চলাকালীন তারা শিক্ষাগ্রহণের কম সুযোগ পেয়েছে, যা তাদের শিক্ষাজীবন এবং ভবিষ্যতকে এলোমেলো করে দিয়েছে। এই বিভাজন আগে থেকে বিদ্যমান বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এটি দারিদ্র্য ও বৈষম্যের দুষ্টচক্রকে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে দীর্ঘস্থায়ী রূপ দিতে পারে, যেখানে শিশুরা পরিণত হচ্ছে এর বাহকে।

কোভিড-১৯ এর কারণে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে প্রায় চার কোটি ২০ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইন্টারনেট ও টেলিভিশন ছাড়া শিক্ষা কার্যক্রম কার্যকরভাবে এই শিশুদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব নয়। এমনকি মহামারির আগেও একবিংশ শতাব্দীর অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকার জন্য তরুণ জনগোষ্ঠীর একটি ক্রমবর্ধমান অংশের ভিত্তিগত, স্থানান্তরযোগ্য, ডিজিটাল, চাকরি-কেন্দ্রিক এবং উদ্যোগী দক্ষতা শেখার প্রয়োজন হয়েছে।

ডিজিটাল শিক্ষা সমাধান এবং অন্যান্য সেবা স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সংযোগের অবকাঠামো তৈরিতে সরকারি-বেসরকারি মিশ্রিত বিনিয়োগের জন্য বাধ্যতামূলক বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরির লক্ষ্যে সরকার, শিল্পখাত, বেসামরিক খাত এবং ব্যক্তিগত খাতের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে।

৮৫টিরও বেশি দেশের তথ্য নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদন। শূন্য থেকে ২৫ বছর বয়সী এবং তরুণ রয়েছে এমন পরিবারগুলোতে ইন্টারনেট সংযোগের প্রাপ্যতা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী প্রতিনিধিত্বকারী বিশ্লেষণ ব্যবহার করা হয়েছে এতে।

আরও পড়ুন

×