আলু

দেশের অন্যতম শীর্ষ আলু উৎপাদনকারী জেলা মুন্সীগঞ্জ। এ জেলার ছয়টি উপজেলার কৃষকই আলু উত্তোলনের পর উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম পান কম। যে কারণে প্রতি বছর তাদের গুনতে হয় লোকসান।

সিরাজদীখান উপজেলার মালখানগর এলাকার আলুচাষি খালেক মিয়া উৎপাদিত আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারেননি। বসতবাড়িতে মাচা তৈরি করে ৬০০ মণ আলু রেখেছেন। কিন্তু প্রচণ্ড গরমে

এ বছর মুন্সীগঞ্জে উৎপাদিত ৫ লাখ ৯৩ হাজার টন আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। ফলে আলুগুলো বিকল্প পদ্ধতিতে বাঁশের মাচায় সংরক্ষণ করতে হচ্ছে কৃষককে।

সারাবছরের সংসার খরচ। ছেলেমেয়ের পড়াশোনা। আছে ঋণের বোঝা। সবকিছুর জন্য আলুর ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল উত্তরের কৃষক। কিন্তু কিছু মুনাফালোভীর কারসাজির কারণে হিমাগারে আলু রাখতে

আলুর কেজি ৯ থেকে ১০ টাকা। কয়েক দিন ধরে এ দামে আলু বিক্রি হয়েছে। উঠছে না উৎপাদন খরচ। হিমাগারে জায়গা না পেয়ে কেজিপ্রতি কোথাও ৩ থেকে ৪ টাকা, কোথাওবা দ্বিগুণ লোকসান দিয়ে আলু

 বাম্পার ফলন হলেও আলু রাখার জায়গা নেই। মাঠপর্যায়ের চাষিরা অগ্রিম বুকিং দিয়ে হিমাগারে রাখতে পারেননি আলু। বস্তায় বাঁশঝাড়ে, আমবাগানে রাখা আলু পচে নষ্ট হচ্ছে। পচা আলুর ভালো অংশ কেটে

‘ধান বেচে আলু গাড়চি (রোপণ করা) বাহে। এ্যালা ঘরোত ধানও নাই, ক্ষ্যাতের আলুর দামও নাই। আলু আবাদ করি এবার হামার সর্বনাশ হইচে। বউ-ছাওয়া নিয়া ঈদের দিনটা পার করমো তারও কোনো বুদ্দি নাই।’

দিনাজপুর সদরের ঘুঘুডাঙ্গা এলাকার কৃষক মোসাদ্দেক আলী। সড়কে দীর্ঘ যানজট পেরিয়ে আলু সংরক্ষণ করতে হয়েছে তাঁর। এরপরও যে পরিমাণ আলু সংরক্ষণ করতে চেয়েছিলেন, তা রাখতে পারেননি।

জমিতে, পড়ার টেবিলে, বিছানায়, খাটের নিচে, মেঝেতে, ঘরের আঁড়ায়, মাচায়, উঠানে–সবখানে আলু। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে উৎপাদিত ৫৮ হাজার ৮৭০ টন আলু হিমাগারে স্থানের অভাবে সংরক্ষণ করতে

বাড়ির কাছে তিনটি হিমাগারে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। এ দৃশ্য দেখে তিন দিনে ভ্যানভর্তি আলু নিয়ে ইফতারের পরই হিমাগারে আসেন রংপুরের বড়ঘোলার কৃষক আইয়ুব আলী, মোস্তফা মিয়া, খেজমতপুরের