ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ডাকাতিয়া রক্ষায় ইজারা বন্ধ

ডাকাতিয়া রক্ষায় ইজারা বন্ধ

ফাইল ছবি

মো. আতোয়ার রহমান মনির, লক্ষ্মীপুর

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২২ | ০০:২০

দখল-দূষণে প্রাণ হারিয়েছে ডাকাতিয়া নদী। নদীর জায়গায় দখলদাররা ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছে। বাঁধ দিয়ে চলছে মাছ চাষ। এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ লক্ষ্মীপুরের রায়পুর এলাকার নদী পাড়ের বাসিন্দারা। তবে নদীটি রক্ষায় ইজারা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহর থেকে রায়পুর উপজেলা হাজিমারা হয়ে ডাকাতিয়া নদীটি মেঘনায় মিশেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রায়পুর পৌরসভা এলাকা, উত্তর চর আবাবিল, দক্ষিণ চর আবাবিল, উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরবংশী এলাকায় নদীতে আড়াআড়ি বাঁশ ও জাল দিয়ে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নদীর তীরে বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হয়েছে। ময়লা-আবর্জনা ফেলায় দূষিত হচ্ছে পানি। রায়পুর মহিলা কলেজের সামনে নদীর পাড় ভরাট করে একাধিক ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করা হয়েছে। রায়পুর শহর থেকে শোলাখালি সেতু পর্যন্ত নদীতে অবৈধ দখলের এমন চিত্র দেখা গেছে।

নদী পাড়ের বাসিন্দা রহিম সওদাগর জানান, এক সময় এ নদী হয়ে ঢাকা, চাঁদপুর থেকে বড় বড় নৌকা দিয়ে ব্যবসায়ীরা মালপত্র নিয়ে আসতেন। এখন নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে দখলদাররা। এ জন্য পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আটকে থাকা পানিতে কচুুরিপানা, কুকুর-বিড়াল মরার দুর্গন্ধে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে লোকজন।

স্থানীয় কয়েকজন কৃষক ও ব্যবসায়ী জানান, নদীর বুকে ৩০ থেকে ৩৫টি বাঁশের বাঁধ দেওয়া হয়েছে। নদী দখল যারা দেখবে, তারাই তো দখল করে মাছ চাষ করছে। লক্ষাধিক মানুষ নদী ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রশাসন উদ্যোগ নিলেও প্রভাবশালীদের তদবিরে বারবার উদ্যোগ ব্যর্থ হচ্ছে।
ডাকাতিয়া নদী সুরক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান জানান, সরকারিভাবে দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ডাকাতিয়া নদী লুটে খাচ্ছে দখলদাররা। তাদের অবৈধ বাঁধের কারণে পানি দূষিত হচ্ছে। জোয়ার-ভাটা না থাকায় ময়লা-আবর্জনা আটকে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। দ্রুত নদীটির স্বাভাবিক গতি ফিরে এনে পরিবেশ রক্ষার দাবি জানান তিনি।

রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দীন রুবেল ভাট বলেন, 'ডাকাতিয়া নদীর পৌরসভার অংশ দখলমুক্ত করার জন্য এবার ইজারা বন্ধ রাখা হয়েছে। এ মাসেই প্রশাসনের সহায়তায় দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান করা হবে।'

লক্ষ্মীপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ জানান, প্রশাসন, পৌর মেয়রসহ তারা চেষ্টা করছেন নদীটি রক্ষায়। নদীতে থাকা অবৈধ স্থাপনা পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ করা হবে। ডাকাতিয়ায় যারা মাছ চাষ করছে, তারা অবৈধ কাজ করছে। তাদের উচ্ছেদ করে নদীর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা হবে।

আরও পড়ুন

×