ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

মাসুম টিভির খবরে জানতে পারেন গুলিতে কলেজছাত্রীও মারা গেছেন

মাসুম টিভির খবরে জানতে পারেন গুলিতে কলেজছাত্রীও মারা গেছেন

মাসুম মোহাম্মদ আকাশ

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২২ | ০৫:৪৯ | আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২২ | ০৫:৪৯

পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার কিলার মাসুম মোহাম্মদ আকাশ টেলিভিশনের খবর দেখে জানতে পারেন তার ছোড়া গুলিতেই প্রাণ হারিয়েছেন কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি। বগুড়ায় মাসুমকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশকে তিনি এ কথা বলেছিলেন। গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নেওয়া বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) খোরশেদ আলম এ তথ্য জানান।

সোমবার তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার হওয়ার পরই মাসুম আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যার কথা স্বীকার করেন। আর কলেজছাত্রী সামিয়া নিহত হওয়ার বিষয়টি খুনের পরের দিন টিভিতে খবর দেখার পর জানতে পারেন এবং তার গুলিতেই নিহত হয়েছেন বলেও স্বীকার করেন।

তার উদ্দেশ্য ছিল বগুড়া হয়ে জয়পুরহাট দিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যাওয়া। গ্রেপ্তারের আগের দিন রাতে চেষ্টা করেছিলেন ভারতে পালাতে কিন্তু বর্ডারে সমস্যার কারণে ওইদিন টপকাতে পারেননি। যে কারণে জয়পুরহাট সীমান্ত এলাকা থেকে আবার বগুড়ায় ফিরে আবাসিক হোটেলে আশ্রয় নেন। হোটেলে গ্রেপ্তার অভিযান চালাতে আর আধাঘণ্টা দেরি হলেই তাকে আটক করা যেত না বলে জানিয়েছে বগুড়া সদর থানা পুলিশ।

বগুড়ায় চারমাথা এলাকায় খাজা হাইওয়ে নামে হোটেলের রেজিস্টারে নাম-পরিচয় অ্যান্ট্রি না করেই রাত্রীযাপন করা মাসুম সকাল ৯টায় কক্ষ ছেড়ে চলে যেতেন। কিন্তু তার আধাঘণ্টা আগেই সকাল সাড়ে ৮টায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আবাসিক হোটেলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে নিজেকে মামুন বলে পরিচয় দেন। কিন্তু সদর থানা পুলিশের কাছে থাকা মাসুমের ছবির সঙ্গে চেহারার মিল থাকায় পুলিশ তাকে আটক করে। পরে পুলিশের সঙ্গে তর্কে না জড়িয়ে নিজের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেন এবং ঠান্ডা মাথায় পুলিশের সঙ্গে হোটেল থেকে বের হয়ে আসেন।

সোমবার বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা এ তথ্য জানিয়েছেন।

খাজা হাইওয়ে হোটেলের ম্যানেজার আইয়ুব আলী জানান, মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন রাজন নামে এক যুবক। তিনি মাঝেমধ্যেই হোটেলে থাকতেন। সেই সুবাদে রাজন হোটেলে সবার পরিচিত। শনিবার (২৬ মার্চ) হোটেলের ১১১ নম্বর কক্ষ ভাড়া নিয়ে অবস্থান করেন রাজন। তখন রাজন হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানান ঢাকা থেকে তার এক বন্ধু আসবেন। তার জন্য একটি কক্ষ রাখতে বলেন। রাজনের কথায় হোটেল কর্তৃপক্ষ ৪০০ টাকা ভাড়ায় ১০১নং কক্ষটি ফাঁকা রেখে দেন। রাত সাড়ে ১২টায় রাজনের বন্ধু পরিচয়ে হোটেলে আসা যুবককে ১০১নং কক্ষের চাবি দেওয়া হয়। নাম-ঠিকানা পরে অ্যান্ট্রি করবেন এবং নিজের নাম মামুন শুধু এ কথা বলে তিনি রুমে চলে যান। আর রাজন রোববার সকাল ৭টার দিকে কক্ষ ছেড়ে দিয়ে রাজশাহী চলে যান।

খাজা হাইওয়ে হোটেলের এক কর্মচারী বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে একটি প্রাইভেট কারে করে হোটেলে আসেন মাসুম। প্রাইভেট কারে আরও দুইজন থাকলেও তারা মাসুমকে নামিয়ে দিয়ে চলে যান।

গত বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ঢাকার উত্তর শাজাহানপুর এলাকায় সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি। এই জোড়া খুনের পর থেকেই পুলিশ শুটারকে ধরতে দেশব্যাপী অভিযান শুরু করে।

আরও পড়ুন

×