চট্টগ্রামে স্ত্রীকে খালের পানিতে চুবিয়ে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২২ | ০৮:৪৩ | আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০২২ | ০৯:১৪
রমজানে শ্বশুরবাড়ি থেকে ইফতারি কম পাঠিয়েছিলেন স্ত্রী। এজন্য ক্ষিপ্ত হয়ে প্রায় ১৩ বছর আগে স্ত্রীকে খালের পানিতে চুবিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিলেন স্বামী। ওই মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অনাদায়ে আসামিকে আরও তিনবছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বুধবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক ফেরদৌস আরার আদালত এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত রফিকুল ইসলাম চট্টগ্রামের ভুজপুর থানার হারুয়ালছড়ি গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে। তিনি পলাতক।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন সমকালকে বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত স্বামী রফিকের মৃত্যুদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের রায় দিয়েছেন। অনাদায়ে তিনবছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মামলার এজাহারে সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে ফটিকছড়ি থানার আজিমপুর গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে ছাবিনা খাতুনের সঙ্গে রফিকুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় যৌতুকের দাবিতে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন রফিক ও তার পরিবার। এ নিয়ে সালিশ হলে রফিক ও তার পরিবার দোষী প্রমাণিত হয়। পরে উভয় পরিবারের মধ্যে মীমাংসা হয়।
২০০৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ইফতারি নিয়ে ছাবিনা খাতুনের শ্বশুরবাড়ি যান তার বোন রোজি আকতার। ইফতার কম পাঠানোর অভিযোগ তুলে ওইদিন ছাবিনাকে মারধর করেন স্বামী রফিক। পরদিন ভোরে ছাবিনাকে বাড়ির পাশের খালপাড়ে ডেকে নিয়ে যান তিনি। সেখানে তাকে গলা ধরে খালের পানিতে চুবিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন স্বামী রফিক।
এ ঘটনায় ছাবিনার ভাই মো. হাসেম বাদী হয়ে স্বামী রফিকুল ইসলাম, শ্বশুর আবুল খায়ের, শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম ও ননদ বেবী আক্তারকে আসামি করে মামলা করেন। পরে তদন্ত করে পুলিশ রফিক ও তার মা আনোয়ারা বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
২০১০ সালের ২৭ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে বিচার শুরু হয়। ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ বুধবার এ রায় দেন আদালত।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর পিপি খন্দকার আরিফুল আলম বলেন, আসামি রফিক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। পরে পুলিশ তদন্ত শেষে রফিক ও তার মাকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মাকে খালাস দেন আদালত।
তিনি আরও বলেন, সাড়ে তিনবছর কারাগারে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে পালিয়ে যান রফিক।