ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

সেই শিশুটির মায়ের খোঁজে পুলিশ

সেই শিশুটির মায়ের খোঁজে পুলিশ

গলিতে ফেলে যাওয়া একমাস বয়সী কন্যাশিশু- সমকাল

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০১৯ | ০৯:৫১

পঞ্চগড়ের গলিতে ফেলে যাওয়া একমাস বয়সী কন্যাশিশুটি আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রেই রয়েছে। পুলিশ শিশুটির মা রিমু আক্তারকে খোঁজ করছে।তবে শনিবার বিকেল পর্যন্ত তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। 

এদিকে শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহী নিঃসন্তান দম্পতিদের ভিড় বাড়ছে। তারা ফুটফুটে শিশুটিকে নিজের সন্তানের মর্যাদা দিতে পুলিশ সুপারসহ জেলা প্রশাসকের কাছে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে রিমু আক্তারের বাবা জেলা সদরের ভীতরগড় এলাকার আইবুল ইসলামসহ তার নানা বাড়ির পরিবারের সদস্যরা শিশুটিকে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে একমাস বয়সী শিশুটিকে জেলা সদরের কামাতপাড়া মহল্লার একটি গলিতে ফেলে পালিয়ে যান রিমু আক্তার। পরে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলার বিভিন্ন এলাকাসহ জেলা বাইরে থেকে অসংখ্য মানুষ শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহ দেখান। এদের মধ্যে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে জেলা শহরের জালাসী এলাকার মো. সুমন ও ফুলবানু আক্তার দম্পতি শিশুটির জন্য বৃহস্পতিবার থেকে হাসপাতালেই রয়েছেন। তারা শিশুটিকে দত্তক নিতে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।

ফুলবানু আক্তার বলেন, ১৪ বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়েছে। স্বামী সৌদি প্রবাসী। আমাদের কোন সন্তান নেই। আমার স্বামী তিন মাসের ছুটিতে বাড়িতে এসে একটি শিশুকে দত্তক নিতে চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে এই শিশুটির খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে ছুটে আসি।

শেখ সাহারিজ উদ্দিন নামে এক চাকরীজীবী বলেন, টিভি এবং সামাজিক মাধ্যমে খবর দেখে আমরা রংপুর থেকে ছুটে এসেছি। আমাদের বাড়ি কামাতপাড়ার পাশের মহল্লায়। শিশুটি যে কোন শর্তেই আমরা নিতে আগ্রহী। আশা করি, শিশুটির জন্য আমরা বাবা মায়ের সঠিক দায়িত্ব পালন করতে পারবো।

আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎক ডা. সিরাজউদ্দৌলা পলিন বলেন, ভর্তির আগে থেকেই শিশুটি সুস্থ ছিল এবং এখনো সুস্থ রয়েছে। হাসাপাতালে শিশু রোগী নিয়ে আসা মায়েদের মাধ্যমে শিশুটির খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া শিশুটিকে খাওয়ানোর জন্য বাইরে থেকে দুধের (ল্যাকটোজেন) ব্যবস্থা করা রয়েছে।

রিমু আক্তারের বাবা এবং শিশুটির নানা আইবুল ইসলাম বলেন, আমার মেয়ে কামাতপাড়া এলাকায় স্বামীসহ ভাড়া বাড়িতে ছিল। সেখানকার লোকজন তাকে চিনেন। রিমু কেন শিশুটিকে এভাবে রেখে চলে গেছে জানি না। মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতেও পারছি না। তবে খবর শুনে আমরাও এসেছি। এখন আমরাই শিশুটির বৈধ অভিভাবক। তাই শিশুটিকে আমরা নিতে চাই। আমাদের কাছেই শিশুটি নিরাপদ থাকবে বলে আশা করি।

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, সার্বক্ষণিক শিশুটির খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। হাসপাতালে শিশুটি ভালো রয়েছে। পুলিশ শিশুটির মায়ের খোঁজ করছে। আমরা চাই মায়ের কোলেই শিশুটিকে ফিরিয়ে দিতে। তার কি সমস্যা সেটাও আমরা দেখবো। প্রয়োজনে তাকে শিশুটি লালন পালনে সব রকম সহায়তা দেওয়া হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত শিশুটির মায়ের খোঁজ পাওয়া যায়নি। সব কিছু ভেবেই পরবর্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

×